পাতা:বিশ্বকোষ ঊনবিংশ খণ্ড.djvu/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদেশ (ইংরাজ শাসন ) [ 8७० l বঙ্গদেশ (ইংরাজ-শাসন ) খৃষ্টাম্বে ২৯এ জানুয়ারী কলিকাতায় প্রথম সংবাদ পত্র মুদ্রিত হয় । হেষ্টিংসের শাসনকালে ১৭৭৪ খৃষ্টাব্দে মহারাজ ননীকুমারের ফণসী হয়। তাহার পর সুপ্রীমকোর্ট স্থাপিত হইলে ১৭৮৩ খৃষ্টাব্দে সর উইলিয়ম জোন্স প্রধান বিচারপতি হইয়া আইসেন। ১৭৮৪ খৃষ্টাব্দে তিনি ‘এসিয়াটিকৃ সোসাইটি অব বেঙ্গল’ নামক সভা স্থাপন করেন। উক্ত বর্ষে পার্লিয়ামেন্টের আদেশে 'বোর্ড অব, কণ্টে ল' স্থাপিত হয় । লর্ড কর্ণওয়ালিসের শাসনকালে ১৭৯০ খৃষ্টাব্দে সদর নিজামত পুনরায় কলিকাতায় আনীত হয় । ১৭৯৩ খৃষ্টাব্দে নির্দিষ্ট্র রাজস্ব আদায়ের জন্ত দশশালা বা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত র্তাহার সময়ের প্রধান ঘটনা। ঐ বর্ষে ইংরাজী লিখিত কতক গুলি ব্যবস্থা সংগৃহীত ও প্রচারিত হয় । মি: ফরেষ্টার তাহার বাঙ্গাল অম্বুবাদ করেন । লর্ড কর্ণওয়ালিস “কালেক্টারদিগের" হস্তে কেবলমাত্র রাজস্ব সংগ্রহের ভার দিয়াছিলেন । তিনি কাজি, মুফতি প্রভৃতির পরিবর্তে প্রতি জেলায় “জজ” নিযুক্ত করিয়া তাহাদিগের হস্তে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মোকদ্দমার বিচারভার অর্পণ করেন। ফৌজদারী কাৰ্য্যকালে মুসলমান ব্যবস্থানুসারেই বিচার কাৰ্য্য নিৰ্ব্বাহিত হইবে, এইজন্ত একজন মুসলমান কৰ্ম্মচারী জজদিগের সহকারী থাকিতেন । জেলার জজদিগের স্বারা নিম্পাদিত মোকদ্দমার আপিল শুনিবার নিমিত্ত কলিকতা, মুর্শিদাবাদ, ঢাকা এবং পাটনা নগরে চারিট “প্রভিন্সিয়াল কোর্ট” স্থাপিত হয়। ঐ প্রভিন্সিয়াল কোর্টের” উপরে সদর দেওয়ানী ও সদর নিজামত আদালত রহিল । দেওয়ালী মোকদ্দমার বিচারের জন্ত প্রতি জেলায় জজদিগের অধীনে এক এক জন রেজিষ্টার ও কএকজন মুনসেফ নিযুক্ত হইলেন। স্থানে স্থানে এক একটী থানা স্থাপিত হইল এবং এক এক জন দারোগ প্রত্যেক থানায় কর্তা হইলেন। ১৭৯৮ খৃষ্টাব্দে মাকুইস অব ওয়েলেসলি বাঙ্গলায় গবর্ণর জেনারল হন। ১৮০৩ খৃষ্টাব্দে মহারাষ্ট্ৰীয়ের সহিত সন্ধি অনুসারে কোম্পানী কটক প্রদেশ হস্তগত করেন । তদবধি উহা বাঙ্গালার অন্তর্ভুক্ত রহিয়াছে। র্তাহার সময় পৰ্য্যন্ত সদর দেওয়ানী ও সদর নিজামতের কাৰ্য্যভার সর্কে সিল গবর্ণর জেনােরলের হস্তে স্তস্ত ছিল। তাহাতে কাৰ্য্যের অসুবিধা ঘটে দেখিয়া ওয়েলেসলী তিন জন জজ নিযুক্ত কবেন। তঁtহাদের মধ্যে প্রথিতনামা ও বহুবিচাৰিশারদ কোলব্রুক একজন । ইংরাজ সিবিলিয়ানদিগকে দেশীয় ভাষা শিক্ষা দিবার