পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশিষ্ট
৩২৫

জন্মের পর ভারতের নব জাগরণ হইল। ১৮৮৫ সাল হইতে প্রথম মহাযুদ্ধ পর্য্যন্ত ভারতীয় জনগণ তাহাদের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন, প্রচারকার্য্য, বৃটিশ দ্রব্য বর্জ্জন, সন্ত্রাসবাদ, ধ্বংসাত্বক আন্দোলন প্রভৃতি সর্ব্ব উপায় এবং অবশেষে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ গ্রহণ করিয়াছে। কিন্তু সবই সাময়িকভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। অবশেষে ১৯২০ সালে ব্যর্থতার গ্লানিতে আচ্ছন্ন হইয়া ভারতবাসী যখন নূতন পন্থার সন্ধান করিতেছিল, তখন মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ এবং আইন অমান্য আন্দোলনের নূতন অস্ত্র লইয়া ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হইলেন।

 ইহার পর ২০ বৎসরকাল ভারতীয়গণ নানা প্রকার দেশপ্রেমমূলক কার্য করে। মুক্তির বার্ত্তা ভারতের ঘরে ঘরে গিয়া পৌঁছায়। ভারতবাসী স্বাধীনতার জন্য নির্যাতন বরণ করিতে শিখিল, আত্মত্যাগ করিতে শিখিল এবং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করিতে শিখিল। কেন্দ্র হইতে সুদূরবর্ত্তী গ্রাম পর্য্যন্ত জনগণ একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে সমবেত হইল। এইভাবে ভারত শুধু রাজনৈতিক চেতনাই লাভ করিল না, তাহারা আবার একটি অখণ্ড রাজনৈতিক সত্তায় পরিণত হইল। ইহার পর তাহারা একস্বরে কথা বলিতে পারিল এবং এক সাধারণ লক্ষ্যের জন্য এক মনে একপ্রাণে সংগ্রাম করিতে পারিল। ১৯৩৭ হইতে ১৯৩৯ সাল পর্য্যন্ত আটটি প্রদেশে কংগ্রেসের মন্ত্রিমণ্ডলের কাজের দ্বারা ভারতীয় জনগণ প্রমাণ দিল যে, তাহারা প্রস্তুত, তাহাদের নিজেদের শাসন-ব্যবস্থা নিজেদের করিবার ক্ষমতা তাহারা অর্জ্জন করিয়াছে।

 এইভাবে বর্ত্তমান মহাযুদ্ধের প্রাক্কালে ভারতের মুক্তির শেষ সংগ্রামের ভূমি প্রস্তুত হইল। এই যুদ্ধের সময় জার্ম্মাণী তাহার মিত্রদের সহায়তায় ইউয়োপে আমাদের শত্রুদের উপর প্রচণ্ড আঘাত হানে। এদিকে জাপান তাহার মিত্রদের সহায়তায় পূর্ব এশিয়ায় আমাদের শত্রুর উপর