পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বংশ [ 0&Y J ংশ হইতে ১২ বৎসর অতিক্রম না করিলে স্থপঙ্ক ও কাটিবার উপযুক্ত হয় না। বঁাশ গাছ প্রধানতঃ যেরূপ কেঁাড় লইয়া অঙ্কুরিত হয়, পূর্ণমাত্রায় পরিবর্ধিত হইলেও উহার গোড়ার পরিসর প্রায় একরূপই থাকে। দণ্ডের দৈর্ঘ্যতার বৃদ্ধি সহকারে ব্যাস তেমন | স্থূলতর হয় না। বৎসরের পর বৎসর চলিয়া যায়, কিন্তু উহার দৈর্ঘ্যতার বা আয়তনের বিশেষ কোন তারতম্য লক্ষিত হয় না, কেবল উহার কাষ্ঠ পরিপক হইতে থাকে। নারিকেল, তাল, খর্জুরাদি বৃক্ষের যেরূপ ডালের চিহ্ন দেখিয়া বয়স নির্ণয় করা যায়, বাশ গাছের গ্রন্থি দৃষ্টে সেরূপ কোন কাল নির্দেশ করা যায় না। উহার পুষ্পোদগম বা বীজাধান দেখিয়া সাধারণে বয়স নির্ণয় করিয়া থাকে। মধ্যভারতের পাৰ্ব্বত্য প্রদেশেবাসী জাতির পাৰ্ব্বত্য বঁাশের বীজাধান দেখিয়া আপনাদের বয়স পর্য্যস্তু গণনা করিয়া থাকে। যে ব্যক্তি বঁাশের দুই “কাটঙ্গ” অর্থাৎ দুইবার বীজধান দর্শন করে, তাহার বয়স ৬০ বৎসরের रुभ श्य़ नीं । উপরে বঁাশের পুষ্পোদগমের বিষয় লিখিত হইয়াছে। সাধারণতঃ ২৫ হইতে ৩৫ বৎসরের মধ্যে বঁাশ গাছে ফুল ধরে । অনেক সময় ৪৪ বৎসর পরে ফুল হইতে দেখা যায়। সময় সময় বঁাশ গাছের বীজ হইতে চাউল পাওয়া যায়। ঐ চাউল অনেকে খাইয়া থাকে। আমাদের দেশে অনেকের বিশ্বাস, দুর্ভিক্ষ বা মহামারী উপস্থিত লইলে সাধারণতঃ বঁাশ গাছে চাউল জন্মে; কিন্তু বস্তুতঃ সে সংস্কার ভিত্তিহীন । ১৮৩৬ খৃষ্টাব্দের Trans, Agri Horti. Soc of India Vol III p. 139-43 গ্রন্থে লিখিত আছে যে, ঐ সময় নানা স্থানে বঁাশ গাছে চাউল দেখা গিয়াছিল,কিন্তু তখন কুত্ৰাপি দুর্ভিক্ষ ছিলনা। ক্ষেত্রাদিতেও অপৰ্যাপ্ত ধান্ত উৎপন্ন হইয়াছিল। ঐ সময়ে ক্ষেত্ৰজ তণ্ডুল ১২ টাকায় ১৬ সের এবং বংশজ তণ্ডুল ১২ টাকায় ২০ সের বিক্রীত হইয়াছিল। প্রত্যেক বঁাশ গাছে প্রায় ৪ সের হইতে ২০ সের পর্য্যন্ত তধুল উৎপন্ন হয়। যে গাছ যত বিচ্ছিন্নভাবে ও যত উর্বর ভূমিতে থাকে, তাহাতে ততই অধিক মাত্রায় চাউল পাওয়া যায়। চাউল উৎপন্ন হওয়া শেষ হইলেই গাছট আপন! আপনি শুকাইয়া আইসে,কিন্তু তাহার গোড়া হইতে পুনরায় কলা বাহির হয় এবং কখন কখন বীজ হইতেও বৃক্ষ উৎপন্ন করা হয় । পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করিয়াছি যে, মামুষে বাশের কোড়া ব্যঞ্জনাদিতে রাধিয়া অথবা আচার করিয়া থায়। গবাদি জন্তু বাশপাত খাইতে ভাল বাসে। গোরুর এসোরোগে বঁাশ পাতা বিশেষ উপকারী। ১৮১২ খৃষ্টাব্দের উড়িষ্যা-দুর্ভিক্ষে লক্ষ লক্ষ লোক বাঁশের চাল খাইয়া প্রাণ ধারণ করিয়াছিল । ১৮৬৫ খৃষ্টাব্দের মহামারীতে ধারবাড় ও বেলগাম-জেলাবাসী প্রায় ৫০ হাজার লোক কাণ ডায় আসিয়া বাশের লীজ সঞ্চয়পূৰ্ব্বক তাহার তখুলে প্রাণ ধারণ করিয়াছিল। ১৮৬৬ খৃষ্টাব্দে মালদহ জেলায় ১ টাকায় ১৩ সের বাশের চাউল বিক্রীত হইয়াছিল। ঐ সময় তথায় প্রতি টাকায় ১০ সের চাউল ছিল। দুর্ভিক্ষের দায়ে পড়িয় লোকে বাশের চাউলে উদপপুর্ণ করিতে বাধ্য হইলেও উহা বিশেষ সুখকর নহে। Ior Bidie বলেন, উহাতে অজীর্ণ ও উদরাময় রোগ জন্মে । বংশদণ্ডের অভ্যন্তরস্থিত ফাকের মধ্যে সময় সময় জs পাওয়া যায়। ঐ জল বিশেষ শৈতাগুণসম্পন্ন। বাযুরোগগ্রস্ত ব্যক্তিকে ঐ জল পান করাইলে বিশেষ উপকার দশে । বঁাশের উপকারিতা সম্বন্ধে খনার এইরূপ একটা বচন প্রচলিত আছে,— “পূবে হাস, পশ্চিমে বঁাশ • • • • । উত্তর বেড়ে, দক্ষিণ ছেড়ে, বাড়ী করগে ভেড়ের ভেড়ে।” অর্থাৎ পূৰ্ব্ব দিকে কুমুদকলোর পরিশোভিত হংস বিরাজিত পুষ্করিণী এবং পশ্চিমে বংশবন সমাচ্ছাদিত গৃহবাটিক গৃহস্তেব বিশেষ মঙ্গলপ্রদ । খাদ্যদ্রবারূপে ইহার উপযোগিতার বিষয় সাধারণে বিশেষভাবে গৃহীত না হইলেও, গৃহস্থের নানা কাজে ইহার ব্যবহার দেখিয লোকে বঁাশঝাড় রক্ষার ও পালনেব ব্যবস্থা কবিয়া আসিতেছে । সহরতলীর অন্তভূক্ত খাপ রেলের ঘরসমূহ এবং তদ্বর্হিভূত পল্লীপ্রদেশে উলু, গোলপাত, খড় প্রভৃতি দ্রব্যদ্বারা নিৰ্ম্মিত যে সকল চালা ঘর দেখা যায়, তৎসমুদায়ই বঁাশ, দড়ি, খড় ও কাদার সাহায্যে নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকে। এ সকল ঘরেব শট, রোয়, বাতা,টানা প্রভৃতি সকলই বাশের দ্বারা প্রস্তুত হয়। চাবি পাশ্বের দেওয়ালগুলিতে বাশের টাটী, চেটাই, অথবা হেঁচা বাশের কাচ বা চাচের বেড়া দেওয়া হয় । বাশের সরু গোলকাটা প্রস্বত করিয়া স্থতার দ্বারা বিনাইয়৷ ‘চিক্‌’ প্রস্তুত হয়। ঐ চিক দরজ জানাল প্রভৃতির সম্মুথে আবরকরূপে ব্যবহৃত হইয়া থাকে । বাস্তবিক পক্ষে একটা গৃহস্থ পরিবারের আবশ্যকীয় আসবাব প্রভৃতি সকল পদার্থই বাশ হইতে নিৰ্ম্মিত হয়। একটা করেণ পরিবারের গৃহের প্রতি লক্ষ্য করিলে, ইহার পরিস্ফুট চিত্র দৃষ্টিগোচর হইতে পারে। করেণগণ সপরিবারে অর্থাং ২০০ হইতে ৩০০ পৰ্য্যন্ত লোক একত্র একটী বাসভবনে থাকে। উহা একটী ক্ষুদ্র গ্রাম বলিলেও চলে। উহাধ সকলই বংশনিৰ্ম্মিত। বাশের মাচা বা পাটাতন কবিয়া তাহাতে শয্যাতল বিনিৰ্ম্মিত হয় । এতদ্ভিন্ন বংশখণ্ডে বসিবার