নিমিত্ত লর্ড ওয়েলেসলী ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ স্থাপন করেন । এই উপলক্ষে তথাকার পাঠ্যরূপে কতকগুলি বাঙ্গালা পুস্তক রচিত হয় ; তন্মধ্যে রামরাম বাবুর প্রতাপাদিত্যচরিত ( ১৮০১ ) ও লিপিমালা ( ১৮০২ ), রাজীবলোচনের কৃষ্ণচন্দ্রচরিত, মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের রাজাবলী, কেরি সাহেবের বাঙ্গালা-ব্যাকরণ ও অভিধান উল্লেখযোগ্য। ১৭৯৯ খৃষ্টাৰে মিসনরি মালমান ও ওয়ার্ড প্রীরামপুরে আসিয়া অবস্থিতি করেন। তাহারা জয়গোপাল তর্কালঙ্কার দ্বারা সংশোধন করাইয়া ১৮০১ খৃষ্টাঙ্গে রামায়ণ ও পরে মহাভারত ছাপাইতে আরম্ভ করিয়াছিলেন । এই সময় হইতে প্রকৃতই বাঙ্গালী-সাহিত্যের আদর বাড়ীতে থাকে । ১৮০৭ খৃষ্টাব্দে লর্ড মিণ্টে গবর্ণর-জেনেরল হন । তাহার শাসনসময়ের শেষভাগে ( ১৮১৩ খৃঃ ) পালিয়ামেণ্ট প্রদত্ত সনন্দানুসারে এদেশে কোম্পানি একচেটিয়া বাণিজ্য রহিত হইয়া যায়, খৃষ্টান মিসনরিরা এ স্থানে ধৰ্ম্ম প্রচার করিতে অনুমতি পান ; সেইহেতু কলিকাতায় একজন বিশপ নিযুক্ত হন। এতদ্ভিন্ন কোম্পানির এদেশীয় প্রজাদিশ্নের বিষ্ঠাশিক্ষার জন্তু সরকারী রাজস্ব হইতে প্রতি বৎসর এক লক্ষ টাকা ব্যয় করিতে আদেশ হয় । লর্ড ময়রা বা মাকুইস অব হেষ্টিংস ১৮১৩ খৃঃ অব্দে গভর্ণর জেনারল হইয়া বাঙ্গালায় আইসেন। তাহার সময়ে নেপাল ও মহারাষ্ট্র যুদ্ধে ইংরাজের জয়ী হইয়াছিলেন। এই সময়ে কতিপয় দেশীয় সম্রাস্ত ব্যক্তির যত্নে ও ব্যয়ে কলিকাতায় “হিন্দু কলেজ” স্থাপিত হয় এবং তঁহারই উৎসাহ পাইয়া ঐরামপুরের মিসনরিগণ “সমাচার-দৰ্পণ” নামে প্রথম বাঙ্গালা সংবাদপত্র মুদ্রিত করেন । ( ২৩ মে ১৮১৮ খু: ) । ১৮২৪ খৃঃ অব্দের আগষ্ট মাসে লর্ড আমহাষ্ট্র গবর্ণর জেনােরল হইয়া কলিকাতায় আসেন। তাহার সময়ে ব্রহ্ম যুদ্ধে কোম্পানির রাজ্য বৃদ্ধি এবং ভরতপুরের প্রসিদ্ধ কেল্লা ইংরাজদিগের হস্তগত হয়। এই সময়ে কলিকাতায় ‘সংস্কৃত কলেজ’ স্থাপন বিষয়ে সংস্কৃতভাযাবিং অধ্যাপক প্রবর উইলসন সাহেব বিশেষ উদ্যোগী হইয়াছিলেন। লর্ড আমহাষ্ট ১৮২৭ খৃষ্টাৰে পশ্চিমে যাইয় দিল্লীর বাদশাহকে বলিলেন যে, কোম্পানিই বাস্তবিক এদেশের সম্রাট । ১৮২৮ খৃঃ অব্দে লর্ড উইলিয়ম বেষ্টিৰ গভর্ণরজেনারল হন। তিনি সহমরণপ্রথা রহিত করেন। রাজা রামমোহন রায়, দ্বারকানাথ ঠাকুর, রায় কালীনাথ মুক্সি প্রভৃতি এতদেশীয় অনেক সুশিক্ষিত ভদ্রসস্তান এই মহৎ কর্ঘ্যে তাহার সহায়তা করিয়া ছিলেন। তখন এদেশে ঠগ নামে একটী ডাকাইতের দল ছিল। তাহারা ভদ্রবেশে গমনাগমন ক্ষরিত এবং সুযোগমতে সহয়ত্রী