পাতা:বিভূতি রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড).djvu/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&bや বিভূতি-রচনাবলী হঠাৎ আমার মনে পড়লো একদিনের কথা । দীপ্তির বাবা বিয়ে করে যেদিন ওর মাকে নিয়ে ফিরছিলেন। ত্রিশ বছর আগের ঠিক এমনি এক অন্ধকার সন্ধ্যা । সেই শ্রাবণ মাসে ঘাড়াতলা দ’এর কাদা ঠেলে গাড়ি উঠিয়েছিলাম কাদায় মাথামাথি হয়ে । বাবার কাছে মার খেয়েছিলাম । আজ আবার তাদেরই মেয়ের বিয়েতে সেই রকমই গাড়ি ঠেলচি, গাড়িও যাচ্চে শহরের দিকেই । তাদেরই মেয়ে দীপ্তি। হয়তো সে আজ খুব রাগ করবে আমি না— জীবনে কি আশ্চৰ্য্য ঘটনাই সব ঘটে ! ভৌতিক পালঙ্ক অনেকদিন পর সতীশের সঙ্গে দেখা । বেচার হস্তদন্ত হয়ে ভিড় ঠেলে বিকালবেলা বেণ্টিঙ্ক স্ত্রীটের বা দিকের ফুটপাথ দিয়ে উত্তরমুখে চলেছিল । সমস্ত আপিসের সবেমাত্র ছুটি হয়েছে। শীতকাল । আধ-তান্ধকার আধ-আলোয় পথ ছেয়ে ছিল । ক্লান্তদেহে ছাকড়া-গাড়ির মত ধীরে ধীরে পথ ভেদ করে চলেছিলাম। সহসা সতীশের জামাটা চেপে ধরে চীৎকার করে উঠলাম— আরে, সতীশ যে ! সতীশ সবিস্ময়ে আমার পানে চেয়ে বলে উঠল—খগেন ! বাই গড় ! আমি তোমাকেই খুঁজছিলাম। বললাম—তার প্রমাণ, আমাকে ধাক্কা দিয়েই তুমি চলে গেছলে আর একটু হলে! ভাগ্যিস ডাকলাম ! —সরি। আমি এখন বিশেষ ব্যস্ত । —তা তো বুঝতেই পারছি। তা কোথায় চলেছ শুনি ? —তোমাকেও আমার সঙ্গে যেতে হবে। বেশীদূর নয়। যাবার পথে সব বলব। —আশ্চৰ্য্য! —‘না’ বল্পে শুনব না । জোর করে নিয়ে যাব । ছেলেবেলা থেকেই সতীশকে চিনি। কথা অনুযায়ী সে কাজ করে। আর শরীরে কিছু বল থাকায়, প্রায়ক্ষেত্রে সে বলপ্রয়োগ করে স্বার্থসিদ্ধি করতে ভোলে না । অগত্যা তার সঙ্গে যেতে হোল । তার গন্তব্যস্থান খুব নিকটেই ছিল এবং সে তার উদ্দেশু খুব সংক্ষেপেই ব্যক্ত করল। সেদিন সকালে খবরের কাগজে বেচা-কেনার কলমে একটি বিজ্ঞাপন ছিল : “একটি অতি আধুনিক এবং রহস্যজনক চীনদেশীয় খাট অধিক মূল্যদাতাকে বিক্রয় করা হইবে। জগতে ইহা অদ্বিতীয় । সুযোগ হারাইলে অমুশোচনা করিতে হইবে। ”ষ্ট্রট । ، • • . • . ه • . (ى| چ সতীশ তার পকেট থেকে বিজ্ঞাপনটি বার করে বল্ল—পড় । —বুঝলাম । তা 'রহস্যজনক’ শব্দটার মানে কি ?