পাতা:বিবিধ কথা.djvu/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাতির জীবন ও সাহিত্য S& জাতিকে সাবধান করিয়া দিয়াছিলেন । কিন্তু আমাদের আর তর সহিল ন!—বঙ্কিম-বিবেকানন্দের বাণীরই এক ভাব-বিকার উৎকট আত্মত্যাগের মোহে জাতিকে উদভ্ৰান্ত করিয়া তুলিল—প্রবল জীবনান্থভূতিই তীব্র সন্ন্যাস ও মৃত্যুপিপাসার নিদান হইল। সেই সময়ে ভাগ্যদোষে এমন সকল নেতা ও শিক্ষাগুরুর আবির্ভাব হইল, র্যাহাদের আত্ম-অভিমান অথবা পর-বিদ্বেষ জাতি-প্রেমকেও অতিক্রম করিল— জাতির ঐতিহ, তাহার গৃঢ়তর ভাব-অভাবের সহিত ইহাদের পরিচয় ছিল না, জাতির সহিত সামাজিক হৃদয়-বন্ধনও ছিল না। এক দিকে যেমন এই রোচক মিথ্যা বা পরামুচিকীৰ্ষা প্রস্থত আবেগের উত্তেজনা, তেমনই আর এক দিকে, সাহিত্যের আদর্শও ইতিমধ্যে দ্রুত পরিবৰ্ত্তিত হইতেছিল—সমাজের উপরে ব্যক্তির, বস্তুগত তথ্যের উপরে ভাগবত সত্যের প্রাধান্য বাড়িয়া উঠিতেছিল । শেষে সমাজ ভাঙিতে আরম্ভ করিল ; জাতি, গোষ্ঠী বা সংঘের সকল চেতনা লোপ পাইতে বসিল । গত পচিশ বৎসর ধরিয়া এই আত্মঘাতী আত্মপরায়ণতা অন্যান্য কারণ সহযোগে দ্রুত প্রসারলাভ করিয়াছে। দারুণ অভাবের তাড়নায়, সমাজের নিম্ন ও মধ্য স্তরে, মনুষ্যত্বের পরাজয় যেমন অনিবাৰ্য্য হইয়া উঠিয়াছে, তেমনই, সমাজের শীর্ষস্থানে বসিয়া সমাজকে রক্ষা করাই ছিল যাহাদের স্বাভাবিক অধিকার—সেই ধনী মানী ও শিক্ষিত সম্প্রদায় আজ জাতি ও সমাজ সম্বন্ধে সম্পূর্ণ দায়িত্বহীন ; মৃত্যকলার যে নটমনোভাব, এবং নবতন ব্যক্তিতান্ত্রিক সাহিত্যের যে স্বৈরাচার— একালে তাহাই উৎকৃষ্ট কালচারের নিদর্শনরূপে, তাহাদের দারুণ স্বার্থপরতার আবরণ হইয়া দাড়াইয়াছে। চারিত্রিক অধঃপতন হইতে এই যে নূতন ব্যক্তিধর্মের উদ্ভব হইয়াছে, তাহার কাহিনী আমি আর