পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৬১

জাতীয় দাবি স্বীকারে ব্রিটিশকে বাধ্য করিবার উদ্দেশ্যে যে শক্তি আমাদের আয়ত্ত, তাহাই প্রযোগ করিতে হইবে।

 আইন অমান্যরূপ গণ-আন্দোলন অথবা সত্যাগ্রহই বর্ত্তমানে আমাদের একমাত্র শক্তি ও অবলম্বন। দীর্ঘকাল ধরিয়া নিখিল ভারতব্যাপী সত্যাগ্রহের সম্মুখীন হইবার শক্তি এখন ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্টের নাই। কংগ্রেসের মধ্যে কেহ কেহ মনে করেন যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রবল সংগ্রাম করিবার প্রকৃত সময় এখনও আসে নাই —ইহাতে আমি দুঃখিত। বাস্তব দৃষ্টি সহকারে সমস্যার আলোচনা করিলে আমরা বুঝিতে পারিব যে, নৈরাশ্যবাদের বিন্দুমাত্র কারণ নাই। আটটি প্রদেশে কংগ্রেস মন্ত্রিত্ব গ্রহণের ফলে আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান কংগ্রেসের শক্তি ও মর্য্যাদা বিশেষ বৃদ্ধিলাভ করিয়াছে, সমগ্র ব্রিটিশ ভারতে গণ-আন্দোলনও বিশেষভাবে বিস্তার লাভ করিয়াছে। দেশীয় রাজ্যসমূহেও অভূতপূর্ব জাগরণ আসিয়াছে। বিশেষতঃ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যখন আমাদের অনুকুল, তখন স্বরাজলাভার্থ আমাদের গণআন্দোলন আরম্ভ করিবার এমন সুযোগ ও সময় আমাদের জাতীয় ইতিহাসে আর কখনও কি আসিবে? শীতল-মস্তিষ্ক বাস্তববাদী হিসাবে আমি বলিতে পারি যে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির সমস্ত ঘটনাই আমাদের এইরূপ অনুকূল যে, এই সময়ে সাফল্যের উচ্চতম আশা পোষণ করিলেও অন্যায় হইবে না। যদি একবার আমাদের মধ্যেকার সমস্ত বিভেদ ভুলিয়া জাতীয় সংগ্রাম পরিচালনায় আমাদের সমস্ত শক্তি নিয়োগ করি, তবে এই অনুকূল অবস্থার পূর্ণতম সুযোগ গ্রহণ করিতে ও সুফল লাভ করিতে পারিব। জাতীয় জীবনে এইরূপ সুযোগ কদাচিৎ আসে, আমরা কি হেলায় সেই সুযোগ হারাইব?

 দেশীয় রাজ্য—দেশীয় রাজ্যের নবজাগরণের পূর্ণ সদ্‌ব্যবহার করিবার সুযোগ যাহাতে গ্রহণ করিতে পারি, তদুদ্দেশ্যে নিখিল ভারত