পাতা:বিলাতযাত্রী সন্ন্যাসীর চিঠি - ব্রহ্মবান্ধব উপাধ্যায়.pdf/৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
 বিলাত-প্রবাসী

 সন্ন্যাসীর চিঠি

(৭)

বসন্তের সমাগম হয়েছে। শীতের প্রকোপ আর নাই। প্রকৃতি আবার নবজীবন পেয়েছে। ছ মাস ধোরে গাছগুলিতে একটিও পাতা ছিল না। উলঙ্গ ঊর্দ্ধ-বাহুর মত দাঁড়িয়েছিল। হটাৎ কে যেন নব কিসলয়-বসন পরিয়ে দিয়েছে। আর অনেক গাছে কেবল ফুল―পাতা এখনও দেখা দেয় নাই। এই ফুলের হাসি দেখে কালিদাসের কথা মনে পড়্‌ছে।―

কুসুমজন্ম ততোনবপল্লবা
স্তদনু ষট্‌ পদকোকিলকুজিতম্।
ইতি যথাক্রমমাবিরভূন্মধু
দ্রুমবতীমবতীর্য্য বনস্থলীম্।

প্রথমে কুসুম-জন্ম তারপর নবপল্লব তারপর ভ্রমর ও কোকিলের কুজন। এইরূপে বসন্ত আবির্ভূত হয়। বিলেতেও সেই কালিদাসের বসন্ত। এখানে পাখীর ডাক এত মিষ্টি লাগে যে মনে হয় যেন কাণে মধু ঢেলে দিচ্ছে। কার্ত্তিক মাস থেকে প্রায় চৈত্র সংক্রান্তি পর্য্যন্ত কিছু সাড়া শব্দ নাই তার পরে একেবারে ঝঙ্কারে চারিদিক পরিপূরিত—তাই বুঝি প্রাণটা এত কেড়ে নেয়। এমন তরু নাই যাতে বিহগ নাই এমন বিহগ নাই—যে কলধ্বনি করে না। এমন কলধ্বনি নাই—যাহা মুগ্ধ করে না। কি কপচান কি সীস―বিরহীর বাঁচা দায়। তবে আমার ভাগ্যগুণে বিরহ-জ্বালা নাই তাই