পাতা:বিশ্বকোষ নবম খণ্ড.djvu/৫৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নম্বুরি দিন বিদ্যারম্ভ হইয়া থাকে। সপ্তমবর্ষে কর্ণবেধ ও উপনয়ন হয়, তাহার পর গৃহে অবস্থান ও বেদাদি পাঠ করিয়া থাকে, বেদপাঠ সমাপ্ত হইলে গুরুদক্ষিণ দিয়া সমাবর্তনকাৰ্য্য শেষ হয়। জ্যেষ্ঠ পুত্রই কেবল দারপরিগ্রহ করিয়া থাকে। কনিষ্ঠ হইলে ক্ষত্রিয়া অথবা নায়র-যুবতীকে গন্ধৰ্ব্ব-বিধানে বিবাহ করে। দেহাবসানের পর বাটীর একাংশে দাহকার্য্য সমাধা হয়, চিতার উপরে শব রক্ষা করিয়া পঙ্কান্ন পিগু দিতে হয় । সকলে বেদপাঠ করিতে থাকে এবং নবদ্বারে নয়খণ্ড সুবর্ণ দিয়া মুখাগ্নি করে । দেহ দগ্ধ হইলে সকলে প্রতিনিবৃত্ত হয় । ইহারা দশদিন অশৌচ গ্রহণ করে এবং একাহারী থাকে, অশৌচাবস্থায় লবণ ব্যবহার করে না । নম্বুরিদিগের কেশের আড়ম্বর নাই। শুভ্রবর্ণের বস্ত্র ব্যবহার করে । পুরুষের অন্তৰ্ব্বাস কেীপীন, বহিৰ্ব্বাস চারিহস্ত পরিমিত ১ খণ্ডবস্ত্র ব্রহ্মচারীর দ্যায় কোমরে বন্ধ ও স্কন্ধে এক থানি উত্তরীয় বা গামছ। কেহ কেহ কটিদেশে রজত কটিবন্ধ ব্যবহার করিয়া থাকে। ব্রাহ্মণীর সাধারণতঃ সতী, সাধবী ও পতিসেবায় রত। কদাচ পরপুরুষের মুখাবলোকন করে না । ইল্লোমের বাহিরে যাইতে হইলে সতীত্বের চিহ্নস্বরূপ তালছত্র ব্যবহার করিয়া থাকে । অন্তর্জনাগণ যদি কোন কারণে ভ্ৰষ্ট হয়, তাহ হইলে তাহাদের বিচার হয়, বিচারে দোষী সাব্যস্ত হইলে তাহার সতীত্বের চিহ্ন ছত্র কড়িয়া লওয়া হয় । অন্তর্জনগণের বিচার কার্য্য এইরূপে সমাধা হয়। কাহারও সতীত্বের প্রতি সন্দেহ হইলে ইল্লোমের ‘কর্ণবেন’ ( ষ্টেটের ম্যানেজার ) ইহার অনুসন্ধান করিতে থাকে। অন্তর্জনার বৃষলী ও অপরের সাক্ষ্য লইয়া তাঙ্গাকে ভ্রষ্ট বলিয়া জানিতে পারিলে ‘সাধনম্’ নামে বহিঃপ্রাঙ্গণস্থ পঞ্চম গৃহে আবদ্ধ রাখিয়া প্রহরী নিযুক্ত করে এবং রাজাকে তদ্বিষয়ে সংবাদ দেয়। রাজা অন্তর্জনার কলঙ্ক নিম্পত্তির জন্ত বিচার-সমিতি নির্দেশ করিয়া অনুজ্ঞাপত্র দেন। ঐ বিচার-সমিতিকে স্মার্তবিচারসমিতি কছে । উহাতে রাজার প্রতিনিধি দুইজন শ্রোতবিচারক ও দুইজন স্মার্কবিচারক থাকিবে । রাজার নিকট হইতেও দুই ব্যক্তি আইসে । একজনকে শাস্তিরক্ষক ও অপরকে অসক্কোয়ম কহে । অন্তর্জন নিজ মুখে যতক্ষণ পাপ স্বীকার না করে, ততক্ষণ বিচারের অনুসন্ধান চলিতে থাকিবে এবং কলঙ্কিনীকে নিজমুখ হইতে কলঙ্ক স্বীকার করাইতে চেষ্টা করে। এই দোষ স্বীকার করাইতে অনেক দিন লাগিয়া থাকে। যদি দোষ সাব্যস্ত না হয়, তাহা হইলে সকলে সাধ্য সাধনা করিয়া তাহার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে। কলম্বিনী