পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

किल्लङ्ग झल्न २० (t সেই আগের রাস্তাটা সম্পর্কে। সে ছবি ও গন্ধের সঙ্গে এ রাস্তা খাপ খাইতেছে না। একটা প্রকাও মাঠের মধ্যে সে ক্রমে আসিয়া পড়িল । দিশহারা হইয়া গিয়াছে সে । আর কোন কিছুরই ঠিক নাই তার। এসব জায়গায় কখনও সে আসে নাই, এসব পথে হাটে নাই । মাঠের মধ্য দিয়া অন্তমনস্কভাবে উদভ্রাস্তের মত চলিতে চলিতে হঠাৎ ফোস ফোস শব্দ শুনিয়া চমকিয়া পাশের দিকে চাহিল। একটা মস্ত বড় কালকেউটে ফণা বিস্তার করিয়া দুলিতেছে। ছোবল মারিবার দেরি চক্ষের পলক মাত্র—বুধী থমকিয়া দাড়াইয়া বিদ্যুৎবেগে পিছু হাটিয়া আসিল—পরক্ষণেই দৌড় দিল খান, ডোব, পগার ভাঙিয়া। কেউটেটা কিছুদূর তাহার পিছু পিছু আসিয়া একটা কাটাঝোপে আটকাইয়া থামিয়া গেল । কাটাঝোপের ওপাশেই ছোট্ট ডোবাতে দু'টি ছেলে মেয়ে ছিপ ফেলিয়া মাছ ধরিতেছে। বুধী হুটু-পাটু করিয়া তাহাদের সামনে গিয়া পড়িতেই তাহারা ভয়ে ছিপ ফেলিয়া উঠিয়া দাড়াইল । বুধী মানুষ দেখিয়া থমকিয়া দাড়াইল অনেক আগেই। সাপট দেখা যায় না পিছনে, চকিতে পিছন ফিরিয়া চাহিয়া দেখিল । মেয়েটি ছেলেটির হাত চাপিয়া ধরিয়া বড় বড় ভয়াৰ্ত্ত চোখে বুধীর দিকে চাহিয়া বলিল—ও দাদা, গুড়িয়ে দেবে—কাদের গরু। @ আহা, তাদের গ্রামের তার সেই খুকীটির মত। স্নেহে বুধীর মন গলিয়া গেল। বুধী বলিতে চাহিল—গুতিয়ে দেবো কেন, খুকী—সোনা আমার, মানিক আমার—আমি কিছু বোলবো না—ভয় কি ? ধরে, তোমরা মাছ ধরে । ছেলেটি ছিপ উচাইয়া মারিবার ভঙ্গিতে বলিল—যাঃ বেরো—যা—এ আপদ কোথা থেকে এসে জুটলো আবার—যা: যা:– বুধীর ইচ্ছা ছিল কিছুক্ষণ দাড়াইয়া দাড়াইয়াওদের মাছ ধরা দেখে—খুকীটাকে দেখে। কিন্তু খুকীর দাদা ছিপ গুটাইয়া দাড়াইয়া আছে, মারিবে বোধ হয়। সেখান হইতে সে সরিয়া পড়িল । নিকটে একটা গ্রাম কাহীদের বাড়ির উঠানে প্রকাও এক বিচালির গাদা ! উঠানে বড় বড় নাদায় কতকগুলি গরু খোল-মাথা বিচালি ও ভূষির জাব, খাষ্টতেছে। প্রকাণ্ড নাদাগুলি হইতে উখিত সুমিষ্ট খোলের গন্ধে বুধীর জিহবা জলসিক্ত হইয়া উঠিল। শুধু ঘাস আর জল, জল আর ঘাস সেখানে সেই বড় বাড়িটাতে বন্দীশালায় থাকিবার সময় শুক্নো বিচালি খাইয়া । মরিয়াছে কতদিন । খোল মাখানো জাব, কতকাল সে যে খায় নাই ! বুধীর বড় লোভ হইল—সে দেখিল একটা ছোট নাদায় দুটি বাছুর জাব, থাইতেছে। এই তাহার সুযোগ—সন্ধা হইয়া গিয়াছে—উঠানটাতে লোক নাই—অন্ধকারও বেশ ঘন। বুধ চটু করিয়া বাছুরের পাশে আসিয়া নাদাটাতে মুখ ডুবাইয়া খাইতে আরম্ভ করিল। আঃ, কত কাল পরে খোল-মাখা জাবের আস্বাদ আবার সে পাইল - ছোট বাছুরট বিস্মিত ও ভীত হইয়া ডাকিল—মী—আ—আ । কে এসে খাচ্ছে দেখ— কিছু দূরের নাদাটা হইতে মুখ তুলিয়া তাহার মা বুধীকে দেখিতে পাইয়া বলিল—কে রে? मूह इ-मूह ए-श्रांशन কথা শেষ করিয়াই বাছুরের মা শিং নাড়া দিয়া বুধকে গুতাইতে আসিল । বুধী তখন মাত্র কয়েক গ্রাস খাইয়াছে—ভয়ে সে খাওয়া ফেলিয়া দৌড় দিল । । একটা বড় গরু বলিয়া উঠিল—আম্পৰ্দ্ধা দ্যাথো না ভিখিরীটার --- বুধী বড় অপমান বোধ করিল । জগৎটা যে এত খারাপ তাহা সে আগে জানিত না ।