পাতা:বিভূতি রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড).djvu/৪৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেণীগীর ফুলবাড়ী BBS) মাস খানেক পরে । একদিন ললিতবাবু মুঙ্গেরে আমার বাসায় আসিলেন । তাহাকে দেখিয়া খুশী হইয়া বলিলাম, আম্বন, আম্বন ললিতবাবু, কখন এলেন ? ললিতবাবু কপালের ঘাম মুছিয়া বলিলেন—এই এলাম মশাই। দেশে যাচ্ছি। একটু বিস্মিত হইয়া বলিলাম, দেশে ? —ই্যা দেশে । ওখান থেকে চলে এলাম— —চলে এলেন । তার মানে ? মণিয়া কেমন আছে ? ললিতবাবু বাজের সহিত বলিলেন—ভালই আছে । আমার পোষালো না, চলে যাচ্ছি। —ব্যাপার কি ? হলো কি ? —হবে আর কি ? আমি কারো হাত-তোলা খেয়ে থাকতে পারব না । হয়েছে কি, আমার বাড়ীতে একটা সাড়ে এগারো টাকার রেভিনিউ মণিঅর্ডার পাঠাতে হবে, আজি কদিন ধরে চাচ্ছি টাকাটা । কবার চাইব ? আমার মান বলে একটা জিনিস আছে তো ? আজ দেব, কাল দেব, আজ ওবেলা নিয়ে এসেছে পাচটি টাকা । ছুড়ে ফেলে দিলাম । আরে, আমার বইয়ের এককালে তিন-তিনটে এডিশন হয়েছে, আমায় টাকা চেনাতে হবে না । ওর মা মাগী ছিল ভ্রষ্টা, ওদের কি ভদ্রস্থত আছে মশাই ? ভদ্রলোকের খাতির কি বোঝে ছাতুখোর মেডুয়াবাদীর দল ? ললিতবাবুর মুখের এ কথার কিছুদূর পর্য্যস্ত আমি প্রণয়ীর অভিমান বলিয়া ধরিয়া লইতে পারিতাম হয়তো, কিন্তু তাহার উক্তির সবটা এভাবে গ্রহণ করিতে পারিলাম না। তাহার চরিত্র ও মেজাজের উপর আমার অশ্রদ্ধা হইয়া গেল। টাকার জন্ত আমাকে পূৰ্ব্বে তিনি কি রকম উদ্ব্যস্ত করিয়া তুলিয়াছিলেন, ( কারণ র্তাহার পুস্তক প্রকাশের আসল উদ্বেগু সাহিত্যপ্রীতি নয়—টাক, তাহ অনেক দিন বুঝিয়াছি ) সে কথা মনে পড়িল । আমি বলিলাম—হয়তো মণিয়ার কাছে নেই, এ হতে পারে। —নেই তো কি মশাই, সাতটা টাকা আর নেই ? এর আগেও বাড়ীতে টাকা পাঠাবার বেলা এরকম করেছে। তাছাড়া ঠিক সে কথাও নয়, আমার আর ভাল লাগছে না এ ছাতুখোরের দেশ। দেশে গিয়ে মানকচু আর নলেনগুড়ের পায়েস খেয়ে ৰাচি দিনকতক । রাধতে পারে কেউ এদেশে ? যা রাধবে এক তরকারী, বেগুন বেগুনই এক তরকারী, পটল পটলই এক তরকারী—এ দেশে মাহৰ অাছে ? রামো:– বলিলাম-দেশে কে আছে আপনার ? —ভাইপো আছে, তাইপোর স্ত্রী আছে, তাদের ছেলে-মেয়েরা আছে, নেই কে ? তাদের ফেলে বিদেশে থাকা কি পোষায় এই বয়সে, বলুন তো ? দেশে থাকলে অভাব কি আমার ? এ ছাতুর দেশে আর না, ঢের হয়েছে, ইপিয়ে উঠেছে প্রাণ—ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাই। মনে ভাবিলাম জিজ্ঞাসা করি, দেশে থাকিলে যদি চলিবার ভাবনা নাই, তবে ভ্রাতুষ্পপুঞ্জটিকে هجمدسية .ية .fa