পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২০
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র

শ্রমিকগণ চরম দুর্দশায় পড়িয়াছিল, সুতরাং উক্ত সদ্য মজুরদিগের জন্য চিকিৎসালয়, ডাক্তার, ঔষধ, পথ্য, খাদ্য প্রভৃতি ব্যাপারে প্রচুর অর্থ ব্যয় করিয়াছে। কুয়ালা-লামপুরে ছিল সর্বাপেক্ষা বৃহৎ সাহায্যকেন্দ্র। এখানে প্রত্যহ এক হাজারের উপর নারী, শিশু ও দুর্গতজনকে নানাবিধ সাহায্য দেওয়া হইত। ইহার মাসিক খরচ ছিল ৭৫ হাজার ডলার। সঙ্ঘ বার্মাতে অনেকগুলি দাতব্য চিকিৎসালয় চালাইত। উক্ত সঙ্ঘ শ্যামে এমটি আধুনিক ধরণের উচ্চাঙ্গের হাসপাতাল খুলিয়াছিল। তাছাড়া দুর্গত ভারতীয়গণের বসতি স্থাপনের জন্য উক্ত সঙ্ঘ ভূমি সংগঠনের কার্যসূচী গ্রহণ করিয়াছিল। মালয়ের জঙ্গল অপসারিত করিয়া প্রায় ২০০০ একর জমি বাসােপযােগী করা হইয়াছে। ভারতীয়গণ এখানে ভূমিকর্ষণের বাণিজ্যোপযােগী বৃক্ষরােপণের ব্যবস্থা করিয়াছেন। বালক-বালিকাদিগকে শিক্ষাদানের জন্যও আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ সচেষ্ট হইয়াছিল। পূর্ব এশিয়াবাসী ভারতীয়গণের জন্য হিন্দুস্থানী শিক্ষা দিবার সুবন্দোবস্ত করা হইয়াছিল। উক্ত সঙ্ঘ চতুর্দিকে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়িয়া জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করিয়াছিল। কেবলমাত্র বার্মাতে উক্ত সঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণাধীনে ৬৫টি জাতীয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল, ইত্যাদি, ইত্যাদি।

 সংবাদপত্র প্রাপ্ত এই সকল তথ্য অতি সামান্য। ইহা বিশ্বাস করিবার যথেষ্ট কারণ আছে যে, খাঁটি অনুসন্ধান করিলে আরও বিশদ তথ্য লাভ করা যাইবে। স্বাধীন ভারতের এই অস্থায়ী গবর্ণমেণ্ট, আজাদ হিন্দ সঙ্ঘ এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের পিছনে শুধু যে পূর্ব এশিয়ার ভারতীয়গণের সামগ্রিক সমর্থন ছিল তাহা নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশের, এমন কি তথাকথিত সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের অধিবাসীদের মধ্যেও সমর্থনের অভাব ছিল না।

 আজাদ হিন্দ ফৌজের ভারত প্রবেশের অব্যবহিত পূর্বে বার্মার