পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

দেখিতে পারেন নাই—ফলে, এই বিবৃতিতে তাঁহারা যেন তাঁহাদের অভিসন্ধিমূলক কার্য্যের সমর্থন পাইলেন। সুভাষচন্দ্র শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও চিকিৎসকের পরামর্শের বিরুদ্ধে ওয়ার্দ্ধা গিয়া গান্ধীজীর সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। এই সাক্ষাৎকারের ফল প্রথমতঃ শুভ বলিয়াই মনে হইয়াছিল। মহাত্মার অনুমতি লইয়া সুভাষচন্দ্র এই সম্বন্ধে যে বিবৃতি প্রদান করেন তাহাতে প্রকাশ, মহাত্মাজী তাঁহাকে এই আশ্বাস দিয়াছিলেন যে, তিনি গান্ধীজীর পরিচালনা ও পরামর্শ লাভে বঞ্চিত হইবেন না। কিন্তু আশ্চর্য্যের বিষয় সুভাষচন্দ্রের এই বিবৃতি প্রকাশের পরেই মহাত্মাজী জনৈক সাক্ষাৎকারীকে বলেন যে তিনি (মহাত্মা) সুভাষচন্দ্রকে সুস্পষ্টরূপেই জানাইয়া দিয়াছেন যে সুভাষচন্দ্র নূতন ওয়ার্কিং কমিটি গঠনে তাঁহার পূর্ব্বতন সহকর্মীদের নিকট হইতে কোনরূপ সহযােগিতা আশা করিতে পারেন না। ওয়ার্কিং কমিটির দক্ষিণপন্থী সদস্যগণও বেশ দৃঢ়তার সহিত ইহা ঘােষণা করিয়াছেন যে ত্রিপুরী কংগ্রেসে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্দ্ধারণে তাঁহাদের কিছুই করিবার নাই। ইহার পর হইতেই কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ সংকট তীব্রতর হইয়া উঠিল।

 ২২শে ফেব্রুয়ারী ওয়ার্দ্ধায় ওয়ার্কিং কমিটির অধিবেশন হইবার কথা ছিল। সুভাষচন্দ্রের শরীরের অবস্থা তখন মােটেই সন্তোষজনক নয়। এমতাবস্থায় ওয়ার্দ্ধা যাইবার পথশ্রম ও অধিবেশনের কার্য্য পরিচালনার গুরুভার তাঁহার স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ ক্ষতিকর হইতে পারে বিবেচনা করিয়া ডাঃ স্যার নীলরতন সরকার সুভাষচন্দ্রকে ওয়ার্দ্ধা যাইতে নিষেধ করেন। মার্চ্চ মাসে ত্রিপুরীতে কংগ্রেসের অধিবেশনও আগতপ্রায়। এ কয়দিন বিশ্রাম গ্রহণ করিলে ত্রিপুরী কংগ্রেসে যােগদান করিতে সমর্থ হইবেন মনে করিয়া সুভাষচন্দ্রও ওয়ার্দ্ধা না যাওয়াই স্থির করিলেন। এদিকে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ—নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সভায় উপস্থিত করিবার জন্য প্রস্তাবের খসড়া প্রস্তুত