পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৫৭

নেহরু তাঁহাকে জব্বলপুর হাসপাতালে যাইবার জন্য অনুরোধ করিলে সুভাষচন্দ্র তাহার উত্তর দেন—“আমি জব্বলপুর হাসপাতালে যাইবার জন্য এখানে আসি নাই। এখানে যদি আমার মৃত্যু হয় সেও ভাল, তথাপি অধিবেশন সমাপ্ত না হওয়া পর্য্যন্ত আমি অন্য কোথাও যাইতে প্রস্তুত নই।” অবশ্য ম্যাডিকেল বোর্ডের নির্দ্দেশ অনুসারে তাঁহাকে কয়েকটি বৈঠকে অনুপস্থিত থাকিতে হইয়াছিল। সুভাষচন্দ্রের অসুস্থতার একটি ফল এই হইয়াছিল যে, বিষয়-নির্বাচনী সমিতির কয়েকটি বৈঠকে এবং কংগ্রেসের প্রকাশ্য অধিবেশনে তিনি উপস্থিত থাকিতে পারেন নাই। তাঁহার অনুপস্থিতিকালে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ পণ্ডিত জওহরলালের সহায়তায় সভাপতির কার্য্য পরিচালনা করেন।

 ত্রিপুরী কংগ্রেসের অব্যবহিতপূর্বে গুজরাটের অন্তর্গত রাজকোট রাজ্যে প্রজাদিগের সহিত শাসকবর্গের বিরোধ উপস্থিত হওয়ায় সত্যাগ্রহ হয়। কস্তুরবাঈ গান্ধী, মণিবেন প্যাটেল, মৃদুলাবেন সারাভাই প্রভৃতি খ্যাতনামা দেশসেবিকাগণ এই সত্যাগ্রহে যোগদান করিয়া কারাবরণ করেন। মহাত্মাগান্ধী বিচলিত হইয়া শাসকের সহিত প্রজাদের এই বিরোধ মিটাইতে অগ্রসর হন। কিন্তু রাজকোটের শাসক ও তাঁহার মন্ত্রী ঠাকুর সাহেব বিশ্বাসঘাতকতা করায় মহাত্মার হস্তক্ষেপেও কোন ফল হয় না। ফলে, ৩রা মার্চ্চ শুক্রবার দ্বিপ্রহর হইতে মহাত্মা গান্ধী প্রায়োপবেশন আরম্ভ করেন। এই সংবাদে দেশের সর্ব্বত্র তুমুল আন্দোলন হইতে থাকে। বিভিন্ন প্রদেশের কংগ্রেসী প্রধানমন্ত্রীরা সম্মিলিতভাবে তার যোগে বড়লাটকে জানান যে, এই ব্যাপারে বড়লাট মধ্যস্থতা না করিলে কংগ্রেস-মন্ত্রীরা পদত্যাগ করিবেন। গান্ধীজীর সহিত পত্রালাপ করিয়া অবশেষে বড়লাট রাজকোটের শাসককে গান্ধীজীর সর্ত্তে সম্মত হইতে বাধ্য করেন। তদনুসারে ৭ই মার্চ্চ ৪ দিন