পাতা:বিবিধ প্রবন্ধ (ভূদেব মুখোপাধ্যায়) দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় ভাগ । 8.8 চীনের বাসন প্রস্তুত করা এবং সে সকল বাসন চিত্রিত ও অতি দিব্যগঠন করা কুম্ভকারব্যবসায়ের চরম উন্নতি । অগ্নির ব্যবহার প্রবর্তিত হওয়ার পূৰ্ব্বে নরগণের যে সকল সৌকর্য্য সাধিত হইয়া গিয়াছে, বারুদের এবং বাষ্পীয় কলের স্বষ্টি হইয়া অবধি তাহা অপেক্ষণ ও অনেক অধিক প্রয়োজন সাধিত হইতেছে । এক্ষণে আগ্নেয় অস্ত্রের প্রভাবে মনুষ্য সৰ্ব্বজয়ী হইয়াছেন । মতুযু মনে করিলেই অন্ত যে কোন জীব হউক তাহার ধ্বংসসাধন করিতে পারেন । শুদ্ধ অন্ত জীব নহে, আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার না জানে এমত কোন নরজাতি ও আর আগ্নেয়াস্ত্রধারীর প্রতিদ্বন্দ্বী হইতে পারে না । বাষ্পীয় কলের সহকারিতা লব্ধ হওয়াতে মনুষ্যেরা প্রাকৃতিক শক্তি সকলের সহিতও প্রতিযোগিতা করিতে সমর্থ হইয়াছেন । ফলতঃ এমন কথা বলা যাইতে পারে যে, বারুদের এবং বাষ্পীয় ও তাড়িতযন্ত্রের আবিষ্কার পৃথিবীতে যুগান্তর উপস্থিত করিয়াছে । ভাষার পর্য্যায়ক্রম ৷ ভাষাতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতের নরগণের প্রাকৃতিক বর্ণভেদের অহসারে কোন কোন মূল ভাষা ছিল, ইহা যেমন স্পষ্টরূপে আবিষ্কৃত করিয়াছেন, ভাষার প্রথম স্থষ্টি বিষয়ে তেমন কোন বিশুদ্ধ নিয়ম এ পর্য্যন্ত প্রকাশ করিতে পারেন নাই। প্রাচীনদিগের মধ্যে একটা দৃঢ় প্রতীতি ছিল যে, যেমন ভিন্ন ভিন্ন দেশবাসী নরজাতিসমূহ একমাত্র আদিম মনুষ্যদম্পতী হইতে সমুদ্ভূত হইয়াছে, তেমন একমাত্র মূল ভাষা হইতে সৰ্ব্ব প্রকার ভtযারও উৎপত্তি হইয়াছে। এই বিশ্বাসের বশবৰ্ত্তী হইয়া পূৰ্ব্বকালের কোন কোন রাজা সেই মূল ভাষা কি, তাহার নিরূপণ করিবার উদ্দেঙ্গে এক প্রকার পরীক্ষাবিধান করিয়াছিলেন । কথিত আছে যে, মিসরের কোন রাজা সদ্যোজাত দুইটী শিশুকে একটা মূক ধাত্রীর হস্তে পালনার্থ সমর্পণ করিয়া রাখেন। পরে তাহারা সৰ্ব্বাগ্রে যে ভাষার শব্দ উচ্চারণ করে, তাহ শুনিয়া স্থির করেন যে ফ্রিজীয় ভাষাই সকল ভাষার মূল ! শুনা যায়, স্কটুলণ্ডের কোন রাজা অবিকল ঐরুপে পরীক্ষা করিয়া স্থির করেন যে, হিব্রভাষাই সকলের মূল ভাষা ! মোগল সম্রাট আকবর সাহ আগর নগরের সন্নিহিত কোন স্থানে চারিট সন্ঠোজাত শিশুকে লইয়া কয়েকজন মূক ধাত্রীর দ্বারা প্রতিপালিত করিয়া দেখিয়াছিলেন