পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২০৬ বিবিধ কথা পড়িয়াছে, প্রত্যক্ষের তাড়নায় অপ্রত্যক্ষের রহস্য বা ভয়-বিস্ময় এখন ফিকা হইয়া পড়িতেছে। আশ্চৰ্য্য এই যে, তাহার ফলে মানুষের আত্ম-প্রত্যয় যেন ক্ষীণ হইয়া আসিতেছে, মামুষ যেন আত্মভষ্ট হইয়া পড়িতেছে। মৃত্যুকে স্থিরদৃষ্টিতে দেখার যে কথা বলিয়াছি, সে বিষয়ে কোনও পরিবর্তন হয় নাই—স্বাভাবিক কারণেই তাহা হইতে পারে না ; অথচ মানুষ অপ্রত্যক্ষের ভয় বা আশ্বাস হারাইতেছে। প্রত্যক্ষ জীবনের/ কোনও মহত্ত্ব সে উপলব্ধি করে না—যুদ্র আয়ুষ্কালের যত কিছু মুখ, দুঃখ, কেবলমাত্র ভোগ-করিতে-পারা বা না-পারার মূল্যে সে গ্রহণ করিতেছে ; জীবনকে সে পণ্যস্ত্রীর মত ভোগ করিতে চায়, মৃত্যু সম্বন্ধে সে উদাসীন । মৃত্যু সম্বন্ধে মামুষের মনোভাবের এই দুই দিক তুলনা করিয়া দেখিলে মনে হয়, মৃত্যু সম্বন্ধে সত্য ধারণ জীবনের পক্ষে যেমন সম্ভব নয়, তেমনই প্রয়োজনীয় নহে। কিন্তু মৃত্যু সম্বন্ধে মিথ্যা কল্পনার প্রয়োজন আছে ; সেই মিথ্যাই মানুষের জীবনকে যে রঙে রঙিন করিয়া তোলে, তাহার রক্তে যে অবসাদ বা উন্মাদনা জাগায়, তাহারই ঘাত-প্রতিঘাতে মামুষের হৃদয়বৃত্তির উন্মেষ হয়—কামনার শক্তি বাড়ে। দেহ্যন্ত্রে রক্তসঞ্চালনই জীবন নহে—সেটা জীবন-ক্রিয়া মাত্র, কামই জীবনীশক্তির মূল। এই কাম যদি কল্পনাহীন হইয় পড়ে—যদি জীবন-ক্রিয়ার বাহিরে তাহার কোনও ফুৰ্ত্তির অবকাশ না থাকে, তবে মানুষ দুৰ্ব্বল হইয়া পড়ে, তাহার ভোগ-ক্ষমতাও কমিয়া যায়। এ পর্য্যন্ত মানুষ যেখানে যত শক্তির পরিচয় দিয়াছে, তাহার মূলে আছে প্রবল কামনা। তাহাকে জয় করা, অথবা জয়ী করা—এই উভয়ের শক্তি এক ; এ শক্তির মূলে আছে মরণাস্তরিত মহাজীবনের স্বপ্ন, অমরতার আশ্বাস । তাহার