পাতা:বিভূতি রচনাবলী (পঞ্চম খণ্ড).djvu/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

84や বিভূতি-রচনাবলী —কোনো ভয় নেই। দোকানের কোলে জিনিস নেই। জলযোগ-সেরে আমরা রাজবাড়ী দেখতে গেলাম। এমন খুব বড় বাড়ী নয়, বাংলাদেশের গ্রাম্য জমিদার-বাড়ীর মত সাদাসিয়ে, আড়ম্বরপূক্ত। আমরা দরবার-হলে নীত হলাম। এই হলের চারিদিকে দেওয়ালে রাজপরিবারের ব্যক্তিগণের বড় ছোট তৈলচিত্র, একপ্রাস্তে থিয়েটারের স্টেজ। এই সেরাইকেলার রাজপরিবার নৃত্যশিল্পের উৎসাহী পৃষ্ঠপোষক, এরা অনেকে বিখ্যাত মৃত্যশিল্পী। মহাত্মা গান্ধীর সামনে এম্পায়ার থিয়েটারে যে ছৌ-নৃত্য প্রদর্শিত হয়েছিল, তার একটা বড় ফটোগ্রাফ দেখলাম এখানে। পাতিয়ালার রাজবংশের সঙ্গে সেরাইকেলার বৈবাহিক সম্বন্ধে আবদ্ধ। এ বিখ্যাত ঘটনা যেদিন ঘটেছিল, সেদিন আমি, পরিমল গোস্বামী, বঙ্গভ্র'র সহকারী সম্পাদকৃ.কিরণবাবু ও বন্ধুবর প্রমোদ দাশগুপ্ত ৰাচ্ছিলাম সম্ভুপুর জেলার দুর্গম পৰ্ব্বতারণ্যের অভ্যন্তৰে বিক্রমসোল নামক স্থানের অজান শিলালিপির সন্ধানে। সিনি জংসনে আমরা এই বিয়ের জনসমাগম ও শোভাযাত্ৰ দেখি । সেহোল ৯৩৩ সালেরক্ষ মাসের কথা | বারুবাড়ী শ্ৰেীক বেরিয়ে আমরা স্থানীয় মিউজিয়ম দেখতে গেলাম - এটি বিশেষ করে এই রাজ্যে ষে সব খনিজ দ্রব্য পাওয়া যায়, তারই মিউজিয়ম। মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার বাৰু হরিদাস মহান্তি আমাদের সে সব দ্রব্য বিশেষ করে দেখালেন। খনিজ এ্যালবেস্টোস এখানে প্রথম দেখলুম একটা কাচের আলমারির মধ্যে। বললুম-এটা কি জিনিস ? কিসের স্থতো ? কারণ একগোছা সরুরৌপ্যসূত্রের মত দেখতে জিনিসটা । হরিদাসবাৰু বললেন-ও হোল এ্যালবেস্টোস। খনি থেকে ওঠানে অবস্থায় । আরও নানা ধাতু দেখলাম বিভিন্ন কাচের আলমারীতে। বিকেলের দিকে আমরা সেরাইকেল থেকে বীর হই। আমাদের গাড়ীতে এক হাড়ি খাবার তুলে দিলেন এর । আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলুম আসবার সময় পথের ধারে যে সব শৈলমাল দেখে এসেচি, ওদের মধ্যে কোনোটার ওপর বসে নিকৃপিকৃ—কিংবা— নিকৃপিকৃই হয়ে গেল ঠিক। আমাদের মধ্যে তর্ক বাধলে । কেউ বলে, “এই পাহাড়টা ভালো—” কেউ বলে "ওটা ভালো ।* অবশেষে বন্ধুবর পরেশ সাম্যাল একটি পাহাড় দেখিয়ে বললেন,—“দেখুন এটাই সব চেয়ে ভাল হবে i* বড় স্বন্দর পাহাড়টি, বড় চমৎকার সেই বিস্তৃত প্রাস্তর—ঠিক যেন ফিল্মে দেখা আরিজোনার সেই ‘পেইণ্টেণ্ড, ডেজার্ট’। তখন বেলা পড়ে এসেছে। আমরা আছুচ্চ পাহাড়টিতে উঠলাম, ওর সমতল শিখরদেশে আমরা শতরঞ্জি পেতে বসলাম। আমাদের চারিদিকে অস্থা, রুক্ষ, অমুর্বর অসংখ্য