পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

88Ե বিভূতি-রচনাবলী —তোমার ভাই তাতে চটল বুঝি ? —উ, ভারি রাগ তাতে, বলে বাংগালি বাবুকে কেন নিয়ে এলি তুই ? আমিও বলেছি —ওর আসা পছন্দ না কর চলে যাও ; আমার বাড়ী, আমি যা ভাল বুঝব করব। তাই চলে গেল। এখন উনি ছাড়া আর আমার কে আছে বাবুঙ্গী ! মণিয়ার চোখ দুটি ছলছল করিয়া উঠিল। মেয়েটি সত্যবাদিনী, তাহার স্পষ্ট সত্য কথা বলিবার সাহস দেখিয়া প্রীত হইলাম। অন্ত কথা পাড়িবার জন্ত বলিলাম—গান গাইতে পার মণিয়া ? মণিয়া সলজকণ্ঠে বলিল—বেশী কিছু না বাবুজী, বহুৎ একটু— —গাইবে ! গাও না ? মণিয়া কি বুঝিল জানি না, বিস্ময়ের দৃষ্টিতে আমার দিকে চাহিয়া প্রতিবাদের স্বরে বলিল—বাবুজী— আমি মণিয়ার সহিত প্রেম করিতে চাহি নাই। মণিয়া আমাকে ভুল বুঝিয়। বসিল। সেভাবে কথাটা বলি নাই আমি । বলিলাম—এখন না হয়, সদ্ধ্যের সময় করে। ললিতবাবু যদি বলেন—তাহলে গাইবে ? অতিথির প্রতি উহার কর্তব্যবোধ ও তন্ত্রতা বড়ঘরের ঘরানার উপযুক্ত বটে। কি স্বন্দরী দেখাইতেছে মণিয়াকে । উহাকে দেখিলেই আমার মনে হয় ও সেকালের মেয়ে, সেকালের বেশভূষায়, প্রাচীন উষ্ঠানের বনস্পতিদের পটভূমিতেই ওকে মানায়, অন্যত্র ও নিত্যস্ত খাপছাড়া। বেলা পড়িয়া আসিতেছে, প্রাচীন বটের ডালে ডাহুক ডাকিতেছে, ললিতবাবুর ঘুম ভাঙিবার সময় হইল। বলিলfম—চলো মণিয়া, চারটে বাজে – সন্ধ্যার পর ললিতবাবুকে বলিয়া মণিয়াকে গান গাওয়াইলাম। ওর এমনি খুব স্বরেলা গল, তবে বিহারী দেশওয়ালী গ্রাম্যম্বরের গানই বেশী জানে। বেণীগাঁর ফুলবাড়ীতে বড় বড় গাছপালা, মেহগ্নি, কৃষ্ণচুড়া, চামেলির বন আমার চক্ষুর সম্মুখ হইতে মুছিয়া গেল গান শুনিতে শুনিতে—আমি যেন অতীত যুগের ভারতে ফিরিয়া গিয়াছি। বাণভট্ট কি শূদ্রক বা ওই ধরনের কোন কবির নায়িক জীবস্ত হইয়া যেন আমার সামনে বসিয়া স্বন্দর হাতটি নাড়িয়া বীণা বাজাইয়া অৰ্দ্ধমাগধী ভাষায় সঙ্গীত গাহিতেছে••• সেদিন জ্যোৎস্বারাত্রের আলোছায়ার মধ্যে মণিয়াকে দেখিয়া আমার মনে হইল, কবি বাণভট্ট সে যুগের ঠিক এমনি একটি স্বন্দরী মেয়েকে দেখিয়া তাহার কাব্যের মহাশ্বেতার কল্পনা করিয়া থাকিবেন—সমগ্র বৃদ্ধ পৃথিবীকে নবযৌবনের সাজে সাঙ্গাইবার মায়ামন্ত্র ঘে DBBB BBB BBB BBBBS DDDDDDD BBBBBBB BBKDS DBB BBB আমার বয়স কম ছিল বলিয়াই মণিয়াকে আমার অত ভাল লাগিয়াছিল। এখনও বিহার বা পশ্চিমের কথা মনে হইলেহ আমার মনের চোখে ভাসিয়া ওঠে বেণীগাঁর ফুলবাড়ী, তার প্রাচীন গাছপালা, চামেলি বন ও রূপসী মণিয়া ।