নিজ মুখে দোষ এবং IX S8S [ ৫৬১ ] নম্বুরি পারদারিকের নাম করিলে তখন তাহাকে প্রকৃতরূপে দোয়ী ঠিক করা হইরা থাকে। তখন তাহার বিচার শেষ হয়। তদনন্তর কলঙ্কিনীকে সকলের সন্মুখে হাততালি দিয়া গৃহ হইতে বহিষ্কৃত করিয়া দেওয়া হয়। প্রথমে বিচারের সারার্থ তাহার সমক্ষে পঠিত হয়, পরে নাম্নরজাতীয় কোন স্ত্রী জাসিয় তাহার এইরূপে সতীত্বছত্র কাড়িয়া লয়। সকলে হাত তালি দিতে থাকে, সে তথা হইতে বাহির হইয়া যথা ইচ্ছা চলিয়া যাইতে পারে। আর তাহার পক্ষে কোন নিয়ম পালন করিতে হইধে না । যাহার সহিত ভ্ৰষ্ট হইয়াছিল, সেই পুরুষও সমাজচ্যুত হইবে। উভয়েই গৃহ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া নম্বিয়ার’ ও ‘চকিয়ার’ নামে অভিহিত হয়। তাহারা অস্পৃশু মধ্যে পরিগণিত হয়। অসতীর আত্মীয় স্বজনের মৃত্যু হইলে যেরূপ নিয়ম আছে, সেইরূপ পদ্ধতিতে তাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, প্রায়শ্চিত্ত, ব্রাহ্মণভোজন । প্রভৃতি করিয়া বিশুদ্ধ হন। অসতীদিগের এইরূপ কঠোর দণ্ড থাকায় ইহাদের মধ্যে প্রায় অসতী দেথা যায় না । নমুক্তির ব্রাহ্মণ সকলের প্রায়ই ভূসম্পত্তি আছে, তাহার আয়ে দিনপাত করিয়া থাকে। ইহার সহরে যাইতে ভাল বাসেন, যদি পথিমধ্যে শূদ্রকে দেখিতে পায়, তাহা হইলে ‘আয় আয়া’ এইরূপ শব্দ করে। এই শবা শুনিলে তাহার। অন্ত পথে চলিয়া যায় । নম্বুরী ব্রাহ্মণ সাধারণতঃ দুই সম্প্রদায়ে বিভক্ত। যথা তিরুনবোযোগস্থ ও ‘ত্রিচুরযোগম’। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের প্রধান আচাৰ্য্য বন্ধন’ নামে অভিহিত । উৎকৃষ্ট নযুক্তিরীরা নদুত্রিপদ বা অধ্যন নামে খ্যাত। ইহাদের মধ্যে আবার ‘অকুবনচেরী সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ । এইরূপ আরও অষ্টশ্রেণী মধুরী ব্ৰাহ্মণ আছে। তাহারা ‘অষ্টগৃহঅধ্যন’ নামে কথিত । ইহুদিগের প্রত্যেকরই প্রচুর ভূসম্পত্তি আছে। অগ্নিহোত্ৰাদিগকে “অঙ্কিত্তিরী অধ্যন কহে। ইহাদের মধ্যে যাহারা সোমযাগ করিতে পারেন, তাহার চোতমিরী, অথবা সেমিযাজী পদ, র্যাহারা অধনোম যাগ করিতে সমর্থ, তাহার ‘অদিতীরী বা "মদিখেরিপদ নামে কথিত । যাহার দর্শনশাস্ত্র পাঠ করে এবং যাগমুষ্ঠান করে না, তাহাদের নাম ভট্টবৃত্তিকর বা ভট্টক্তিরী। এই সম্প্রদায় ৫ শ্রেণীতে বিভক্ত। যথা—বন্ধন, বৈদিক, স্বাৰ্ত্তন, তাত্রী ও শাস্তিক। ১। বন্ধনুদিগের নাম উম্বিক্ষন, ইহার বেদাচাৰ্য অর্থাৎ বালকদিগকে বেদাধ্যয়ন করান ও পূজা করিয়া থাকেন। ২। বৈদিকৰূ—ইহার বৈদিক কার্ব্যের মতামত দিয়া থাকেন ও পূজারি সময় বন্ধনদিগের কার্যকলাপ পরিদর্শন করেন । ।