পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(2ぐり বিভূতি-রচনাবলী মূড়ো নিজে খায়,—পরকে দেয়—তোমার তা দেখবার দরকার কি ? তুমি কিছু বোল না আজি আর ওকে । পদ্ম ঝি কুমড়ার ব্যাপার লইয়। কিছু অপ্রস্তুত হইয়া পড়িয়াছিল—নতুবা সে রতনের কথা এত সহজে রাখিত না । বলিল—তাহ’লে বারণ করে দিও ওকে—বারদিগর যেন এমন আর না করে । তাহলে আমি অনথ বাধাবো—কারোর কথা শুনবো না । 源 সে রাত্রে হোটেলের কাজকৰ্ম্ম চুকাইয়া হাজারি চূণীর ধারে বেড়াইতে গেল। দিব্য জ্যোৎস্না-রাত—প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে । আজ কি সৰ্ব্বনাশই আর একটু হইলে হইয়াছিল! তাহার নিজের জন্য সে ভাবে না, ভাবে কুসুমের জন্য । কুষম পাড়াগায়ের মেয়ে—সেখানে তার বদনাম রটিলে উভয়েরই সেখানে মুখ দেখানে চলিবে না। আর তাহার এই বয়সে এই বদনাম রটিলে লোকেই বা বলিবে কি ? কুমমকে সে মেয়ের মত দেখে—ভগবান জানেন । ওসব খেয়াল তাহার থাকিলে এই রাণাঘাট শহরে সে কত মেয়ে জুটাইতে পারিত । এই রাধাবল্লভতলার মাটি ছুইয়া সে বলিতে পারে জীবনে কোনদিন ওসব খেয়াল তার নাই । বিশেষত: কৃম্ম । ছিঃ ছিঃ –টেপির সঙ্গে ধাহাকে সে অভিন্ন দেখে না—তাহার সম্বন্ধে রতন ঠাকুরের কাছে পদ্ম ঝি যে সব বিশ্ৰী কথা বলিয়াছে শুনিলে কানে আঙুল দিতে হয়। রাত প্রায় দেডট বাজিয়া গেল। শহর নিযুতি হইয়া গিয়াছে, কেবল কুণ্ডুদের চুণার ধারের কাঠের আড়তে হিন্দুস্থানী কুলীর ঢোলক বাজাইয়। বিকট চিৎকার শুরু করিয়াছে— ওই উহাদের নাকি গান ! যখন নর্থবেঙ্গল এক্সপ্রেস আসিয়া দাড়ায় স্টেশনে তখন সে হোটেল হইতে বাহির হইয়াছে—আর এখন স্টেশন পর্য্যস্ত নিস্তব্ধ হইয়া গিয়াছে, কারণ এত রাত্রে কোনো ট্রেন আসে না। রাত চারটা হইতে আবার ট্রেন চলাচল শুরু হইবে। হোটেলের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করিয়া মতি চাকরের ঘুম ভাঙাইতে তাহার প্রবৃত্তি হইল না। বড় গরম—স্টেশনের প্ল্যাটফৰ্ম্মে ন হয় বাকী রাতটুকু কাটাইয়া দেওয়া যাক । আজ রাত্রে ঘুম আমিতেছে না চোখে । ভোরে উঠিয়া হোটেলের সামনে আসিয়া হাজারি দেখিল হোটেলের দরজা এখনও বন্ধ । সে একটু আশ্চৰ্য্য হইল । মতি চাকর তো অনেকক্ষণ উঠিয়া অন্যদিন দরজা খোলে। ডাকডাকি করিয়া ও কাহারো সাড়া পাওয়া গেল না—তারপর গদির ঘরের জানালা দিয়া ঘরের মধ্যে উকি মারিয়া দেখিতে গিয়া হাজারি লক্ষ্য করিল—বাসনের ঘরের মধ্যে অত আলো কেন ? t ঘুরিয়া আসিয়া দেখিল বাসনের ঘরের দরজা খোলা। ঘরের মধ্যে কেহই নাই। মতি চাকরের ও সাড়াশব্দ নাই কোনদিকে । এরকম তো কখনো হয় না । এমন সময় যদু বাড়য্যের হোটেলের চাকর নিমাই গয়লাপাড়া হইতে চায়ের দুধ লইয়া ফিরিতেছে দেখা গেল—ঘন্ধু বাড়,য্যের হোটেলে একটা চায়ের স্টলও আছে—খুব সকাল