পাতা:বিভূতি রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উমি্মখের 8షీసి রোয়াকে, খিড়কীর পথে, বাঁশবনে—সম্ভবত প্রদীপ জলচে । ন-দি হেসে বললে—এই দ্যাখো, এবার তোমাদের কলকাতার হ্যারিসন রোড হয়ে গিয়েচে । না ? ক-দিনই বড় আনন্দে কাটল । আজ দাপরে একটা মালো এলো সাপ খেলাতে । আমতলায় চেয়ার পেতে আমরা সবাই বসে সাপ খেলানো দেখি । ন-দি, খড়ীমা, ক্ষদ, পাঁচী, জগো, গোপাল—সাপ খেলা দেখে সবাই খব খুশি । এবার পুজোর ছয়টিতে যত গান শনেচি দটো গান আমার মনে বড় ছাপ রেখে গিয়েচে, গানের সরের জন্যে নয়, যে বিশেষ সহানে ও বিশেষ অবস্হায় সেই গান দুটি গাওয়া হয়েছিল তার জন্যে। সেদিন পাহাড় পেরিয়ে এসে রথোমের মদীর দোকানে একটা ছোকরা যে গাইছিল ৪— হায় হায় শিশুকালে ছিলাম সখেএ গানটার এই পয্যন্ত মনে আছে । আর একটা আজকার সাপড়ের গানটা ঃ– সোনার বরণ লখাই আমার হয়ে গেল কালো ( ওগো ) কি সাপে দংশেচে তারে তাই আমাকে বলো । সাপড়ে উচ্চারণ করলে—‘ডুংশেচে”—তাই যেন আরো মিটি লাগলো । তার পরেই রোদ পড়ল। কুঠীর মাঠে বন ঝোপের ধারে কেলেকোঁড়ার লতায় ফুলের সুগন্ধে বৈকালের বাতাস ভারাক্লান্ত । তারই মধ্যে কতক্ষণ বসে রইলাম, বেড়াল মু। ছেলেমানুষের মত প্রকাণ্ড মাঠটার এদিকে ওদিকে ছাটোছুটি করে বেড়িয়ে আবার যেন বাল্যের আমোদ ফিরিয়ে পেলাম । ভাগ্যে ওদিকে কেউ লোকজন থাকে না তাহলে আমাকে হয়তো ভাবতো পাগল । পল্লীপ্রান্তের বনশোভা ও বনপল্পের সবাস আর এবারকার অপ্রতিহত পরিপািণ তপ্ত সষ*্যালোক—তার ওপর সব সময়ের জন্যে মাথার ওপরকার ঘন নীল আকাশ—আমাকে একেবারে মগধ করে দিয়েচে । দিনরাত এই মুক্ত প্রকৃতির মধ্যে বাস করেও যেন আমার আশ মেটে না—রাত্রির নক্ষত্ররাজি কি জলজন্লে, কত রকমের, দিকবিদিকে কতদরে ছড়ানো । বেজায় শীত পড়লো শেষ রাত্রে । অকালে নদীর ঘাট থেকে ফিরচি, আমাদের ঘাটের পথে গাবতলায় সাত-আটখানা বড় বড় মাকড়সার জাল পাতা । রোদ পড়ে বিচিত্র ইন্দ্ৰধনর রং-এর সটি করেচে। আমগাছের এডালে ওড়ালে টানা বেধে উচুতে নিচুতে কেমন জাল বলনেচে । প্রত্যেক জালেতে গোটাকতক মশা মরে রয়েচে । একটা মাকড়সা জাল গুটিয়ে একটা মাত্র টানা সতোতে পষ*্যবসিত করলে—সেই সাতোটা বেয়ে ছোট্ট মাকড়সাটা গাবগাছের ডালে উঠে গেল । বনে বনে এই সব দেখে বেড়ালেও কত শিক্ষা হয়। আমাদের দেশে কত ফুল, ফল, দামী ঝোপঝাপ, কীট পতঙ্গ । এদের জীবনের ইতিহাস আলোচনা করলে যে আনন্দ পাওয়া যায়—একরাশ প্রাণী-বিজ্ঞানের বই ঘটিলেও তা হয় না । “We live too much in books and not enough in nature, and we are very like that simpleton of a Pliner the younger who went on studying a Greek author while before his very eyes Vesuvius was overwhelming fine cities beneath the ashes.” তারপর কতক্ষণ দাপরে মানুষের বাড়ি ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার নিমন্ত্রণে গিয়ে ওদের সঙ্গে বসে গল্প করলাম। কে বলেছিল ‘অন্ধ নাচার বাবা ক্ষুদ খুব উৎসাহের সঙ্গে সে গল্প করলে । আমি বনপথ দিয়ে তালঘাট গেলাম । সেখানে নিরাপদদের বাড়ি চা খেয়ে কতক্ষণ গল্প করি। নিরাপদ এক অদ্ভুত লোক । সে বলে নাকি ভুত দেখে। মাঠে-ঘাটে সর্বদাই