পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (দ্বিতীয় খণ্ড) - গিরীন্দ্রকুমার সেন.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ድ9 mb” বিবিধ প্ৰবন্ধ। না ? পল্লীগ্রামে তেঁতুল কাটিয়া তাল করিয়া কি পৰ্ব্বতাকার করিতে পারেন না ? সস্তায় ঝুড়ি ঝুড়ি কঁাচা আমি কাটিয়া অল্প শিক্ষা সাধ্য চাটনি করিয়া কি সমগ্ৰ পৃথিবীর চাটনি সরবরাহের ভার গ্ৰহণ করিতে পারেন না ? অথবা মসলা চুৰ্ণ করিয়া পরিমাণ মত সংমিশ্রণ পূৰ্ব্বক ইউরোপ ও আমেরিকার অভাব মত মসলা অল্পমূল্যে সরবরাহ করিতে পারেন না ? তাহারা সকলই পারেন এবং তাহাদিগকে গলগ্রহও হইতে হয় না। কিন্তু দুঃখের বিষয় শ্রমবিভাগ-প্রথায় ব্যক্তি বিশেষেয় কাৰ্য্য-সামর্থ্য নিয়োজিত করিতে কেহই ইচ্ছক নহেন। আমাদের সমাজকৰ্ত্তারা ভূয়োদর্শন গুণে যে সকল সমীচীন রীতির প্ৰচলন বিষয়ে সহায়তা করিয়া গিয়াছেন, আজিকালি তাহদের ংশধরগণ বিলাসপরতন্ত্র ও দৃষ্টিহীন হইয়া এবং পৃথক থাকিয়া, পরদুঃখকাতরতাকে স্বার্থোশ্নতির পরিপন্থী বলিয়া বিবেচনা করিতেছেন। র্তাহাদের সকলেরই ইচ্ছা হয়, কলিকাতায় থাকিয়া পৃথক ভাবে আত্মোন্নতির পথ অনুসন্ধান করেন ; কিন্তু তাহার একবারও ভাবেন। না যে তঁাহার মৃত্যুর পর তঁহাদের স্ত্রী পুত্র কন্যার ভার কে গ্ৰহণ করিবে । যাহা সমাজের উপর ন্যস্ত ছিল তাহ নিজ হস্তে গ্ৰহণ করিয়া দারিদ্র্য-দুঃখ আহবান করা কখনই দূরদর্শিতার লক্ষণ বলিয়া অনুমিত হইতে পারে না । কেহ কেহ কিছু দান করিয়া মনে করেন, সমাজের কল্যাণ সাধন করিলেন, অথবা আত্মীয় স্বজনের উপকার করিলেন ; কিন্তু দান কাৰ্য্যকর বা সার্থক না হইলে দেশের অর্থনাশ অবশ্যম্ভাবী এবং দানকাতরতা তাহার অন্যতম ফল ।-ভিক্ষুক হইতেই বা কাহার সাধ ? যাহাকে সমাজ ভিক্ষুক হইতে দেয় নাই, আজ তাহাকে ভিক্ষুক সাজিতে বলা যে কেন যুক্তিসিদ্ধ বলিয়া বোধ হইতেছে, তাহা বুঝিতে পারা যায় না।