পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»8२ বিবিধ কথা এতই সহজ, মণিলাল ! তোমার কথার ভাবে বোধ হচ্ছে—যা চারিদিকে ঘটছে, যা হবার জন্যে কোন চেষ্টাই করতে হয় না, বরং যার থেকে নিজেকে বাচাবার জন্যেই মানুষকে কত শাসন মেনে চলতে হয়— তুমি তাই চেষ্টা করেও হতে পার নি, তাই বড় আশ্চৰ্য্য হয়েছ ? কিন্তু একটি কথা জেনে রেখো, সত্যিকার ব’খে যেতে পারা যার-তার সাধ্য নয়—সে শক্তি খুব কম লোকেরই আছে, সে বড় ভাগ্যের কথা ।” সামাজিক রীতিনীতি দ্বারা স্বরক্ষিত, খ্যাতি প্রতিপত্তি ও আভিজাত্যমধ্যাদার উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত অতিশয় ভদ্র ও সভ্য যে জীবন, তাহার তুলনায় তাহারই বিপরীত এই যে আর এক জীবন, যাহার সম্বন্ধে ভাবিতেও আমরা শিহরিয়া উঠি—আমাদের আজন্ম বা জন্মাস্তরীণ সংস্কার ৰিত্রোহ করে, তাহারই আদর্শকে শরৎচন্দ্র কোন অনুভূতির ও অভিজ্ঞতার বলে এত উচ্চে তুলিয়া ধরিলেন ? সেও যেন একটা সাধনা, তাহাতেও সিদ্ধিলাভ একটা বড় পুরুষাৰ্থ । এ যেন আমাদের দেশের তান্ত্রিক সাধকের কথা । সেদিন সেই ক্ষুদ্র আলোচনার অবকাশে আমি চকিতে শরৎচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্যিক সাধনার মধ্যে একটা যোগস্থত্র আবিষ্কার করিয়াছিলাম—বুঝিয়াছিলাম, এই প্রতিভার উন্মেষ হইয়াছে এক প্রকার তান্ত্রিক চিত্তবৃত্তির বশে ; শরৎ-সাহিত্যে ষে খাটি বাঙালী প্রতিভার একটি দিক ফুটিয়া উঠিয়াছে, যাহাতে বাঙালী জাতির হৃদয়যন্ত্রের একটা বড় তার বাজিয়া উঠিয়াছে, সে প্রতিভায় মূল অতি গভীর , তাহ বাঙালীর একটা রক্তগত সংস্কারের ফল । জাতীয় সাধনার সে ইতিহাস আজ আমরা বিশ্বত হইয়াছি বলিয়াই শরৎ-সাহিত্যের বিচারে অতি-আধুনিক বিদেশী সমাজতন্ত্রের অতিশয় অগভীর দুই একটা তত্বের আশ্রয় লইয়া থাকি । কিন্তু এ কথা পরে ।