পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাবিংশ খণ্ড.djvu/২০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

 

সোরা
[১৯৭]
সোরা

সোরা (পারসী) পৃথিবীর নানা অংশে, প্রধানতঃ ভারতবর্ষ, দক্ষিণ আমেরিকা, স্পেন, পারস্য, হাঙ্গেরী প্রভৃতি স্থানে স্বাভাবিক অবস্থায় নানা জাতীয় যে সকল লবণ পাওয়া যায়, সাধারণতঃ তাহাদিগকে ( Saltpetre ) এই আখ্যা প্রদান করা হইয়া থাকে। চিনিতে যে সোরা পাওয়া যায়, তাহার প্রধান উপাদান সোডিয়াম্। ঘোড়ার আস্তাবলের প্রাচীরে অনেক সময় চুণা-সোডা ( Mine-Saltpetere ) দেখিতে পাওয়া যায়। ভারতবর্ষের নানা স্থানে পোটাসিয়াম্ সোরা বা যবক্ষার মিশিয়া থাকে। ইহা মৃত্তিকার উপর পুষ্পাকারে বা মৃত্তিকার প্রথম স্তরের সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় এবং তামাক, সূর্যমুখী প্রভৃতি চারা গাছে, কোন কোন সচ্ছিদ্র পাহাড়ে এবং বৃষ্টি ও ঝরণার জলে দেখিতে পাওয়া যায়। ক্ষার প্রস্তুতের প্রণালী দ্বারা কৃত্রিম উপায়েও সোরা প্রস্তুত হইয়া থাকে। এতদ্ব্যতীত সিংহল, টেনেরিক্, কেণ্টু কি প্রভৃতি স্থানের যে সকল গিরিগুহায় পক্ষী এবং অন্যান্য প্রাণীরা যাইয়া বাস করিয়া থাকে, সে সকল গুহায়ও সোরা দেখিতে পাওয়া ধায়। শীতল জলে ইহা অতি অল্প পরিমাণে গলিয়া থাকে, কিন্তু উষ্ণ জলে ইহা বেশ গলিয়া যায়। সাধারণতঃ ইহা পাতলা, সাদা, ভঙ্গুর ও অৰ্দ্ধস্বচ্ছখও অবস্থায় পাওরা যায়।

 স্বাভাবিক সোরা নানা অবস্থায় থাকে । কিন্তু সকল অবস্থার সোরাতেই জৈব পদার্থের (Organic matter) প্রভাব বিদ্যমান আছে বলিয়। মনে হয় । গঙ্গার জলপ্লাবনের ফলে যে এ টেল মাটি সঞ্চিত হয়, তাহাতে ইহা যথেষ্ট পরিমাণে °i{3प्रl शृjच्न ! ভারতবর্ষের বাজারে যে সোর দেখিতে পাওয়া যায়, সাধারণতঃ তাহ বেহার এবং উত্তরপশ্চিম প্রদেশের কোন জেলা,পঞ্জাব, বোম্বাছ, মাদ্রাজ এবং ব্রহ্মদেশ হইতে সংগৃহীত হইরা থাকে। বারুদ আবিষ্কৃত হইবার পূৰ্ব্বে সোরাসংগ্রহের দিকে ভারতবাসী তেমন মনঃসংযোগ কয়ে নাই। কিন্তু যখন বারুদ আবিস্কৃত হইল এবং ইহা প্রস্তুত করিবার জন্ত যবক্ষার ( Nitre ) এড় বেশ আবগুক হইয় পড়িল, তখন হইতেই সোরাসংগ্রহের ধূম পড়িয় গেল। ইeায় পূৰ্ব্বে সোরার প্ররোজনীরতা যে বড় বিশেষ উপলব্ধি হইয়াছিল, এমন মনে হয় না । সংস্কৃত সাহিত্যে এই পদার্থটার নাম পৰ্য্যন্তও পাওয়া যায়ন । সোরা সম্বন্ধে লিখিতে বসিয়৷ ডাঃ উদয়টাদ দত্ত মহাশয় তাহার ( Materia Medica of the Hindus) arov asco vn làso qā'i of Taizon, “সোরা সম্বন্ধে প্রাচীন হিন্দুগণ কিছুই জানিতেন না। সংস্কৃতে ইহার কোন সৰ্ব্বসন্মত নাম পাওরা যায় না। ভাব প্রকাশে লিথিত ইহয়াছে যে, "সুবর্চিকা সর্জিক” বিশেষ । চলিত ভাষায় ইহাকে সেরা বলিল্প থাকে । কিন্তু যে সকল অভিধান প্রানাণ্য বলিয়া}}


