পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতি-রচনাবলী —সাহেব নাকি ওই নতুন টীচারের কথা খুব শুনছেন । —তাই মনে হয় স্যার। সেদিন জ্যোতিবিনোদকে দু দিন ছুটি দিলেন ওঁর স্বপারিশে। —কেন, কেন ? —জ্যোতিবিনোদের ভাগ্নীর বিয়ে । —জ্যোতিবিনোদের ক্যাজুয়াল লিভের হিসেবটা চেক করে কাল আমায় জানিও তো ! বুঝলে ? —বেশ, স্যার। —স্কুলে যা-তা হচ্চে, না ? - কেরানী চুপ করিয়া রহিল। কেরানী মহিষ, বড় টাচারের সামনে যা-ত বলিয়া কি শেষে বিপদে পড়িবে ? মিঃ আলম বলিলেন, তোমার কি মনে হয় ? —স্তার, আমরা চুনোপুটির দল, আমাদের কিছু म! বলাই ভাল। —নতুন টীচার বড় বাড়িয়েচে, না ? —হ । তবে একটা কথা— -कौ ? —স্তার, নতুন টীচার রামেন্দুবাবু কিন্তু লোকের অস্থবিধে বা উপকার এই ধরনের ছাড়া অন্য কথা নিয়ে সাহেবের কাছে যায় না। —তুমি কি করে জানলে ? —আমি জানি স্তার। সেই জন্যেই মাস্টারবাবুর ওর খুব বাধ্য হয়ে পড়েছেন। —থাক। তোমায় আর ব্যাখ্যা করতে হবে না। তুমি কাল জ্যোতিবিনোদের ক্যাজুয়াল লিভটা চেক করে আমায় জানাবে, কেমন তো ? —ধ্য স্তার, তা করে দেব। বলেন তো আজই দিই। —কালই দেবে। পরদিন হিসাব করিয়া ধরা পড়িল, জ্যোতির্বিবনোদের তিন দিন ছুটি বেশী লওয়া হইয়৷ গিয়াছে এ বছর। মিঃ আলম সাহেবের কাছে রিপোর্ট করিলেন। জ্যোতিবিনোদের তিন দিনের বেতন কাটা গেল। মিঃ আলম হাসিয়া নিজের দলের মাস্টারদের বলিলেন, লিডার হলেই হল না। সব দিকে দৃষ্টি রেখে তবে লিডার হতে হয়। স্কুলটাকে এবার উচ্ছন্ন দেবে আর কি! সাহেবেরও আজকাল হয়েচে যেমন! হেডপণ্ডিত ছুটিপ্রার্থী হইয়া সাহেবের টেবিলের সামনে দাড়াইয়াছেন! সাহেব মুখ তুলিয়া বলিলেন, হোয়াট পাণ্ডিটু ? —স্তার, কাল তালনবমী, টীচারেরা ও ছেলেরা ছুটি চাচ্ছে । -টালনব—হোয়াট ইজ ভাট পাত্তি ? নেভার হার্ড দি নেন। --স্যার, মস্ত বড় পরব হিন্দুর । দুর্গাপূজোর নিচেই—মস্ত পরব।