পাতা:বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র - প্রফুল্লরঞ্জন রায় - শ্যামদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিপ্লবী সুভাষচন্দ্র
৭৫

পারিলে মানুষের চিন্তা, কথাও কার্য্য এক সুরে বাঁধা হইবে—ভিতর বাহির এক হইয়া যাইবে। আদর্শের পশ্চাতে সারাটি জীবন অনুধাবনের ক্ষমতা, এই tenacity of purpose আমাদের নাই। আমরা অন্তরের সংগে দেশকে ভালবাসি না। তাই আমরা করি গৃহবিবাদ—তাই আমাদের মধ্যে জন্মায় মিরজাফর, উমিচাঁদ। আমরা যদি দেশকে একান্তরূপে ভালবাসিতে শিখি তাহা হইলে আত্মবলিদানের ক্ষমতা লাভ করিব, আমাদের চরিত্রে অবিরাম অশ্রান্ত পরিশ্রমের ক্ষমতা tenacity of purpose ফিরিয়া আসিবে। এই দুইটি বল tenacity of purpose বা moral stamina কোথায় পাইব? পাইব নিষ্কাম কর্মের মধ্যে জীবন ঢালিয়া দিলে—অবিরাম সংগ্রামে লিপ্ত হইলে।

 আমরা যদি হৃদয়ের গভীর অন্তঃস্থল হইতে দেশকে ভালবাসি, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা করিতে চাই—তাহা হইলে আমাদিগকে দাসত্বের বেদনা ও বন্ধনের দুঃখটিকে মর্মে মর্মে অনুভব করিতে হইবে। এই অনুভূতি যখন তীব্র হইবে তখন আমরা একথা উপলব্ধি করিব যে স্বাধীনতাহীন হইয়া বাঁচিয়া থাকার কোন মূল্য নাই এবং এই অভিজ্ঞতা বাড়িয়া চলার সংগে সংগে এমন দিন আসিবে, যেদিন আমাদের সকল প্রাণ স্বাধীনতা-তৃষ্ণায় ভরিয়া উঠিবে।

 স্বাধীনতার কোনও সহজ নির্বিঘ্ন পথ নাই। স্বাধীনতার পক্ষে যেমন আঘাত বিপদ আছে, তেমনি গৌরব ও অমরত্ব আছে। প্রাচীনের যাহা কিছু শৃঙ্খলের মত আমাদের চলাকে প্রতিপদে প্রতিহত করিতেছে আজ তাহাকে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়া তীর্থযাত্রীর মত দলে দলে স্বাধীনতার লক্ষ্যপথে যাত্রা করিতে হইবে। স্বাধীনতাই জীবন। স্বাধীনতার সন্ধানে জীবনদানে অবিনশ্বর গৌরব।

 দেশে দেশে যুগে যুগে নির্ভীক তরুণ ও যুবকদলই মুক্তির আলোকবর্ত্তিকাটিকে উচ্চে তুলিয়া ধরিয়াছে। আজ ভারতবর্ষের ভাগ্য ভারতের