JN বিবিধ প্রবন্ধ । ৫ যিনিই যাহা বলুন, মানুষ অভ্যাসের দাস বই ত নয়। তন্ত্রশস্ত্র সম্যকৃরূপে এই তথ্য স্বীকার করে এবং তাহ! স্বীকার করিয়া মানুষের দেহ বুদ্ধি এবং নীতিকে এমতভাবে গঠিত করিতে চায়, যাহাতে শরীর সর্ব্ব কাৰ্য্যক্ষম, বুদ্ধি তথ্য নিরূপণক্ষম এবং নীতি ইন্দ্ৰিয়বৃত্তি পরাজয়ক্ষম হয়। কিন্তু এই সমস্ত বিষয়ের সাধনোপীয় অভ্যাসবিধির নিত্যত্ব স্বীকার সাপেক্ষ । যাহারা বিধির নিত্যত্ব স্বীকার করিয়া তদনুযায়ী কার্ষ্যে হতাদর না হয়, তন্ত্র তাহাদিগকেই শিখাইতে পারে। খামখেয়ালির লোকেরা তন্ত্রের শিক্ষার বহিভূত পদার্থ–বোধ হয় তাহারা সকল শিক্ষারই বহির্ভূত। পূজা বিধি-পালনের নিত্যত্ব অভ্যাস করায় —এই জন্যই তাহার এত সমাদর। ( > ) প্রাণায়াম । প্রাণায়াম হঠযোগেরই অঙ্গ। কিন্তু ইহার উদ্দেগু অতি বৃহৎ । ইহার সাক্ষাৎ উদ্দেশ্য ফুসফুসের পেশীগুলিকে ইচ্ছাবৃত্তির বশীভূত করা, পরম্পরা উদ্দেশু অমরত্বলাভ কর। যদি এই কথা শুনিয়া কেহ মনে করেন যে, প্রাণায়াম যোগের উদ্দেশু সিদ্ধ হওয়া নিতান্ত অসম্ভব, লেখক তাহাতে কোন আপত্তি করিতে পারেন না । যখন এ পর্য্যন্ত কোন মানুষ কোথাও অমর হয় নাই তখন কেহ অমর হইতে পারে না এ কথা বলিলে তাহার থ গুন করাও যায় না । কিন্তু অমরত্বসাধন না হউক, প্রাণায়াম যোগের প্রভাবে দীর্ঘজীবিত সাধিত হয় । তাহ হইলেও ত অনেক হইল বলিতে হইবে । অতএব দেখা যাউক, প্রাণায়াম দীর্ঘজীবিত সাধনের উপযোগী হইতে পারে কি না। প্রাণায়াম যোগের প্রথম প্রণালী এই –নাসিকারন্ধের এক মুখ এক অঙ্গুলি দ্বারা রুদ্ধ করিয়া তাহার অপর মুখ দ্বারা শ্বাস গ্রহণ আস্তে আস্তে করিবে; মনে মনে মন্ত্রজপ করিতে করিতে করিবে ; পরে নাসিকার উভয় রন্ধই অজুলি দ্বারা বন্ধ করিয়া যত বীর মন্ত্রজপ করিতে করিতে নিশ্বাস গ্রহণ করিয়াছিলে তত বার সেইরূপে মন্ত্রজপ করিবে ; অনন্তর নাসিকার যে রন্ধ, প্রথমে বন্ধ করিয়াছিলে, তাহ উন্মুক্ত করিয়া যত বার মন্ত্রজপ সহকারে নিশ্বাস গ্রহণ করিয়াছিলে, তুত বার সেই প্রকারে মন্ত্র স্বপ করিতে করিতে নিশ্বাস ছাড়িবে। মনে কর, যেন কোন মন্ত্রের দশবার করিয়া জপ করিতে করিতে এইরূপ প্রাণায়াম করিয়াছ এবং কয়েকদিন তাহ করায় ঐ কার্য্য অভ্যস্ত হইয়া
পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/১৭৪
অবয়ব