পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/৪৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬২
বিদ্যাসাগর।

যদি চারিটী পয়সা দিই; বালক ভাবিল,—“চাহিলাম একটী, ইনি দিতে চাহেন চারিটী; এ কেমন, বুঝি ঠাট্টা করিতেছেন।” তখন সে বলিল, “মহাশয় ঠাট্টা করেন কেন? দিন একটা পয়সা।” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন,—“ঠাট্টা নহে, যদি চারিটা পয়সা দিই, তাহা হইলে কি করিস?” বালক বলিল,—“তা হ’লে দুটী পয়সা খাবার কিনি, আর দুইটী পয়সা মাকে গিয়া দিই।” বিদ্যাসাগর মহাশয় বলিলেন, যদি দুই আনা দিই?” এবারও বালক ঠাট্টা মনে করিয়া চলিয়া যাইবার উপক্রম করে। বিদ্যাসাগর মহাশয় এবার তাহার হাতে ধরিয়া বলেন,—“বল্ না, সত্যি সত্যি তাহা হ’লে তুই কি করিস?” তখন বালক চক্ষের দু’ফোঁটা জল ফেলিয়া বলিল,—“চার পয়সার চাল কিনে নিয়ে যাই। আর চার পয়সা মাকে দিই। তাতে আমাদের আর একদিন চলবে।” বিদ্যাসাগর মহাশয় আবার বলিলেন,—“যদি চারি আনা দিই।” বালক তখনও বিদ্যাসাগরের মুষ্টিগত; উত্তর দেওয়া ভিন্ন উপায়ান্তর নাই। সে বলিল,—“তা হ’লে দু’ আনা দু’দিন খাওয়া চ’লবে, আর দুই আনার আম কিনি। আম কিনে বেচি। দু’আনার আমে চার আনা হ’বে। তাহা হ’লে আবার দু’দিন চলবে। আবার দু’ আনার আম কিনবো। এমন করে য’দিন চলে।” বিদ্যাসাগর মহাশয় তখন তাহাকে একটা টাকা দিলেন। বালক টাকা পাইয়া হৃষ্টান্তঃকরণে চলিয়া যায়। বৎসর দুই পরে বিদ্যাসাগর মহাশয় একবার বর্দ্ধমান গিয়াছিলেন। তিনি ষ্টেশনে নামিয়া প্রায়ই একটা পরিচিত দোকানদারের দোকানে বসিতেন। এবার তিনি যেমন সেই পরিচিত দোকানদারের দোকানে প্রবেশ করিতে যাইবেন, অমনই একটী হৃষ্টপুষ্ট বালক