পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাবিংশ খণ্ড.djvu/৪৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হয়গ্রীব হইয়৷ ইহাকে বর দিতে আগমন করেন । হয়গ্ৰীব তাছাকে দেখিয়া কহিল, মাতঃ, যদি আপনি আমার তপস্তায় পরিতুষ্ট হইয়া থাকেন, তাছা হইলে আমাকে এই বর প্রদান করুন, যেন কাহারও হস্তে আমার মৃত্যু না হয়। দেব কি অস্কর কেহই যেন আমাকে সংগ্রামে পরাজিত করিতে না পারে। যোগের অষ্টাদশ সিদ্ধি আসিয়া যেন আমার করায়ত্ত ইর। ফলতঃ আমি যেন অমর কইরা চিরদিন এই জগতে বিচরণ করিতে পারি। দেবী হরগ্রীবের এই কথা শুনিয় তাহাকে বলিলেন, এ জগতে কেহ অমর হইতে পারে না, জন্ম হইলে মৃত্যু অবশুম্ভাবী, ইহা নিয়তির নিয়ম, অতএব ইহা কাহার ও অন্যথা করিবার সাধ্য নাই, তুমি অন্তবর প্রার্থনা কর । দেবীর এই কথা শুনিয়া হয়গ্ৰীব কহিল, মাতঃ ! যদি আপনি অমর বর না দেন,তাহা হইলে আমায় এই বর প্রদান করুন,যেন হয়গ্ৰীব ভিন্ন অপর কোন প্রাণী হইতে আমার মৃত্যু না হর । তখন দেবী তাহাকে সেই বর দিরা অন্তর্হিত হইলেন । অসুর [* ४१० অভিলষিত বরলাভে পরমানন্দিত হইয়া নিজগৃহে গমন করিল। : অতঃপর এই অম্বর অত্যন্ত বলদীপ্ত হইয়া সমস্ত দেবতা, মুনি ও । ঋবি প্রভৃতিকে অতিশয় পীড়া দিতে লাগিল। তখন ত্রিলোকমধ্যে । এমন কোন শক্তিশালী পুরুষ ছিল না যে, তাহাকে নিগ্ৰছ করিতে সমর্থ হয়। দেবগণ তাহার উৎপীড়নে নিতান্ত পীড়িত হইয়া বিষ্ণুর শরণাগত হইলে ভগবান হয়গ্ৰীব মূৰ্ত্তি ধারণ করিয়া । এই অস্বরকে বধ করেন । ( দেবীভাগণ ১৫ অঃ ) পুরাণে লিখিত আছে যে, কল্পান্ত কালে ব্ৰহ্মার প্রমুপ্তাবস্থায় এই হয়গ্ৰীৰ বেদ হরণ করে। তৎপরে ভগবান বিষ্ণু এই বেদ উদ্ধারের জন্ত মৎস্তাবতার হইরা ইহাকে হনন করেন। মহাভারতে হয়গ্ৰীব-অবতারের বিষয় এইরূপ লিখিত আছে— যখন কল্পান্তকালে এই পৃথিবী জলমগ্ন হইয়াছিল, তখন ভগবান বিষ্ণু জগতের বিবিধ বিচিত্র রচনার বিষয় চিন্তা করিয়া বোগ নিদ্রা অবলম্বন করিয়া সলিলমধ্যে শয়ন করিরাছিলেন । এক , আমি বহু হুইব, এইরূপ চিন্তা করিতে করিতে আত্মগুণ মহাকে স্মরণ করিলেন । সেই মহাৰু হইতে অহঙ্কার জন্মগ্রহণ করিলেন। তিনিই চতুর্মুখ হিরণ্যগৰ্ভ সৰ্ব্বলোকপিতামহ ব্ৰহ্ম । তিনি উৎপন্ন হইয়। সহস্রদল পদ্মে অর্থাৎ ব্ৰহ্মাণ্ডে উপবিষ্ট রছিলেন। সেই ব্ৰহ্মা প্রথমে জলময় লোক সকল নিরীক্ষণ করিলেন। অনন্তর ভগবান্‌ পদ্মের মধ্যে জলবিদুদ্ধয় দেখিতে পাইলেন, ইহার একটা বিন্দু কষ্টতে মধু এবং অপর বিন্দু হইতে কৈটভ জন্ম গ্রহণ করিল। এই দৈত্যৰয় জন্ম গ্রহণ করবামাত্রই পদ্মমধ্যে ব্ৰহ্মাকে দেখিতে পাইল । পরিশেষে সেই দুই দানব-শ্রেষ্ঠ সনাতন বেদসকল গ্রহণ করিয়া সলিল হইল । J হয়গ্ৰীবমন্ত্র পুর্ণ মহোদধি-মধ্যে অবিলম্বে রসাতলে প্রবিষ্ট হুষ্টল। বেদ অপহৃত হইলে, ব্ৰহ্মা মোহাবিষ্ট হইলেন, বেদসকল আমায় পরম চক্ষু, বেদ ব্যতীত আমি কি প্রকারে লোক স্বষ্টি করিব। তখন তিনি এই বেদ উদ্ধারের জন্ত ভগবান বিষ্ণুর স্তব করিতে লাগিলেন। ব্ৰহ্মার স্তবে ভগবান বিষ্ণু হয়গ্ৰীব-মূৰ্ত্তি ধারণ করিলেন। এই হয়গ্ৰীবের নক্ষত্র ও তারকা-সমন্বিত আকাশমণ্ডল মস্তক হইল, স্বৰ্য্যকিরণ সম প্রভাসম্পন্ন তদীয় কেশসমূহ অতিশয় দীর্ঘ হইল । আকাশ ও পাতাল তাহার কর্ণযুগল এবং ভূতধারিণী ধরণী তাহার ললাট, গঙ্গা ও সরস্বতী তাহার কাটদ্বয়, সমুদ্র র্তাহার ক্রযুগল, চন্দ্র ও সুর্য্য তাহার নয়নদ্বয়wও সন্ধ্যা তাকার নাসিক ওঙ্কার-দ্বারা তাহার সংস্কার হুইল । এইরূপে তিনি হয়গ্ৰীসমূৰ্ত্তি পরিগ্রহ ও রসাতলে গমন করিয়া যে স্থলে মধু ও কৈটভ নামক অসুরদ্বয় অবস্থান করিতেছিল, তথায় তাঙ্গদের নিকট হইতে বেদ গ্রহণ করির পুনৰ্ব্বার ব্ৰহ্মাকে তাহ প্রত্যপণ করিলেন। এই দানবদ্বয় পরে হয়গ্ৰীবাবতার বিষ্ণু কর্তৃক নিহত হন । ( ভারত শাস্তিপ° ৩৪৭ জ” ) হয়গ্রাবমন্ত্র ( ক্লী) হয়গ্ৰীবস্ত মন্ত্র। ভগবান বিষ্ণুর অবতার হয়গ্ৰীবের মন্ত্র, এই হয়গ্ৰীবের পুজামন্ত্র ও সাধনপ্রণালী প্রভৃতির বিযর তন্ত্রশাস্ত্রে বিশেষ রূপে লিখিত আছে, অতি সংক্ষেপে এখানে লিখিত হইল ।

  • ওঁ উদিগরৎ প্রণবোদগীথ সৰ্ব্ববাগীশ্বরেশ্বর। সৰ্ব্ববেদময়াচিন্ত্য সৰ্ব্বং বোধয় বোধয় ॥” এই মন্ত্রে হয়গ্ৰীবের পুঞ্জদি করিতে হয়। এই মন্ত্রের পুজা প্রণালী যথা—সামান্তপূজাপদ্ধতির নিয়মানুসারে প্রাতঃকৃত্যাদি সকল কাৰ্য্য শেষ করির বিষ্ণুমন্ত্রোক্ত পীঠন্যাস পর্য্যন্ত সকল কৰ্ম্ম শেয করিবে । তৎপরে ঋধ্যাদিল্পাস করিতে চয়, যথা—শিরসি ব্রহ্মণে ঋষয়ে নমঃ, মুখে অনুষ্ট পছন্সে নমঃ, হৃদি শ্রীহয়গ্ৰীবায় দেবতায়ৈ নমঃ । তৎপরে করাঙ্গন্যাস করিবে যথা – ওঁ অঙ্গুষ্ঠাভ্যাং নমঃ, উদিগরৎপ্ৰণবোদগৗথ তর্জনীভ্যাং স্বাহ, সৰ্ব্ববাগীশ্বরেশ্বর মধ্যমাভ্যাং বন্ধট, সৰ্ব্বদেবময়াচিন্ত্য অনামিকাভ্যাং হ, সৰ্ব্বং বোধয় বোধয় কনিষ্ঠাভ্যাং ফট, এই প্রকারে করাঙ্গন্তাস করির যথাবিধানে অঙ্গঙ্কাস করিতে হইবে । অতঃপর গুরগ্রীবের ধ্যান করিতে হয় । ধ্যান যথা—

“শরচ্ছশাঙ্ক প্রভমশ্ববক্তং মুক্তাময়ৈরাভরণৈঃ প্রদীপ্তং । রথাঙ্গশখাৰ্চিতবাহুযুগ্মং জামুদ্বয়ম্ভস্তকরং ভজামঃ ॥” এই ধ্যান, শঙ্খস্থাপন বৈষ্ণবোত্ত পীঠপূজা করিয়া পুনরায় ধ্যান কৱিৰে । পরে "হস্থং” এই মন্ত্রে হয়গ্ৰীবের মুক্তি কল্পনা করিয়া পূৰ্ব্বোক্ত মন্ত্রে পূজা কয়িতে হইবে। পূজা শেষ চইলে পঞ্চপুষ্পাঞ্জলি দান করিয়া Øኛድ