পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৪৩

দিয়াছে। তাহাদের মধ্যে সংগ্রামশীল মনোভাবের অভাব পরিলক্ষিত হইতেছে। পূর্ণ স্বাধীনতা লাভের প্রশ্ন ও সংগ্রামের কথা ক্রমেই গৌণ হইয়া পড়ে। তাই সুভাষচন্দ্র স্বাধীনতা ও সংগ্রামের প্রধান লক্ষের দিকেই দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এদিকে ইয়োরোপীয় পরিস্থিতি সম্বন্ধে সুভাষচন্দ্র যে আশঙ্কা করিয়াছিলেন, তাহাই ফলিতে চলিল। সুভাষচন্দ্র পুনঃ পুনঃ এই আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পূর্ণ সুযোগ গ্রহণ করিতে কংগ্রেস হাই কমাণ্ড ও গান্ধীজির নিকট আবেদন করিলেন। ইহারই ফলে রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্র ও কংগ্রেস হাই কমাণ্ডের মধ্যে বিচ্ছেদ অনিবার্য হইয়া উঠিল। কংগ্রেসের প্রবীণ প্রধানগণ কংগ্রেসের রাজনীতি হইতে সুভাষকে অপসারিত করিতে মনস্থ করিলেন। সুভাষচন্দ্রের স্বাধীন প্রকৃতি ও অদম্যসংগ্রামপ্রবৃত্তি তাঁহাদের নিকট অসহ্য মনে হইল। এই কথা স্মরণ রাখা দরকার যে, সুভাষচন্দ্র ও কংগ্রেস হাই কমাণ্ডের এই বিচ্ছেদ কোন প্রকার ব্যক্তিগত বিদ্বেষজাত নহে। আদর্শ ও কর্মপন্থার সংঘাতেই এই বিচ্ছেদ ঘটিয়াছে। ত্রিপুরী কংগ্রেসের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও পরবর্ত্তী ঘটনাসমূহে দক্ষিণপন্থী ও সুভাষচন্দ্রের আদর্শের বিরোধ চরমরূপ পরিগ্রহ করে। ত্রিপুরী কংগ্রেসে রাষ্ট্রপতি সুভাষচন্দ্রের সংগ্রাম আরম্ভ করিবার আবেদন ব্যর্থ হয়। ঐতিহাসিকগণ একবাক্যে স্বীকার করিবেন যে, ত্রিপুরীর কংগ্রেস অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির কর্মপন্থা অগ্রাহ্য করিয়া কংগ্রেস স্বাধীনতা লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ হেলায় নষ্ট করিয়াছে। সুভাষচন্দ্র ত্রিপুরীতে যে বাণী প্রদান করেন, তাহা চিরকাল তাঁহার অভ্রান্ত দূরদৃষ্টি, অসম সাহস ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির অতুলনীয় জ্ঞানের সাক্ষ্য বহন করিবে। তিনি বলিয়াছিলেন—“The time has come for us to raise the issue of Swaraj and submit our National Demaņd to the British Government in the form of an ultimatum. The British Government to-day are not in a