পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৫৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দকুমার [ ৫৩৬ ] नञ्जकूयांब्र অধীনে নবাব সরকারে নায়েৰী করিতেছিলেন, কিন্তু জগচ্চত্র এরূপ অসন্তুষ্ট প্রকৃতির লোক ছিলেন যে শু্যালকের অধীনে কৰ্ম্ম করিতে হইত বলিয়া তিনি মহা ক্ষুণ্ণ হইয়াছিলেন। কিন্তু অন্তকোন উপায়ে আপনার উন্নতি করিতে না পারিয়া আত্মীয়-গ্রোহী হইয় পড়েন। হেষ্টিংস গ্রেহাম, মোহনপ্রসাদ ও জগচ্চক্রকে হস্তগত করিয়া নন্দকুমারের সর্বনাশের জন্ত সৰ্ব্বদা পরামর্শ করিতে লাগিলেন। মোহনপ্রসাদ শঠ, প্রবঞ্চক ও চক্রান্তকারী বলিয়া তখনকার কি ইংরাজ কি বাঙ্গালী সকলেরই নিকট ঘৃণাৰ্ছ ছিলেন ; এমন কি, হেষ্টিংসই একবার তাহাকে নিজৰাড়ী হইতে তাড়াইয়া দিয়া আর আসিতে নিষেধ করিয়া দেন। কিন্তু নন্দকুমারকে নষ্ট করিবার উদ্দেশ্যে আবার তাহাকে অতির ও পাণ দিয়া আদরপূর্বক ডাকিয়া লয়েন। জগচ্চন্দ্র শ্বশুরের সহিত ক্রমশঃ দেখা সাক্ষাৎ বন্ধ করিয়া, মোহন ও হেষ্টিংসের সহিত গোপনে ও প্রকাশ্রে শ্বশুরের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করিতে লাগিলেন। নন্দকুমার স্বীয় আবেদনে এ সকল বৃত্তান্ত বর্ণনা করিয়া গবর্ণরের ফুট উদেখের কথা প্রকাশ করেন, যখন দিল্লীর বাদশাহ মহারাজ নন্দকুমারকে “মহারাজা” উপাধি ও খেলাৎ প্রদান করেন, তখন প্রথানুসারে একখানি কালরদার পান্ধী ও অন্যান্ত রাজসম্মান চিহ্ন প্রদান করিয়া ছিলেন। সেগুলি যখন পাটনায় আসিয়া পৌছায় তখন মীরজাফরের মৃত্যু হইয়াছে, নন্দকুমারেরও নায়েৰ সুবাদারের পদ গিয়াছে। সেই সময়ে নুতন নায়েব সুবাদার মহম্মদ রেজাখার উত্তেজনায় ও ভয়ে পাটনার শাসনকর্তা রাজা সেতাবরায় নলকুমারের সেই সকল বাদশাহী উপঢৌকন পাটনায় আটকাইয়া রাখেন। নন্দকুমার কলিকাতায় সে সংবাদ পাঠাইয়া হেষ্টিংসকে জানান । তিনিও রাজা সেতাবরায়কে সেই সকল পাঠাইয়া দিতে লেখেন। রাজা পাঠাইয়া দিলেন, কিন্তু হেষ্টিংস সেগুলি নিজ ব্যবহারার্থ রাখিয়া দিলেন, নন্দকুমারকে দিলেন না। মহারাজ নন্দকুমার অভিযোগের মধ্যে উহারও উল্লেখ করেন। এই গুলি তাহার আত্মসম্বন্ধীয়। এতদ্ব্যতীত রেজাখ ও সেতাবরায়কে ছাড়িয়া দিয়া হেষ্টিংস কোম্পানীর স্বার্থ এবং সাধারণের স্বার্থ কিরূপ নষ্ট করিয়াছেন, তাহাও অভিযোগে উল্লেখ করেন। কাশীর রাজা বলবন্তু সিংহের উত্তরাধিকারীর নিকট, ইংরাজের অধীন কেরা মাগুরা ও বিজয়গড় নামক ছুইটী পরগণার নিমিত্ত, কোম্পানীর দেওয়ানী প্রাপ্তির তারিখ হইতে ফসলী ১১৭৯ সাল পর্যান্ত ২৪ লক্ষ টাকা পাওনা হয়, কিন্তু চেৎসিংহের নিকট হেষ্টিংস গোপনে উপহার পাইয় কোম্পানীর