পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সন্ন্যাসীর চিঠি।
১৯

আর মেম সাহেবেরা একটু শিহরে উঠে বা অল্প দন্তরুচি-কৌমুদী বিস্তার করে। কেন না আমার রঙ ময়লা অর্থাৎ আমি উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ। লোকের ভিড় ঠেলে যাওয়া যায় কিন্তু নজরের ভিড়ে হাঁপিয়ে উঠিতে হয়। তবে রক্ষা যে বেশী বাড়াবাড়ি করে না—সামলে আঁতকে উঠে বা হাস্যরস ছড়ায়। কিন্তু বেশ বুঝা যায় যে আমি একটা তাদের কাছে রকমারি জিনিস। আমার পোযাক এখন মন্দ নয় কারণ শীতের জ্বালায় একটা পা পর্য্যন্ত লম্বা গরম কোট দিয়ে গেরুয়ার ঝক্‌মকানি ঢাকিতে হয়েছে। যখন কোন সভায় যাই তখন কোটটা খুলে রাখি। আমি মনে করেছিনু কেবল আমারই এই দুর্দ্দশা। তা নয়। আমার সব দেশী ভায়াকে নজর শিহরুণি আর মৃদুমন্দ হাসি সহিতে হয়। তবে ইংরেজের পুষ্যিপুত্তর সেজে হ্যাটকোট পরিলে―কতকটা গোঁজামিল দিয়ে বেঁচে যাওয়া যায়। কিন্তু একেবারে নিস্তার নাই। যদি রংটা খুব মটরডালবাটার মতন হয় আর খুব পুষ্যিপুত্তুরি করা হয়―তা হলে রেহাই পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু পোষাক যদি অন্যরকম কর—তা রেশমের জুব্বাই পর আর তাজই মাথায় দাও—একেবারে হৈ হৈ পোড়ে যাবে। অনেকে বোধ হয় জানেন না যে যেমন চিড়িয়াখানার জন্তু-জানোয়ারদিগকে খোঁচাখুঁচি থেকে বাঁচাবার জন্যে কাঠগড়ার ভিতরে রাখে তেমনি কোরে— অভিষেক উপলক্ষে সমাগত আমাদের দেশীয় সৈন্যদিগকে এখানে রাখিতে হোয়েছিল। তবে বড়মানুষি কোরে গাড়ি হাঁকিয়ে গেলে সাত খুন মাপ। ইংরেজ ঐশ্বর্য্যের কাছে পদানত। কিন্তু একবার আলাপ হোয়ে গেলে এখানকার লোকেরা অতি ভদ্রভাব ধারণ করে—হাসি টিট্‌কিরি সব ছেড়ে দেয়। কিন্তু যদি আবার একটু মনান্তর হয় ত অমনি blackie nigger, অর্থাৎ কালো সম্ভাষণটা অনেক সময় ইংরেজের মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। এখানে সব ভারতীয় ভায়ারা এই কালো রঙের উপর