পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৬২ বিভূতি-রচনাবলী চেয়ে দেখে—বোধ হয় আমার মুখের ভাব দেখে বোঝবার চেষ্টা করে আমি তার তর্কের ক্ষমতা, পাণ্ডিত্য ও যুক্তির সারবত্তা সম্বন্ধে কি ভাবচি। আমি বললাম, এখানে কত দেয় আপনাকে ? —উনত্রিশ টাকা। এখন একরকম কুলিয়ে যায়, দাদার বাসাতে থাকি। কিন্তু দাদা বদলি হয়ে গেলে তখন মুশকিল হবে। আমার বাড়ীতে কিছু না দিলে তো চলবেই ন— —কেন, আপনার দাদীরা রয়েচেন ? আমার আপনার দাদা কেউ নেই। ওরা সব খুড়তুতো—জোঠতুতে ভাই। আমার বাবা অন্ধ, আমি তার একমাত্র ছেলে, আর একটি বোন, আমার ছোট, তার এখনও বিয়ে হয়নি। দাদারা সব যে যার পৃথক। এক বাড়ীতে থাকলেও এক অন্নে নেই। ও বললে—আমার ছেলেবেলা থেকে সাধ যে, আমার লেখা কাগজে বেরোয় । যখন বড় বড লেখকের লেখা দেখতাম, আমার ইচ্ছে হত একদিন আমিও এই রকম লিখব। আমার এক ক্লাসক্রেও ছিল কাস্তি বসু-কলকাতায় তার সঙ্গে দেখা এই মাঘ মাসে। আমায় দেখালে “ভারতবর্ষে” তার একটা গল্প বেরিয়েছে। মনে মনে বললুম, বা রে । আমার এমন কষ্ট হ’ল, ওরা সব লেখক হ’য়ে গেল, ওদের লেখা ছাপা হচ্ছে, কত লোক পড়ছে, ভাবুন—কত নাম বেরুবে । সে খানিকক্ষণ জানালার বাইরে আকাশের দিকে কেমন একটা মুগ্ধ-আকুল দৃষ্টিতে চেয়ে রইল, তারপর চোখ নামিয়ে বিষন্ন মুখে বললে—আর আমার কিছুই হ’ল না । ওর আন্তরিকতা ও আগ্রহ আমার বড় ভালো লাগল। একটু অন্ত ধরনের ছেলে বটে —হয়তো বা একটু মাথা খারাপ আছে। ও যতক্ষণ বসেচে, আমি কেবল লক্ষ্য করচি ওর মুখের ভাবের নানা রকম পরিবর্তন। নির্ভরতা, ভয়, শ্রদ্ধা, আশা, আগ্রহ, স্বপ্ন, বিষ্ণতা, বিভিন্ন ভাব ওর মুখে কেমন চমৎকার ফুটে ওঠে। খুব সাধারণ ধরনের লোকের এ রকম হয় না। পাথর-গড মুখের মতো তাদের মুখ হয়—দৃঢ়, অপরিবর্তনীয়—ভাব-প্রবণতার বালাই তাদের নেই। ওকে উৎসাহ দেবার জন্তে বললাম—আপনি এর পরে নিশ্চয়ই ভালো লিখতে পারবেন। এরই মধ্যে বেশ লেখা বেরিয়েচে আপনার হাত থেকে। এখন আপনার তে বয়েস কম, সারা জীবন পড়ে রয়েছে আপনার সামনে—আমার তো মনে হয়, কালে আপনি একজন ভালো লেখক হবেন—আপনার লেখা পড়ে আমরা এক সময় আনন্দ পাব । ছোকয় সলজ্জ হাসিমুখে আমার দিক চেয়ে বললে—কি যে বলেন । আপনার আনন্দ পাবেন আমার লেখা থেকে “আচ্ছা, আপনার মনে হয় সত্যি আমার কিছু হবে ? —কেন হবে না ? না হবার তো কিছু দেখলুম না—খুব হবে। —কাস্তি বস্তু আমারই ক্লাসক্রেও, আমারই মতো বয়েস—ও এরই মধ্যে নাম করে ८क्रगदछ । श्रांछ्, नांय कब्राउ रुङनिन यांब्र ? नांभ कब्रवांद्र निब्रय क् ि? আমার দুপুরের বিশ্রামটুকু একেবারেই মাটি হ’ল দেখছি। কি করব উপায় নেই— একে দু’চার কথায় বিদায় দেব ভেবেছিলুম, কিন্তু এর কথা ক্রমশঃ বেড়েই চলেছে, আবার