পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৩৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

é३२ বিভূতি-রচনাবলী বনানীঘেরা বটতলটিতে যা সে-রত্রে উচ্চারিত হয়েছিল, এখানে বসে আবার তারই স্মৃতি জেগে উঠলো অতীত দিনের দ্রুত, আধো-ভোলা, আধো মনে-পড়া কোনো মধুর গানের একটি চরণের মত । আর একটি কথা তিনি বলেছিলেন । কি অদ্ভুত লাগছিল সেটা সেই ভরা ভাদরের বেতসকুঞ্জ ও শালবীথির পরিবেষ্টনীতে। মস্ত বড় একটি বাণী । -> বলেছিলেন তিনি : —মুক্তির ধারণা বন্ধন আছে বলেই আসে। যথার্থ বিচারের দৃষ্টিতে মানুষের মুক্তিও নেই বন্ধনও নেই। ব্রহ্ম এক অচিন রাজ্য, যে যেখানে যায়, সেই বোঝে ব্রহ্ম দ্বৈতও নয় অদ্বৈতও নয় । তিনি শাস্ত্রেরও পারে, বাদাম্বুবাদেরও পারে, দ্বৈতবাদের প্রতিপাদ্য নয়, অদ্বৈতবাদেরও প্রাপ্য নয়! অনুভূতিই একমাত্র জিনিস। মানুষ মুক্ত আছেই, কেবল সে-সম্বন্ধে সচেতন নয় সে । মানুষ সদামুক্ত, সে মানুষ । কিছু পড়তে হবে না। কিছু সাধন করতে হবে না। অনুভূতিই উত্তরায়ণের সেই অভিযাত্রী, যা তাকে পলকে মুক্তির জ্যোতিল্পের্ণকে নিয়ে গিয়ে তুলতে পারে । বিশ্বাস কর বাবা। মানুষ মুক্ত। সে-ই নিজেকে নিজে বেঁধেছে। সে-ই অনুভব করুক সে মুক্ত ! সে মানুষ, সে মুক্ত । ঝগড়া সন্ধার সময় কেশব গাঙ্গুলীর ভীষণ ঝগড়া হয়ে গেল দুই কন্যা ও স্ত্রার সঙ্গে । কন্যা দুটিও মায়ের দিকে চিরকাল । এদের কাছ থেকে কখনো শ্রদ্ধা ভালবাসা পান নি কেশব । শুধু এনে দাও বাজার থেকে, এই আক্রা চাল মাথায় করে আলো দেড়কোশ দূরের বাজার থেকে। তেল আনে, হন আনে, কাঠ আনে—এই শুধু ওদের মুখের বুলি। কখনো একটা ভালো কথা শুনেছেন ওদের মুখ থেকে ? ব্যাপারটা সেদিন দাড়ালো এইরকম। সন্ধ্যার আগে কেশব গাঙ্গুলী হাট করে আনলেন। তার বয়েস বাহাত্তর বছর, চলতে আজকাল যেন পা কাপে—আগের মত শক্তি নেই আর শরীরে। আড়াই টাকা করে চালের কাঠা । দু কাঠা চাল কিনে, আর তাছাড়া তরিতরকারি কিনে ভীষণ কর্দমময় পিছল পথে কোনরকমে পড়তে পড়তে বেঁচে গিয়ে কেশব গাজুলী তো হাটের বোঝা বাড়ী নিয়ে এলেন । স্ত্রী মুক্তকেশী বললে—দেখি কি রকম বাজার করলে ? পটােলগুলো এত ছোট কেন ? কত করে সের ? -पृष्ठें अॉनां ।