8ՀԵ বিভূতি-রচনাবলী
—আঞ্জে, কইখালি থেকে ।
|| 8 س--
—আপনাকে দর্শন করতে এলাম।
—বোসে বাবা ।
—বসি ।
—কি কর ?
—আজে, বিষয়-কৰ্ম্ম করা হয় ।
—ব্রাহ্মণ ?
—আজ্ঞে হঁ্যা ।
—কুলীন ব্রাহ্মণ ?
—হঁ্যা মা, আমার নাম হরিপ্রাণ মুখুজে, তিনপুরুষে ভঙ্গী। সদানন্দ মুখুজ্জের সন্তান। বাওন-ঘাটি গাই ।
—আমাকে প্রণাম করলে কেন বাবা, তুমি কুলীন ব্রাহ্মণ ? আমি তোমার কত ছোট । বলেই ভৈরবী নাকি হরিকাকাকে গড় হয়ে প্রণাম করেছিল ।
হরিকাকা নীরবে সেখানে বসে ছিলেন অনেকক্ষণ, এমন কি মধু হাড়ির দল যখন সন্ধ্যার আগে সেখান থেকে উঠে চলে এল—তখনো হরিকাকা সেখানে চুপ করে বসে আছেন। অনেক রাত্রে সেদিন তিনি বাড়ী এলেন, চোখে কেমন যেন ফ্যালফেলে দৃষ্টি । রাঙা খুড়ীমার মুখে একথা শোনা । সারারাত হরিকাকা কেবল নাকি পায়চারি করেছেন আর বার বার বাইরের দাওয়ায় গিয়ে বলেচেন । জিগ্যেস করলে বলেছিলেন, বডড গরম হচ্চে । সকালে উঠেই কোথায় চলে গেলেন—দুপুর গড়িয়ে গিয়েচে তখন বাড়ী এলেন। কেমন যেন অন্যমনস্ক ভাব। খুড়ীমাকে বল্পেন—দশটা টাকা দিতে পারো ?
—কেন গা ?
—ঠাকুরের পূজো দেবো ।
—কি ঠাকুরের ?
—নিবাজার মন্দিরে যে ঠাকুর ছিল, এ্যান্দিন কেউ জানতো না । ভৈরবী জাগ্রত করেচে সেই ঠাকুর । o
—ভৈরবী তোমায় তুকগুণ করেনি তো ?
—পাগল !
—আমার ভয় করচে কিন্তু ।
—যেদিন বুঝবে সেদিন আর ভয় করবে না । ভয় কিসের? কোনো ভয় নেই।
এর কয়েক মাস পর পর্যন্ত হরিকাকা রোজই বাড়ী আসতেন, কিন্তু ক্রমশ তার ধরন-ধারণ লগতে লাগলো। অন্য কোনো বাইরের পরিবর্তন—গেরুয়া বস্ত্র ধারণ, বা নিরামিষ আহার –এসব নয়। মদ খাওয়া একদম বন্ধ হল । বাজে লোক নিয়ে আডড আদৌ দেন না।
পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪৪৮
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