গৃহীত হইয়া আসিতেছে, তাহাতে ‘স্ববর্চিকা" ও "সর্জিক' একই পদার্থের দুই বিভিন্ন নাম বলিয়া ধরা হইয়াছে। যবক্ষার সম্বলিত ধাতব অম্লের ( Mineral acids ) প্রস্তুত করণ সম্বন্ধে কতকআধুনিক সংস্কৃত স্বত্র আছে । ঐ গুলিতে এই লবণের নাম ‘সোর ক” বলির উল্লিখিত হইয়াছে। কিন্তু কোন প্রাচীন ংস্কৃত অভিধানেষ্ট এই ‘সোরক" শব্দ পাওয়া যার না । সস্তবতঃ দেশজ সোর শব্দটিকে সংস্কৃত করিয়া সোরক করা হইয়াছে । সোবক হইতে সোর শব্দেয় উৎপত্তি হয় নাক্ট, তাই মনে হয় যে, যবক্ষার প্রস্তুতপ্রণালীটা ভারতবর্ষের পক্ষে কতকট। আধুনিক। যখন যুদ্ধের জন্ত বারুদ ব্যবহৃত হইতে আরম্ভ হয়, তখন হষ্টতে বোধ হয় ইহা প্রস্তুত করা হইতেছে।” সাধারণতঃ যবগার শকটি ইংরাজী Nitre or Salt-petre শব্দের প্রতিশব্দ স্বরূপ ব্যবহৃত হইয় থাকে, কিন্তু দত্ত মহাশয় বলেন যে, ইহা ভুল । সোয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করিবার পরেও যহ দিন পর্য্যন্ত দেশীয় লোকেরা এষ্ট ব্যবসায়েয় দিকে মনঃসংযোগ করে নাই। ইষ্টইণ্ডিয়া কোম্পানীই শতাষিক বর্ঘকাল এই ব্যবসায়ের একচেটিয়া মালিক ছিলেন এবং প্রতিবৎসর ৫oo শত টাকা (৮• • • থলি) করিয়া সোর বুটশ গৰমেণ্টকে সরবরাহ করিতেন । এষ্ট পদার্থের কাটতি অনেক পরিমাণে রাজনৈতিক ব্যাপারের উপর নির্ভর করে। যুদ্ধের আশঙ্কা হইলে বারুদ সংগ্রহের বিশেষ আবশুকত হয়, তখন সঙ্গে সঙ্গে সোরার কাটতিও যেশি হষ্টয় থাকে । ১৭৫৫ খৃঃ অব্দে ১৪৭৪৭ থলি সোরা বিক্রয় হয় । ১৭৯১ খৃঃ অব্দে হাণ্ডের রাজনৈতিক অবস্থা যখন বড়ই আশঙ্কাজনক হইয় উঠে, তখন প্ৰভূত পরিমাণে বারুদ সরবরাহ করিবার জন্ত নানা স্থান হইতে ইংলণ্ডের ব্যবসায়ীদিগের নিকট তাগিদ আসিতে থাকে । কিন্তু গবমেন্টের সঙ্গে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর যে চুক্তি ছিল, তদনুসারে তাদের এত অধিক পরিমাণে সোরা সরবরাহ করিবার অধিকার ছিল না । তখন বারুদ্রব্যবসায়িগণ প্রিভিকাউন্সিল হইতে এইরূপ অনুমতি লাভ করেন যে, তাছার যুরোপেয় অন্তান্ত প্রদেশ হষ্টতে সোরা আমদানী করিতে পরিবেন। ইহাতেও সস্তুষ্ট ন হইয় তাহারা সোরা সম্বন্ধে ইষ্টইণ্ডিয়া কোম্পানীর যে এক চেটির ব্যবসায়ের অধিকার ছিল, তাহার বিরুদ্ধে আন্দোলন উপস্থিত করেন। এই আন্দোলনের ফলে গবৰ্ণমেন্ট হইতে আদেশ করা হয় যে, গবমেন্টের জন্ত বৎসরে ৫.৯ শত টন সোরা ব্যতীত কোম্পানীকে ৩৫ • • টন

দেৱ আনির বিলাতের বাজারে বিক্রয় করিতে হইবে। ইeার ক এক যৎসর পরে যখন যুরোপ এবং আমেরিকার

নন স্থান হইতে সুলভে সোয়ার আমদানী হইতে থাকে; তখন ভারতীয় সোরার কাটতি অনেক পরিমাণে কমিয়া আসে। ইহার
XXII
৫০