পাতা:বিন্দুর ছেলে - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

3.Ea ਛc বিন্দু বলিল, দূৱ-আমি রাত পোহালেই হব, কিন্তু কার পয়সা খর, কর, সেটা দেখতে পাও না ? কার রোজগারে খাচ্চ পৰ্ব্বচ, সেটা জান না ? হঠাৎ কথাটা বলিয়া ফেলিয়া বিন্দু স্তব্ধ হইয়া থামিল। অন্নপূর্ণার মুখ শাদা হইয়া গিয়াছিল; তিনি ক্ষণকাল নির্নিমেষ-চােখে ছোটবৌয়ের মুখের প্রতি চাহিয়া বলিলেন, তোমার স্বামীর রোজগারে খাচ্চি-পরুচি। আমি তোমার দাসী-বাদী, উনি তোমার চাকর-বাকির। এই না তোমার মনের কথা ? তা এত দিন বলিস নি কেন ? তঁহার ওষ্ঠাধর বারংবার কঁপিয়া উঠিল। তিনি দাত দিয়া অধর চাপিয়া ধরিয়া এক মুহুৰ্ত্ত স্থির থাকিয়া বলিলেন, কোথা ছিলি ছোটবে, যখন ছোটভাইকে পড়বার জন্যে ও দুখানি কাপড় একসঙ্গে কিনে পরে নি? কোথা ছিলি তুই, যখন ঘর পুড়ে গেলে গাছতলায় একবেলা রোধে খেয়ে এই পৈতৃক ভিটেটুকু খাড়া ক’রেছিল ? বলিতে বলিতে তঁহার দুই চোখ দিয়া দর দর করিয়া জল ঝরিয়া পড়িল। আঁচল দিয়া মুছিয়া ফেলিয়া বলিলেন, ও যদি জানত তোদের মনের কথা, কখনো এমন আফিঙ খেয়ে চোখ বুজে হু কোর নল মুখে দিয়ে আরামে দিন কাটাতে পাৰ্বত না-সে লোক ও নয়। ওকে জানে তোর স্বামী, ওকে জানে স্বর্গের দেবতারা ! আজি আমায় ছুতে ক’রে তুই তঁাকে অপমান কবুলি ? স্বামী-অভিমানে অন্নপূর্ণার বুক ফুলিয়া ফুলিয়া উঠিতে লাগিল । বলিলেন, ভালই হ’ল, জানিয়ে দিলি । সতী আত্মহত্যা ক’রেছিল, আমিও দিব্যি কচ্চি, বরং পরের বাড়ী রোধে খাব, তবুও তোদের ভাত আর খাব না। তুই কি কবুলি-ওঁকে অপমান কবুলি! ঠিক এই সময়ে যাদব প্ৰাঙ্গণে আসিয়া দাড়াইয়া ডাকিলেন, বড়বৌ ; স্বামীর কণ্ঠস্বরে তাহার অভিমান ঝটিকা-ক্ষুব্ধ সাগরের মত উত্তাল