আরণ্যক SSX সত্যি, কি খুনী ও গর্কের হাসি দেখিলাম ওর মুখে ! ওর সভ্য বোনেদের মত ও মনের ভাৰ গোপন করিতে তো শেখে নাই, একটি অনুলি নির্ভেজাল নারী-আত্মা ওর এই সব সামান্ত জিনিসের অধিকারের উজ্জ্বলিত আনদের ভিতর দিয়া আত্মপ্রকাশ করিতেছে। আমিনের এমন স্বচ্ছ প্রকাশ দেখিবার সুযোগ আমাদের সভ্য-সমাজে বড় একটা ঘটে না। —বলুন দিকি কেমন জিনিস ? —চমৎকার! —কত দাম হতে পারে এর বাবুজী ? কলকাতায় আপনার পরেন তো ? কলিকাতার আমি হিংলাজের মালা পরি না, আমরা কেহই পরি না তবুও আমার মনে হইল ইহার দাম খুব বেশী হইলেও ছ-আনার বেশী নয়। বলিলাম—কত নিয়েছে বল না ? —-সতের সের সর্ষে নিয়েছে। জিতি নি ? বলিয়া লাভ কি যে, সে ভীষণ ঠকিয়াছে। এ-সব জায়গায় এ রকম হইবেই! কেন মিথ্যা আমি নকৃছেদীর কাছে বকুনি খাওয়াইয়া ওর মনের এ অপূৰ্ব্ব আহলাদ নষ্ট করিতে যাইব । আমারই অনভিজ্ঞতার ফলে এ বছর এমন হইতে পারিয়াছে। আমার উচিত ছিল ফিরিওরালাদের জিনিসপত্রের দরের উপরে কড়া নজর রাখা। কিন্তু আমি নতুন লোক এখানে, কি করিয়া জানিব এদেশের ব্যাপার ? ফসল মাড়িবার সময় মেলা হয় তাহাই তো জানিতাম না। আগামী বৎসর যাহাতে এমনধারা না ঘটে, তাহার ব্যবস্থা করিতে হইবে। পরদিন সকালে নক্ছেদী তাহার দুই-স্ত্রী ও পুত্র-কন্যা লইয়া এখান হইতে চলিয়া গেল। যাইবার পূৰ্ব্বে আমার খুপড়িতে নকৃছেদী খাজনা দিতে আসিল, সঙ্গে আসিল মঞ্চী। মঞ্চী গলায় সেই হিংলাজের মালাছড়াটি পরিয়া আসিয়াছে। হাসিমুখে,"ল—আবার আসব ভাদ্র মাসে মকাই কাটতে। তখন থাকবেন তো বাবুজী ? আমরা না হওঁকির আচার করি শ্রাবণ মাসে—আপনার জয়ে আনব ! মন্ধীকে বড় ভাল লাগিয়াছিল, চলিয়া গেলে দুঃখিত হইলাম।
