আবার যখন সেইরূপ রোদন্নানুকারী স্বর শুনিব-আমাদের সেই শোক মনে পড়িবে— সেইরূপ শোকের আবির্ভাব হইবে। মনে কর, আমরা অন্যত্র দেখিলাম যে, এক পুত্ৰশোকাতুরা মাতা বসিয়া আছেন। কাদিতেছেন না-কিন্তু তঁাহার মুখাবয়ব দেখিয়াই, তাহার উৎকট মানসিক যন্ত্রণা অনুভব করিতে পারিলাম। সেই সন্তাপক্লিষ্ট মান মুখমণ্ডলের আধিব্যক্তি আমাদের হৃদয়ে অঙ্কিত রহিল। সেই অবধি, যখন আবার সেইরূপ ক্লিষ্ট মুখমণ্ডল দেখিব, তখন আমাদের সেই শোক মনে পড়িবে-হৃদয়ে সেই শোকের আবির্ভাব হইবে। V8 অতএব সেই ধ্বনি, এবং সেই মুখের ভাব, উভয়ই আমাদের মনে শোকের চিহ্নস্বরূপ। সেই ধ্বনিতে সেই শোক মনে পড়ে। মানস প্ৰকৃতির নিয়মানুসারে ইহার আর একটি চমৎকার ফল জন্মে। শব্দ, এবং মুখকান্তি, উভয়ই শোকের চিহ্ন বলিয়া পরস্পরকে স্মৃতিপথে উদ্দীপ্ত করে। সেইরূপ শব্দ শুনিলেই, সেইরূপ মুখকান্তি মনে পড়ে ; সেই-- রূপ মুখ দেখিলেই, সেইরূপ শব্দ মনে পড়ে। এইরূপ ভূয়োভুয়: উভয়ে একত্র স্মৃতিগত হওয়াতে, উভয়ে উভয়ের প্রতিমাস্বরূপে পরিণত হয়। সেই শোকব্যঞ্জক মুখাবয়বকে সেই শোকসূচক ধ্বনির সাকার প্রতিমা বলিয়া বোধ হয় । ধ্বনি এবং মূৰ্ত্তির এইরূপ পরস্পর সম্বন্ধাবলম্বন করিয়াই প্রাচীনের রাগ রাগিণীকে সাকার কল্পনা করিয়া, তাহাদিগের ধ্যান রচনা করিয়াছেন। সেই সকল ধ্যান, প্রাচীন আৰ্য্যদিগের আশ্চৰ্য্য কবিত্বশক্তি ও কল্পনাশক্তির পরিচয়স্থল। আমরা পুৰ্ব্বপুরুষদিগের কীৰ্ত্তি যতই আলোচনা করি, ততই তঁহাদিগের মহানুভাব দেখিয়াই চমৎকৃত হই। দুই একটি উদাহরণ দিই। অনেকেই টোড়ি রাগিণী শুনিয়াছেন। সহৃদয় ব্যক্তিরা তচ্ছবিণে যে একটি অনির্বচনীয় ভাবে অভিভূত হয়েন, তাহা সহজে বক্তব্য নহে। সচরাচর যাহাকে কবিরা “আবেশ” বলিয়া থাকেন, তাহা ঐ ভাবের ७क९भ-केि रू একাংশমাত্র । তাহার সঙ্গে ভোগাভিলাষ মিলিত কর। সে ভোগাভিলাষ নীচপ্ৰবৃত্ত পাই । যাহা কিছু নিৰ্ম্মল সুখকর, অন্য জনের অসাপেক্ষ, কেবল আধ্যাত্মিক, সেই ভোগেরই অভিলাষ। কিন্তু সে ভোগাভিলাষের সীমা নাই, তৃপ্তি নাই, রোধ নাই, শাসন *াই | ভোগে এবং ভোগসুখে অভিলাষ আপনি উছলিয়া উঠিতেছে। আকাঙ্ক্ষা *াড়িতেছে। প্রাচীনেরা এই টোড়ি রাগিণীর মূৰ্ত্তি কল্পনা করিয়াছেন, সে পরমসুন্দরী যুবতী, বস্ত্ৰালঙ্কারে ভূষিতা, কিন্তু বিরাহিণী। আকাঙ্ক্ষার অনিবৃত্তিহেতুই তাহাকে বিরাহিণী **না করিতে হইয়াছে। এই বিরাহিণী সুন্দরী বনবিহারিণী, বনমধ্যে নির্জনে একাকিনী