পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৷৷৴৹


হইয়া উঠিয়াছে, আমি তাহাদের যে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করিয়াছি, তাহা যদি কোন অংশে যথার্থ হইয়া থাকে, তবে আশা করি, আমার এই আলোচনা ব্যর্থ হয় নাই। এই প্রসঙ্গে রবীন্দ্র-প্রতিভার ফলাফল সম্বন্ধে আমি যাহা সিন্ধান্ত করিয়াছি, তাহাতে অনেকেই ক্ষুব্ধ হইবেন জানি, কিন্তু মনে রাখিতে হইবে যে, আমি এ প্রবন্ধে—যেমন অন্যত্র বহু প্রসঙ্গে —রবীন্দ্রনাথের কবিত্ব বা ব্যক্তিপ্রতিভার মূল্য নির্দেশ করি নাই। বাঙালীর জাতি-ধর্ম্মের বিকাশে এবং তাহার যুগোচিত সংস্কৃতি-সাধনে সেই প্রতিভা কিরূপ কার্য্যকরী হইয়াছে, তাহারই একটা ইঙ্গিতমাত্র করিয়াছি; এবং তাহাতেও আমি আমার আহ্বপূর্ব্বিক চিন্তা-ধারারই বহুত স্বীকার করিয়াছি। আমার সেই সিদ্ধান্ত অপ্রিয় হইতে পারে— কিন্তু যদি তাহ যুক্তিবিরুদ্ধও হয়, তবে সমগ্র আলোচনাই নিস্ফল হইয়াছে। এ যুগ ব্যক্তি-প্রাধান্তের ও বিশ্বমানবতার ( দুই-ই মূলে এক) যুগ। এ জন্য আজকাল অনেকেই জাতিগত বৈশিষ্ট্য বলিয়া কিছুকে স্বীকার করেন না; তাহ ছাড়া, বাঙালীর আবার এমন কি বৈশিষ্ট্য আছে যাহা গুরুতর আলোচনা বা গণনার যোগ্য হইতে পারে—এমন প্রশ্ন আমাকে অনেকেই করিয়াছেন। এই শ্রেণীর আধুনিক পণ্ডিতগণের মানস-অভিমান তৃপ্ত করিবার দুরাশা আমার নাই; কিন্তু বাঙালীর চরিত্রে ও বাঙালীর ভাবনা-সাধনায় যে একটি স্বম্পষ্ট স্বাতন্ত্র্য আছে, এই প্রবন্ধে তাহার কথঞ্চিৎ প্রমাণ দিতে পারিয়াছি বলিয়া আমার বিশ্বাস।

 বাকি দুই একটি প্রবন্ধ ‘বিবিধ কথা’র বিবিধত্বেরই নিদর্শন।

শ্রীমোহিতলাল মজুমদার নীলক্ষেত, রমনা ঢাকা, ১৩ই ভাদ্র, ১৩৪৮।