পাতা:বিবিধ কথা.djvu/১৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-পরিচয় ১৬৩ এমনভাবে বলি নাই। তাহ ছাড়া, সেদিন সে উপলক্ষ্যে মুখে যাহা বলিয়াছিলাম, আজ তাহ লিখিতে গিয়া—প্রসঙ্গের গুরুত্ব বিবেচনায় কথাগুলিকে আরও সুবিন্যস্ত করিয়াছি। কিন্তু শরৎচন্দ্রের নিকটে আমার মূল বক্তব্য ছিল ইহাই, কতখানি গুছাইয়া বলিতে পারিয়াছিলাম জানি না—কিন্তু তাহাতেই ফল হইয়াছিল। শরৎচন্দ্র অতিশয় নিবিষ্ট মনে আমার মতামত শুনিলেন, শুধু তাহাই নয়, দেখিয়া আশ্চৰ্য্য হইলাম, তিনি বিনা দ্বিধায় আমার প্রতিবাদের সারবত্ত স্বীকার করিলেন। তাহার প্রমাণ পাইলাম তাহার কয়েকটি মাত্র কথায়। প্রথমে তিনি অকপটে স্বীকার করিলেন যে, তিনি সত্যই এদিক দিয়া কখনও ভাবিয়া দেখেন নাই—সেজন্য যেন লজ্জিত ও দুঃখিত। শরৎ-চরিত্রের এই অকপট সারল্য ও নিরভিমান সত্যানুরাগ, র্তাহার সুগভীর মনুষ্যত্বের একটি অবিচ্ছেদ্য লক্ষণ । সৰ্ব্বশেষে তিনি কতকটা আক্ষেপের সহিত যাহা বলিলেন, তাহা আমি কখনও আশু করি নাই—আমার প্রতি এতখানি শ্রদ্ধা আমি কখনও দাবি করিতাম না। সেই তাহার শেষ কথা । তিনি বলিলেন, “মোহিত, তোমার সঙ্গে এইরূপ আলাপ-আলোচনার সুযোগ যদি হইত, তাহা হইলে তোমার ও আমার দুইজনেরই উপকার হইত।” শরৎচন্দ্রের মুখ হইতে এমন কথা বাহির হওয়া হয়তো আশ্চৰ্য্য নয়—তিনি অল্পেই মুগ্ধ হইতেন, এবং অনেকের সম্বন্ধেই নির্বিচার প্রশংসা করা তাহার পক্ষে দুরূহ ছিল না। অতএব ইহাতে আমার কোন আত্মপ্রসাদের কারণ নাই ; তথাপি শরৎচন্দ্রের এই সখেদ উক্তি আমার হৃদয় স্পর্শ করিয়াছিল —আমি আমার নিজের ক্ষতির কথাই ভাবিয়াছিলাম। র্তাহার সহিত এইরূপ আলাপ-আলোচনায় আমার যে লাভের কথাও তিনি বলিলেন,