পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩১৭

আজাদ হিন্দ্ ফৌজই ভারতবর্ষের প্রতিনিধিমূলক জাতীয় বাহিনী। জাপানীদের সহিত ইহার কোনরূপ সংস্রব থাকিলে ইহা বিভীষণ বাহিনী বলিয়া কুখ্যাত হইবে। ইহার নীতি, কার্যকলাপ, নেতৃত্ব—ভারতীয় দেশপ্রেমিকগণ কতৃকই চালিত হইবে। জাপানীদের ভারত আক্রমণের অধিকার নাই। কোনরূপ বৈদেশিক কর্তৃত্ব অথবা একজনও বৈদেশিক সৈন্যকে ভারতভূমিতে স্বীকার করা চলিবে না। জাপানিগণ যদি বলেন যে, তাঁহারা ভারতকে বৃটিশ শক্তির কবল হইতে মুক্ত করিয়া স্বাধীনতা দান করিতে যাইতেছেন, তথাপি আজাদ হিন্দ্ ফৌজ তাহাদের অন্যায় আক্রমণকারী হিসাবেই গণ্য করিবে। ভারতবর্ষকে যদি বৃটিশের কবল হইতে মুক্ত করিতে হয়, তবে একমাত্র ভারতের নিজস্ব বাহিনীই তাহা করিতে পারে। জাপানীদের সামরিক কৌশল ও নীতির দ্বারা এই ভারতীয় বাহিনী কখনই চালিত হইতে পারিবে না; জাপানীদের নীতির সহিত ইহার কোনরূপ সংস্রব থাকিল ইহা পঞ্চম বাহিনী বলিয়া ইতিহাসে কলঙ্কভাগী হইবে। এই নীতিগত সুস্পষ্ট ঘােষণার ফলে আজাদ হিন্দ্ সঙ্ঘ এবং আজাদ হিন্দ ফৌজ নবশক্তিতে উজ্জীবিত হইল। দেশপ্রেমিক ভারতীয়গণ এই প্রতিষ্ঠান এবং এই বাহিনীকে সর্বান্তঃকরণে স্বীকার করিয়া ইহাকে আরও শক্তিশালী করিবার জন্য সকল শক্তি-সামর্থ্য প্রয়োগ করিলেন। মালয়ে একটি সামরিক শিক্ষাকেন্দ্র খােলা হইল। ইহাতে একই সময়ে ৭০০০ জনকে লইয়া পালাক্রমে সামরিক শিক্ষা দানের ব্যবস্থা হইয়াছিল। ৭০০০ হাজার ব্যক্তি লইয়া একটি দল হইত। এইরূপে দলে দলে স্বেচ্ছাসৈন্য শিক্ষিত হইতে লাগিল। ভারতীয় বাহিনী ও নন্-কমিশণ্ড অফিসারগণের মধ্য হইতে ঊর্ধ্বতন অফিসার বাছাই করিয়া শিক্ষাদানের ব্যবস্থা হইয়াছিল। কেবলমাত্র ভারতীয়গণের নিকট হইতেই অর্থসংগ্রহ করা হইত। স্বেচ্ছাপ্রণােদিত হইয়া ভারতীয়গণ অকাতরে দান করিতে লাগিলেন। অর্থভাণ্ডার, সৈন্য বাহিনী নানাপ্রকার জনহিতকর