পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
২৬৭

আমেরিকা ভিন্ন অপর কোনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাহারা যুদ্ধ ঘোষণা করে নাই। রাশিয়ার প্রতি আজাদহিন্দ সরকারের কোনরূপ বিদ্বেষ ভাব ছিল না। ব্রিটিশ ব্রড্‌কাষ্টিং কর্পোরেশন পর্য্যন্ত স্বীকার করিয়াছে যে, সুভাষচন্দ্র কোনদিন সোভিয়েট বিরোধী কোন বক্তৃতা বা মন্তব্য করেন নাই। জাপানীরা যে, কোন দিক দিয়াই আজাদহিন্দ সরকারের উপর কর্ত্তৃত্ব করিতে পারে নাই তাহার প্রকৃষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় যখন আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের নিকট জাপ রাজদূত উপস্থিত হইয়াও স্বীকৃতিলাভ করেন নাই; কেননা, উপযুক্ত নিয়োগপত্র তিনি আনিতে পারেন নাই। জাপরাজদূত মিঃ হাচিয়ার সহিত সুভাষচন্দ্র সাক্ষাৎ করিতে অস্বীকার করেন।

 ১৯৪৪ সালে ব্রহ্মদেশে সামরিক অভিযান শুরু হইলে জাপানীরা স্থির করে যে একজন জাপ সামরিক কর্মচারীর অধিনায়কত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজ এবং জাপবাহিনীর একটি সম্মিলিত কমিটি গঠিত হবে। কিন্তু জাপানী অধিনায়কের নিয়োগের বিরুদ্ধে সুভাষচন্দ্রের আপত্তি থাকায় উহা অগ্রাহ্য হয়। এভিন্ন মণিপুর অভিযান শুরু হইর পূর্বেই আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের পক্ষ হইতে জাপ সৈন্যাধ্যক্ষের সহিত এক চুক্তি সম্পাদিত হয়। এই চুক্তিবলে সমগ্র অধিকৃত অঞ্চল আজাদহিন্দ গভর্ণমেণ্ট কর্ত্তৃত শাসিত হইবে এবং সেখানে কোন প্রকার জাপানী ব্যবসা-বাণিজ্য চলিতে পারিবে না এরূপ সিদ্ধান্ত করা হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে অধিকৃত রণসম্ভারও আজাদহিন্দ গভর্ণমেণ্টের হইবে এইরূপ কথা হয়।

 জাপানীরা আজাদ হিন্দ ফৌজের এই আত্মনির্ভরশীলতার কর্মপন্থাকে সুনজরে দেখেন নাই। সুতরাং মিত্ররাষ্ট্রহিসাবে তাহারা যুদ্ধক্ষেত্রে আজাদী ফৌজকে কোন সাহায্য করে নাই। সংবাদ যোগাযোগের জন্য আজাদী ফৌজের কোন বেতার যন্ত্র ছিল না; ফলে, ট্রেনে করিয়া পত্রবাহকের সাহায্যে সংবাদ প্ররণ করিতে হইত। যুদ্ধক্ষেত্রে প্রচারের জন্য কোন