পাতা:বিশ্বকোষ দ্বাবিংশ খণ্ড.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হরটি একজন লেফটেনাণ্ট গবর্ণর নিযুক্ত হইয়াছিলেন। তখন শুধু সুরাট ও রনের ইংরাজদিগের শাসনাধীন ছিল । ক্রমে বসই ও পুণার সন্ধিলন্ধ স্থান গুলি আসিয়া ইহার সঙ্গে সংযুক্ত হইয়া বর্তমান সুরাট জেলার পরিণত হইয়াছে। ১৮০৮ খৃঃ অব্দে এখানে একজন কলেক্টর ও একজন জজ, ম্যাজিষ্ট্রেট নিযুক্ত হন। ১৮১৩ খৃঃ অস্বে উত্তর গুজরাটে যে দুৰ্ভিক্ষ সংঘটিত হয়, তাহাঙ্গেই স্বরাট সহরের বাণিজ্যগৌরব একেবারে বিনষ্ট হয়। ১৮২৫ খৃঃ অদ আদিতে না আসিতেই এখানে বহিবাণিজ্যের মধ্যে শুধু বোম্বাই সহরে তুলা রপ্তানীকার্য চলিতে থাকে। ১৮৬৭ খৃঃ অব্দে একটা ভয়ানক অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হইয়৷ ১০ মাইল পরিমিত স্থান একেধারে ভস্মীভূত হয়, ইহার অব্যবহিত পরেই আবার তাপ্তীতে বান ডাকিয়া সমস্ত সহর ভাসাইয়া লইয়া যায়। এই দুই বিপদে প্রায় পাচকোটি টাকার ক্ষতি হয়। সন্ত্রাস্ত হিন্দু ও পাণী মহাজনের সুরাট ত্যাগ করিয়া বোম্বাইতে যাইয়া বাস করিতে আরম্ভ কবিলেন । কিন্তু ১৮৪০ খৃঃ অবদ হইতে আবার ইহার শ্ৰী একটু একটু করিয়া ফিরিতে থাকিল। ১৮৬৮ খৃঃ অব্দে গুজরাটে রেলওয়ের প্রচলন হওয়াতে ব্যবসায় বাণিজ্যের স্রোত আবার কিয়ুৎ পরিমাণে ফিরিয়া আসিয়াছে । এই জেলায় তিনটী সংর ও প্রায় অষ্টশত গ্রাম আছে। এখানে হিন্দু, মুসলমান, পশিী, অনার্য হিন্দু, জৈন, খৃষ্টান, য়িহুদী ও বৌদ্ধ ধৰ্ম্মাবলম্বী লোক দেখিতে পাওয়া যায়। মোট লোকসংখ্যা ৬ হইতে ৭ লক্ষের মধ্যে। এখানকার সহর তিনটির মধ্যে সুরাটে ১ লক্ষের উপর, বুলসরে ১৫ হাজার ও রান্দেরে ১০ হাজার লোকের বাস । বুলসর আয়ঙ্গ। নদীর তীরস্থ একটি সামুদ্রিক বন্দর । রান্দের তাপ্তী নদীর তীরে সুরাট নগল্পের দুই মাইল উপরে অবস্থিত। এখানে মিউনিসিপালিট আছে ও তুলার বেশ প্রশস্ত কারবার চলিতেছে। এই জেলায় যত হিন্দু তীর্থ আছে, তাহার মধ্যে বোধন নামক স্থানই সৰ্ব্ব প্রধান, এখানে একটি প্রকাণ্ড দেবমন্দির আছে। বুলসরের সমীপবর্তী পার্ণের নামক স্থানে একটি তয় প্রায় দুর্গ আছে। স্বরাটের সমুদ্রবন্দর স্বয়ালি তার্থী নদীর মুখের সন্নিকটে অবস্থিত । উনাই গ্রামে প্রতিবংসর বেশ বড় রকমের একটা মেলা বসিয়া থাকে। এখানে প্রধানতঃ গুজরাট ভাবাই প্রচলিত। বড় গাছের মধ্যে এখানে তেঁতুল, বট, পিপুল, বাবুল, খঞ্জর, তাল, জম্মু ও সেগুন বৃক্ষ দেখিতে পাওয়া যায়। বস্ত জস্তুর মধ্যে চিতাবাঘ, ভল্লক, বস্ত শূকর, নেকড়েবাঘ, কৃষ্ণসার, চিতা, হরিণ, তরক্ষু, উদ্বিড়াল ও ধূসয় বর্ণের খেকশিয়াল এবং সময় সময় সমীপবৰ্ত্তী বাশদ ও ধৰ্ম্মপুরের জঙ্গল