পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৭৩

করিয়া স্বাধীন ভারত সৃষ্টি করিবে—বিশ্বের দরবারে ভারতবাসীর গৌরবময় আসন প্রতিষ্ঠা করিবে। যুবকদের কর্ম-প্রচেষ্টা যাহাতে ভিন্নমুখী ও পরস্পরবিরোধী না হয়, এবং যাহাতে সকল চেষ্টা সংযত ও কেন্দ্রীভূত হইয়া একই আদর্শের দিকে পরিচালিত হয় তদুদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সমিতি গঠন করা আবশ্যক।

 দুঃখের বিষয়, আজিকার ছাত্র ও যুব প্রতিষ্ঠান ও আন্দোলন সমুহ স্বদেশের সম্পদশালী ঐতিহ্যকে, স্বকীয়তাকে, দেশের বিশেষ সমস্যা ও ঐতিহাসিক প্রয়োজনকে উপেক্ষা করিয়া বিদেশ হইতে আমদানিকরা মতবাদের উপর প্রতিষ্ঠিত হইতে চলিয়াছে। ফলে, এই সকল আন্দোলনগুলি দেশ ও কালের উপযোগী কর্মপন্থা হারাইয়াছে—বিভিন্ন ও বিরুদ্ধ মতবাদের সংঘর্ষে ঐক্য নষ্ট হওয়ায় যুব আন্দোলনের মধ্যে দলাদলি প্রবেশ করিয়াছে। অন্য দেশের আদর্শ অন্ধভাবে অনুকরণ করা আত্মপ্রবঞ্চনার সামিল। প্রত্যেক দেশের জাতীয় প্রতিষ্ঠানের উৎপত্তি হয় সেই দেশের ইতিহাসের ধারা, ভাব, আদর্শ এবং নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের প্রয়োজন হইতে। কোন প্রতিষ্ঠান গড়িতে হইলে ইতিহাসের ধারা, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও বর্ত্তমানের সমস্যাকে অগ্রাহ্য় করা চলে না। পরদেশের চিন্তা, ভাব, প্রতিষ্ঠান বা আদর্শের হুবহু অনুসরণ বা অনুকরণ করার প্রচেষ্টা বাতুলতা মাত্র। পরাধীন দেশের যদি কোনও “ism” কে সর্ব্বান্তঃকরণে গ্রহণ করিতে হয়, তবে তাহা “nationalism”

 নিজের দেশের ইতিহাসের ধারা ও বিশিষ্ট সমস্যাগুলিকে অস্বীকার করিলে চলিবে না—কিন্তু তাই বলিয়া যেন মনে করা না হয় যে ছাত্র বা যুবসমাজের দৃষ্টি কেবল নিজদেশেই সীমাবদ্ধ থাকিবে। দেশের যুব-আন্দোলনকে সে দেশের গণ্ডি অতিক্রম করিয়া বিশ্ব যুব-আন্দোলনের সহিত যুক্ত হইতে হইবে। যুব-আন্দোলনের দুইটি দিক আছে আন্ত-