পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কেদার রাজা పిషెరీ যেমন একবার, আজ দশ-পনেরো বছর আগে, গড়ের বাইরে যে বড় মজা দীঘির নাম চালধোয়া পুকুর, তার ধারে কি করতে গিয়ে কেদার একটা বাঁধা-ঘাটের চিহ্ন দেখতে পান। কত কাল আগের বাঁধাঘাট কে বলবে ? কয়েকটা মাত্র ধাপ তার অবশিস্ট আছে—বাকীটী হয়তো মাটির মধ্যে পোঁতা । একবার তিনি কিছু পরোনো ইট বিক্রি করেন, গড়ের খালের এপারের একটা বড় পচিলের ইট । বহুকাল থেকে স্তপোকার হয়ে পড়ে ছিল—তার ওপরে গজিয়েছিল বনগাছের জঙ্গল । ইটের ঢিবি খড়তে খড়তে যখন সব ইটের স্তপে শেষ হয়ে গেল—তখন সমতল মাটির আরও হাত-তিনেক নিচে আর কতকগুলো ইটের সম্প্রধান পাওয়া গেল । সে জায়গাটা খড়ে দেখা গেল মাটির নিচে একটা মন্দিরের খানিকটা অংশ যেন চাপা পড়ে আছে ৷ তখন সে ইটগুলোও খড়ে তোলবার জন্যে বন্দোবস্ত করা হ’ল । আরও হাত-দুই খড়ে খবে বড় একটা পাথরের মাথা বেরিয়ে পড়ল । আর খেড়িা হয় নি—এখন সে-সব আবার বনে ঢেকে গিয়েছে। কেদারের মনে হয়েছিল, ওখানে একটা মন্দির ছিল বহুকাল আগে— কতকাল আগে তা অবিশ্যি তিনি আন্দাজ করতে পারেন নি। অনেকগুলো নক্সাকাটা ইট বেরিয়েছিল ওখান থেকে। কিসের মন্দির তাও কেউ জানে না। ওই বাড়ির চারিপাশে তাঁদের পর্বপরিষদের কত দীঘি, দেউল, ঘরবাড়ি ভেঙেচুরে আত্মগোপন করে আছে আজ কত কাল কত যুগ ধরে, দাভেদ্য বেতবনের আড়ালে, জগডুবর গাছের অাঁকাবাঁকা শেকড়ের নিচে ; দশো বছরের সঞ্চিত চামচিকের নাদির মধ্যে থেকে বিরাট শিবলঙ্গ কোথাও মাথাটি মাত্র জাগিয়ে আছেন—হস্তপদভন্ন বারাহী দেবীর পাষাণ মাত্তি’ ছাতিমবনের নিবিড় ছায়ায় অনাদত অবস্হায় পড়ে আছে কতকাল । শরৎ এসব জানে। নিজের চোখেও দেখে আসছে আবাল্য, রাজলক্ষীর ঠাকুরদাদা বদ্ধ শ্ৰীনাথ চাটুজের মুখে সে অনেক কথা শুনেছে, যা তার বাবাও কোনদিন বলেন নি। শ্রীনাথ চাটুজে অনেক খবর রাখতেন । —ভাত দিই বাবা, রাত হয়ে গিয়েছে অনেক— —কেমন গলপ শনলি, হল তো ? —উত্তর দেউলের কথা ভুলে গিয়েছ দিব্যি। –ভুলবো কেন, ওই যে বললাম— —দেবীমত্তির কথা বললে না যে— —সেও তো শোনা কথা । কালাপাহাড় না কে”দেবীর মাত্তি ভেঙেচুরে মন্দির থেকে ফেলে দেয় টান মেরে— । 輸 « —ভাদ্র মাসের অমাবসোতে দেবীমত্তি নাকি— —কে দেখতে গিয়েছে মা ? চোখে কেউ দেখেছে ? ওসব গুজব । পাষাণের অতবড় মত্তিটা অমনি জাগ্রত হয়ে ঠেলে উঠে চলতে শরে করে—হ’্যাঃ– শরৎ সাহসিকা মেয়ে, তবুও বাবার কথায় যে ছবি তার মনে জাগলো—তাতে সে শিউরে উঠলো, কারণ সে শনে এসেছে সেসময় যে সঞ্চরণশীল জাগ্রত পাষাণ মাত্তির সামনে পড়ে, তার সেদিন বড়ই দুদিন । -- না, ওসব কথায় তার ভয় হয় ; তাড়াতাড়ি সে বাবাকে বললে, থাক থাক বাবা, ওসব কথায় আর দরকার নেই। তোমার কি, রাতদপের পয্যন্ত ফেলে রেখে যাবে, মরতে ठाभिद्दे মরি আর কি । d মশা বিনবিন করছে জঙ্গলের মধ্যে । খালি গায়ে ঘরের মধ্যে বসা কট। কলাবাদড় বি. র• ৩—১৩