হইতে সমাগত ব্যাঘ্রও দেখিতে পাওয়া যায়। রাজহাস, পাতিহাস ও যেলেইসি, ভিত্তির [ 84 J সুরাট পক্ষী এবং অন্তান্ত অনেক জলচর পক্ষাও শীত ঋতুর সময় দেখা भिोग्न| १i८क । স্বরাট সহরটি বাণিজ্য ব্যবসায়েয় কেন্দ্রস্বরূপ হইলেও, জেলাটিতে কৃষিকাৰ্য্যও বেশ সতেজ ভাবে চলিতেছে, ১১৫৫ বর্গমাইল পরিমিত জমিতে শস্ত উৎপন্ন হইয়া থাকে। ইহার মধ্যে ৪৫ বর্গমাইল স্থান লাখেরাজ । চাষী জমি ক্রমেই বাড়িতেছে । ধান্তই এখানকার প্রধান শস্ত । একলক্ষ একরের অধিক জমিতে ইহা উৎপন্ন হইয়া থাকে। দীর্ঘিকা ও পুষ্করিণীর সমীপবৰ্ত্তী কালে ও লাল জমিতে ধান্ত জন্মান হয়। তাপ্তীর তীরে লক্ষাধিক একর পরিমিত জমিতে তুলার চাষ হইয় থাকে। ক্রমে দক্ষিণ দিকেও ইহার প্রসার বৃদ্ধি হইতেছে। গরীব লোকের সাধারণতঃ কোদ্রা এবং নাগলি যাইয়াই জীবন ধারণ করে। মরিচসহরের ইক্ষুর চাষও এখানে প্রভূত পরিমাণে হুইয়া থাকে । এখান হইতে উত্তর গুজরাট ও কাঠিয়াবাড়ে যথেষ্ট গুড় রপ্তানি হইয়া থাকে। বজরা এবং তামাকেয়ও অল্প বিস্তর চাষ আছে। গোধূম ও নীলের চাষের পক্ষে জমি বিশেষ অনুকুল হইলেও, ইহা অতি অল্প পরিমাণেই হয়। এখানে খরীফ ও রবি, এই দুই খন্দ প্রচলিত এবং কৃষককুলও দুই শ্রেণীতে বিভক্ত— উজানি ( মুতী লোক ) ও কাল ( কৃষ্ণবর্ণের আদিম অধিবালী )। ভাটেল ব্রাহ্মণরাই এথানকার প্রধান কৃষিজীবী। ব্যবসায় বাণিজ্য প্রধানতঃ মুরাট ও ধুলসর সহরে এবং বরোধ রাজ্যের অন্তভুক্ত বিলিমোর বন্দরে সন্নিবদ্ধ। স্থানীয় বাণিয়ারাই প্রধান ব্যবসায়ী, মাড়োয়ারীরা এখানে তেজারতী ব্যবসায় ঢালাইয়া থাকে। এখানে বৎসরে গড়ে সাড়ে চারিকোটি টাকার জিনিষ রপ্তানি ইছয় থাকে। একমাত্র মুরাট ও বুলসর হইতেই বৎসরে আড়াই কোটি টাকার অধিক মূল্যের দ্রব্যাদি . বিদেশে প্রেরিত হয় ও প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকার জিনিষ আমদানী হয়। রপ্তানি মধ্যে ধাপ্ত গোধুম মটর প্রভূতি, মহুয়৷ ফল, বাহাদুরি কাষ্ঠ ও বাশই প্রধান । বিদেশ হইতে যে সকল দ্রব্য আণীত হয়, তাহার মধ্যে তামাক, তুলার বীজ, লৌহ, নারিকেল এবং যুরোপের দ্রব্য জাতই অধিকতর ব্যবহৃত ट्झेब्र एitसः । স্বরাটের বুট্রাদার রেশমা বস্ত্র প্রাচীন কালে বিশেষ বিখ্যাত । ও আবৃত ছিল। রেশমী বস্ত্রের উপর সোণা ও রূপার ফুল তোলা হইত। এখানে নানা প্রকার রঙ্গীন তুলার বস্ত্র5 প্রস্তুত হইত। ভরোঁচ, মসলিনের জন্ত প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছিল। সুরাটে গণ্ডার চৰ্ম্মের সুন্দর স্বন্দর ঢাল প্রস্তুত হইয়া প্ৰতিখানা ৩•\—৫০ টাকায় বিক্রয় হইত। এক সময়ে এখানে জাহাজ নিৰ্ম্মাণকার্য্যের বিশেয প্রচলন ছিল, পার্শিরাই প্রধানতঃ এই