পাতা:বিভূতি রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).djvu/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5 ዓå দৃষ্টি-মাখিানো একজোড়া চোখ-আর অনেক দূরে কোথায় যেন মা আর তাহার চাল-জাজা the gris s: পরীক্ষণেই কিন্তু অত্যধিক ভয়ে তাহার এক ৰূপ মরীয়া সাহস যোগাইল, একটা অস্পষ্ট আৰ্ত্তীরব করিয়া প্রাণভয়ে দিশহারা অবস্থায় সে সম্মুখের ভাট, শেওড়া, রাংচিতর জঙ্গল ভাঙিয়া • ডিঙাইয়া সন্ধ্যার আসন্ন অন্ধকারে যেদিকে দুই চোখ যায় ছুটিল-নীলুও ছুটিল তাহার পিছনে fit or ইহাদের ভয়ের কারণ কি বুঝিতে না পারিয়া, বুড়ী তাবিল-পুঁই মাত্তিও ঘাইনি, ধত্ত্বিও ঘাইনি-কঁচা ছেলে, কি জানি মেরে দেখে কেন ভয় পালে সন্দেকোলা ? খোকান্ডা কাদেৱ ? অপু যখন বাড়ী আসিল, তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়া গিয়াছে। সৰ্ব্বজয়া সবে উচ্চন ধরাইয়া তালের বড় ভাজিবার আয়োজন করিতেছে, দুর্গ নিকটে বসিয়া তাল টাচিয়া ব্লস বাহির করিতেছে--ছেলেকে দেখিয়া বলিল-কোথায় ছিলি বলদিকি ? সেই বেরিওচো বিকেলবেলা, কিছুই তো আজ খাবার খেলিনৌ-খিদোতেটা পায় না ? মায়ের নিকট বলিবার জিনিস অপুর মনে স্থূপীকার হইয়া সকলেই একসঙ্গে বাহিরে আলিবার জন্য এরূপভাবে চেষ্টা পাইতেছিল যে, পরস্পরের ঠেলা ঠেলিতে পরম্পরের নির্গমপথ এককালীন রুদ্ধ হইয়া গিয়া অপুকে একেবারে নির্বাক করিয়া দিল। সে শুধু বলিল-আমি কি কাপড় ছাড়বো মা ? আমার এখানা ওবেলার কাপড় পরে সে বিস্ময়ের সহিত দেখিল যে, মা তাহাকে চালভাজা দিবার কোন আগ্রহই না দেখাইয়া তালের রসটা ঘন না পাতলা হইয়াছে, ওহাই অত্যক্ত মনোযোগের সহিত পরীক্ষা করিতেছে। পরীক্ষা শেষ হুইয়া গেলে দুৰ্গাকে বলিল-দু’চারখানা ভেজে দেখি, না হয়, বড় তক্তপোশের নীচেটার চালের গুড়ো আছে, আর ফুটো নিয়ে আসিস এখন-পয়ে ছেলের দিকে চাহিয়া বলিল-দাড়া অপু, তোকে গরম গরম তেজে দিচ্ছি। অপু বলিল-কেন মা, চাল-ছোলা ভাজা কৈ ? --তা চাল ভাজা তুই খেলি কৈ ? এতবার ভাকুলাম, তুই বেরিয়ে চলে গেলি-ঠাণ্ডা হয়ে গেল, দুৰ্গা খেয়ে ফেল্পে, তা এই বড় তো হয়ে গেল বলে। ভাজবো আর দেবেী— অপু সেই বৈকালবেলা হইতে মনের মধ্যে যে তাঁসের ঘর নির্মাণ করিতেছিল, এক ফুয়ে কে তাহা একেবারে ভূমিসাৎ করিয়া দিল । এই তাঁহার মা তাহাকে তালবালে! সে বৈকালবেল বাটীর বাইয়ে যাওয়ার পর হইতে অনবরত ভাবিতেছে-মা না জানি কত দুঃখই করিতেছে তাহার জন্য ! অপু আমার এখনও কেন ষে এলো না, তার জন্যে এত ক’রে ঘাট থেকে এসে ভাজা ভাঁজলাম, আহা সে দুটো খেলে শ-ই, দায় পড়িয়াছে, তাহার জন্তু ভাবিয়া তো মায়ের ঘুম নাই-মা দিব্যি সেগুলি দিদিকে খাওয়াইয়া দিয়া নিশ্চিন্তু হইয়া বলিয়া