পাতা:বিভূতি রচনাবলী (একাদশ খণ্ড).djvu/৪৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

900 বিভূতি-রচনাবলী উঠে বরে—ও কি ? আমি হাসি চেপে বল্লাম—চটকা গাছের ডাল। লোকটা আশ্বস্ত হয়ে 63 ساكا)ة —তোমার নাম কি ? —নিধিরাম । -वांएँौ ? —কটক জিলা । —সত্যি ? তুমি তো বেশ বাঙালীর মতে কথাবার্তা বলচে। --তা হবে না বাৰু? বেনাপোলের কাছে কাস্বন্দিয়াতে আমার পনেরো বছর কেটে গেল। ওখানে আমার গোরুর বাথান । কুড়িটা গাই গোরু, পনেরো ষোলটা বকুনা বাছুর, মস্ত বাথান। রোজ আধ মণ দুধ হয়। এড়ে বাছুর আমরা রাখিনে, শুধু বক্না বাছুর রেখে দিই। এড়ে বিক্ৰী করে ফেলি বাবু— লোকটা একটু বেশি বকে। আমাকে পেয়ে ওর বকুনি আর থামতে চায় না । এক যাচ্ছিল, আমায় পেয়ে ও ভারি খুশি হয়েচে, ভরসা পেয়েচে, এই সন্দেবেলা । বল্পে—বৃষ্টি আর হল না বাবু, কি বলেন ? —সেই রকমই তো দেখচি । –এবার বড় দুব্বচ্ছর । আমন ধানের রোয় হল কই ? বীজপাত ছিল দু কাঠা ভুই । সে বীজ লালচে হয়ে আসচে। ওই দেখুন, কেমন মেঘ করে আসছিল, আবার ফর্সা হয়ে এল। এবার আমাদের এদিকে খুব কম বৃষ্টি হয়েচে । আমন ধানের রোয়া হয়নি, চাষামহলে হাহাকার পড়ে গিয়েচে, ধানের দর ছিল চার টাকা মণ । এখন উঠেচে সাড়ে সাত টাকা মণ । গরিব দুঃখী লোকেরা এর মধ্যে উপোস শুরু করে দিয়েচে । * আমায় আবার বল্পে-গোরুগুলো অনেক কষ্ট করে মানুষ করা। এবার বিচুলি অভাবে মারা পড়বে বাবু । —কাচা ঘাস কেটে খাওয়াবে। বর্ষাকালে কোনো, গোরু বিচুলি খায় । সুবই কাচ স্বাস খেয়ে বঁাচে । - —বেতনা নদীর ধারে আগে আগে কত কাচা ঘাস পাওয়া যেতে, এখন সব অঁাটি বেঁধে এনে এনে বনগা শহরে বিক্রী করে। শহরে বাবুরা চার আনা চোদ পয়সা এক আঁটি নিচে । আমাদের গোরুর ঘাস নিয়েই মুশকিল। ওটা কি বাৰু? এইবার লোকটা চমকে উঠে যেন আমার গা ঘেষে এসে থমকে দাড়ালো । আমি বল্লাম—কই, কি ? —ওই যে সাদা মত ? চেয়ে দেখলাম, কিছুই না। মাকালতলার মোট সাদা লতা গাছের তাল থেকে ঝুলে জুলচে অন্ধকারে । লোকটা দেখচি বিষম তীতু। হঠাৎ আমার মনে একটা দুষ্ট বুদ্ধি জাগলো ।