এই প্রাপ্য টাকার আর উচ্চবাচ্য করেন নাই এবং ঐ দুই পর গণও অবধি কাশীরাজের অধিকারে আছে। রঙ্গপুরের বাহারবন্ধ পরগণ রাণী ভবানীর নিকট হইতে হেষ্টিংস ছলে বলে কাড়ির লইয়৷ খ্ৰীয় দেওয়ান কৃষ্ণকান্ত নদীকে প্রদান করেন। ইহা দ্বারা রাণী ভবানীর সমূহ ক্ষতি হইয়াছে। অভিযোগপত্রে এই সকল কথারও উল্লেখ ছিল। নজকুমার অবশেষে অভিযোগ-পত্রে নিবেদন করেন ; গবর্ণর হেষ্টিংস সাহেবের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উপস্থিত করিয়া আমি যে ভীষণ বিপদ সাগরে ইচ্ছাপূৰ্ব্বক ঝাপ দিতে চলিয়াছি, তাহ বেশ বুঝিতেছি, কিন্তু কি করিব, আমার গত্যন্তর নাই। গবর্ণরের অঙ্কুচিত কাৰ্য্যসমূহের বিষয় সম্যক অবগত থাকিয়া যদি চুপ করিয়া থাকি, তবে ভবিষ্যতে র্তাহার দ্বারা আরও অনিষ্ট ঘটিৰে সুতরাং আত্মরক্ষার্থ ও দ্যায়ধৰ্ম্মামুরোধে আমি আপনাদের সমক্ষে এই অভিযোগ উপস্থিত করিতেছি। এক্ষণে আমি এ বিষয়ে আপনাদিগের সম্পূর্ণ মনোযোগ প্রার্থনা করি।* এই অভিযোগপত্র পড়া শেষ হইলে, হেষ্টিংস ীেন ভঙ্গ করিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, আমি কৌতুহলী হইয়া জিজ্ঞাসা করিতেছি, আপনি পুৰ্ব্ব হইতে এই অভিযোগের কোন কথা জানিতেন কি না ? ফ্রানসিস্ উত্তর দিলেন, কৌতুহলের উত্তর দিতে আমি বাধ্য নহি, তবে গবর্ণর জিজ্ঞাসা করিতেছেন বলিয়া এই পৰ্য্যন্ত বলিতে পারি যে, নন্দকুমার যখন ইহা পাঠান, তখন তাহার পূর্ব স্বচন ও ব্যবস্থাদি দেখিয়া বুঝিয়াছিলাম যে, এখানি গবর্ণরের বিরুদ্ধে-নিশ্চয়ই অভিযোগ পুর্ণ। তবে সে অভিযোগ কি কি বা কিরূপে লিখিত তাহা আমি জানিতাম না । ইহার পর সেদিন সভাভঙ্গ হয় । ১৩ই মার্চ মন্ত্ৰীসভার অধিবেশনে নন্দকুমারের আরও একখানি পত্র পঠিত হয়, সেখানিতেও নন্দকুমার পূর্বপত্রের অভিযোগ গুলি যে, সত্য সে বিষয়ে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করেন। ইহাতে একস্থলে তিনি লিখিয়াছিলেন যে, হেষ্টিংস বাঙ্গালায় আসিয়া রাজস্ব ও দেশের অবস্থা সম্বন্ধে জ্ঞাতব্য বিষয়গুলি জানিবার জন্তু আমার সাহায্য প্রার্থনা করেন, আমিও তাহার অভিমত কাৰ্য্য করিতে প্রবৃত্ত হই, তৎপরে যতদিন না কার্য্যোদ্ধার হইল, ততদিন হেষ্টিংস আমার উপর অত্যন্ত সস্তুষ্ট ছিলেন, এবং আমারই পরামর্শ লইয়া চলিতেন, কিন্তু যেমন কাৰ্য্য উদ্ধার হইয়া গেল, অমনি আর মিত্রত রাখিলেন না, বরং শত্ৰুতাচরণ করিতে আরম্ভ করিলেন । যাহাতে দেশের ও প্রজাবৃন্দের এবং কোম্পানীর সুখস্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি হয়, এরূপ

  • Parliamentary History of England from earlies; perioä to the year 1803, Vol XXVII, p, 834,