পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
১৭৯

সমাজতন্ত্রীদল গঠিত হয়। এই দলের আদর্শে কংগ্রেসের সংগ্রামবিমুখ নীতির পরিবর্ত্তন সূচিত হইতেছে দেখিয়া সুভাষচন্দ্র সমাজতন্ত্রী দল গঠনে আনন্দিত হন। ১৯৩৮ সালে কংগ্রেসের সমস্ত প্রগতিপন্থী মুক্তিকামী ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী উপদানগুলিকে ন্যূনতম সাধারণ কর্ম্মপন্থার ভিত্তিতে সংঘবদ্ধ করার প্রয়োজন তিনি বিশেষরূপে উপলব্ধি করেন। হরিপুরার পর হইতে তিনি এই বামপন্থীদল গঠনে বিশেষরূপে আত্মনিয়োগ করেন। হরিপুরা ও ত্রিপুরীর মধ্যবর্ত্তী সময়ে তিনি এই কার্য্যে অনেকদূর অগ্রসর হন। সুতরাং ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’কে কেহ যেন ত্রিপুরীর ঘটনার ফলস্বরূপ মনে না করেন। ইহা আদৌ দক্ষিণ পন্থীদের প্রতি প্রতিহিংসা বা বিদ্বেষভাব প্রসূত নহে। পাঠকদের সন্দেহ নিরসনকল্পে সুভাষচন্দ্রের লিখিত বিবৃতি হইতে ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ গঠনের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করিলাম।

 ‘১৯৩৭ সালের মার্চ্চ মাসে মুক্তিলাভ করিয়া ঐ বৎসরই অক্টোবর মাসে আমি কলিকাতায় ও পর বৎসর ১৯৩৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে হরিপুরায় নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতির সভায় যোগদান করি। হরিপুরায় আমি লক্ষ্য করিলাম, বামপন্থীরা পূর্ববৎসর অপেক্ষা শক্তিশালী না হইয়া শক্তিহীন হইয়াছে। হরিপুরার পরে বিভিন্ন মনোভাবসম্পন্ন ও বিভিন্ন মতবাদের বামপন্থীদের সহিত আলোচনা প্রসঙ্গে আমি এই কথা উল্লেখ করি যে, বামপন্থীদের অনুসৃত নীতি ও কর্মপন্থায় নিশ্চয়ই এমন কোন ত্রুটি বা অভাব রহিয়াছে যাহার জন্য তাহাদের এই পতন ঘটিয়াছে।

 এই সময়কার কংগ্রেস সংগঠনে কয়েকটি প্রধান প্রধান পার্টি বা গ্রুপ্ লক্ষ্য করা যায়। প্যাটেল, রাজেন্দ্রপ্রসাদ ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদ পরিচালিত সরকারী কংগ্রেস (official block)। বামপন্থীদের আবার তিনটি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও সুনির্দ্দিষ্ট দল রহিয়াছে—এই তিনটি দলের অনুবর্ত্তীদের সংখ্যাও বিভিন্ন। ইহারা কংগ্রেস সোশ্যালিষ্ট,