পাতা:বিশ্বকোষ বিংশ খণ্ড.djvu/৪৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. শিবাজি কৃত অপমান স্মরণ করিয়া মোগল সহযোগে উtহার উৎসাদনে ব্যাপৃত হইলেন এবং খাবাস খার পৃষ্ঠপোষকগণ শিবাজিকে পক্ষভুক্ত করিয়া মোগলশক্তি খৰ্ব্ব করাই যুক্তিযুক্ত পরামর্শ বলিয়া স্থির করিলেন। কিন্তু কোন একটী সৎসিদ্ধান্তে উপনীত হুইবার পূৰ্ব্বেই করিম খাঁ স্বীয় অধীনস্থ সেনাদিগকে শিবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধার্থ অগ্রসর হইতে আজ্ঞা দিলেন। শিবাজি বিজাপুর সৈন্য কর্তৃক আক্রান্ত হইলে প্রতাপরাওকে সেনাদলসহ তাছাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। করিম খাঁ। আত্মরক্ষায় অসমর্থ হইয় রণক্ষেত্র হষ্টতে পলায়নপর হইলেন। তখন প্রতাপ তাহার পশ্চাদমুসরণ করিয়া তাছাকে পৰ্ব্বতবেষ্টিত জলশূন্ত স্থানে তাড়াইয়া আনিয়া আবদ্ধ করিলেন । জলাভাবে সসৈন্তে মৃত্যুমুখে পতিত দেখিয়া করিম্ আত্মসমর্পণপুৰ্ব্বক পরিত্রাণ পাইলেন। প্রতাপরা ও বিজাপুর জয় করিয়া হায়দরাবাদ, রামগিরি ও দেবগড় আক্রমণ করিয়া তত্তৎস্থানে চৌথ স্থাপন করলেন । এদিকে করিম্ খ বিজাপুরে পৌঁছিয়াই বহু লোল খার সহিত মলিত হইলেন এবং পুনরায় পন্থাল প্রাস্তে আসিয়া তৎসমীপদেশস্থ গ্রামসমুহ লুণ্ঠনপূর্বক উৎসাদন করিতে লাগিলেন। তদ্বাৰ্ত্তী অবগত হইয়া শিবাজি পুনরায় করিম খাকে উপযুক্ত শিক্ষা দিবার জন্ত প্রতাপরাওকে সসৈন্তে প্রেরণ করেন। জেসন্নী রণক্ষেত্রে উভয় সেনা সম্মুখ যুদ্ধে প্রবৃত্ত হইল। প্রথম সংঘর্ষে প্রতাপরাও প্রচণ্ড বিক্রমে মুসলমান সেনা আক্রমণ করেন । তিনি ক্রমশঃ অগ্রসর হইতে হইতে স্বীয় মাবল সেনাদল হইতে ছাড়াছাড়ি হন এবং কএকজন মাত্র অনুচর সহ মুসলমান সেনাদলের মধ্যে আসিয়া পড়েন ; রণক্ষেত্রে শক্রহস্তে র্তাহার প্রাণবায়ু বহির্গত হয়। তখন মাধল সেনাদল বিচলিত হইয় উঠে । সেই সময়ে মরাঠা সেনানায়ক হংস।fজ মোহিতে পঞ্চ সহস্ৰ সেনা লইয়া রণাঙ্গনে উপস্থিত হইলেন ( ১৬৭৪ খু: ) । পুনরায় উভয় দলে ভীষণ যুদ্ধ চলিল। করিম খাঁ। মরাঠ। হস্তে সৈন্তক্ষয় ও পরাজয় অবগুস্তাবী জানিয়া অবশিষ্ট সেনাদল লইঞ্জা রণক্ষেত্র হইত্তে বিজাপুর অভিমুখে পলায়ন করলেন। সমরকুশল সেনাপতি তাহার পশ্চাঙ্গাবিত হইয়া বিজাপুর নগরদ্বার পর্যন্ত গমন করেন। যুদ্ধে জয়লাভ হইল বটে, কিন্তু প্রতাপরাওএর মৃত্যুতে মরাঠাশক্তির একাংশ খৰ্ব্ব করিয়া গেল। শিবাজি হংসাজিকে হাস্বীয়রাও উপাধি দান করিয়৷ সয়নেীবৎপদে প্রতিষ্ঠিত করিলেন । অতঃপর সেনাপতি হান্ধীয়রাও সম্পাৎগাও নামক স্থানে আসিয়াছেন দেখিয়া বিজাপুর-সর্দার হোসেন ময়ান খাঁ সসৈন্তে | I 84b I শিবাঞ্জি অগ্রসর হইয়া তাহাকে আক্রমণ করিলে উভয় পক্ষে ঘোরতর যুদ্ধ চলিল, কোন পক্ষেই যুদ্ধের বিরাম নাই, বরং রাজ্যঞ্জকার বৃদ্ধির সহিত যুদ্ধও বৃদ্ধি পাইতে লাগিল। অবশেষে সেনাপতি হাম্বীররাও জয়লাভ করিলেন। যুদ্ধে চারি হাজার অশ্ব, দ্বাদশট হস্তী ও উষ্ট্র এবং অনেকগুলি কামান তাহার হস্তগত হয় । ঐ সময়ে মোরোপন্ত পেশবে স্বীয় বিজয়বাহিনী পরিচালিত করিয়া কোপল দুর্গ অবরোধ করেন । উক্ত হোসেন থার সঙ্কোঘর ভ্রাতা ঐ দুর্গের অধিপতি ছিলেন । তিনি মরাঠা সেনানাম্বকের অদ্ভুত বুদ্ধিকৌশলে ও বীরত্বে পরাভব স্বীকার করিয়া শিবাজির পদানত হইলেন । দুর্গাধিকারের পর মোরোপস্ত কনকগিরি, হর্পণপল্লী, রায়দুর্গ, চিত্রদুর্গ প্রভৃতি স্থান অধিকারপুৰ্ব্বক তুঙ্গভদ্রতট পর্য্যস্ত মহারাষ্ট্র রাজ্য বিস্তার করেন। এইরূপে ১৬৬৯ খৃষ্টাব্দে নবভাবে মুসলমানের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসানল প্রজ্বলিত করিয়া শিবাজ চারি বৎসরের মধ্যে অমিত বিক্রমে ও ভীম অলিবলে মোগল কর্তৃক পূৰ্ব্বে অপহৃত স্বীয় রাজ্যগুলি পুনরুদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত তিনি জলে ও স্থলে বহুদুর পর্য্যস্ত স্বীয় রাজ্যাধিকার বিস্তৃত করেন। উত্তরে স্বরাট, দক্ষিণে বেদনোর ও হুবলী এবং পূৰ্ব্বে বেরার, বিজাপুর ও গোলকও পৰ্য্যস্ত র্তাহার শাসনদণ্ড পরিচালিত হইয়াছিল । তাপ্তা নদীর দক্ষিণস্থ মোগলাধিকৃত সুব গুলি তাহাকে চৌথ ও সরদেশমুখী দিয়া নিশ্চিন্ত ছিলেন । গোলকোণ্ড ও বেদনোরপতিদ্বয় মহারাষ্ট্রপতি শিবাজির হস্তে পরাজয় স্বীকার করিয়া তাহার অধীন সামস্তুরূপে অবস্থান করেন । মহারাষ্ট্র প্রচলিত বখর নামক দেশীয়, ঐতিহাসিক আখ্যায়িকায় বিবৃত আছে যে, শিবাজি দাক্ষিণাত্যের প্রতাপশালী মুসলমান পাদশাছত্রয়কে বলে পরাভূত ও বশীভূত করিয়া স্বয়ং হিন্দু পাদ-শাহ হইতে বাসন প্রচার করেন। ইহার জন্তই তাহার মস্ত্রিসভায় হৃদয়ে প্রকান্ত ভাবে মহারাজ শিবাজির অভি ষেককার্য সম্পাদনের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়। তাহারা ত্রিংশ বর্ষ জবিশ্রান্ত পরিশ্রমে ও অধ্যবসায়ে যে রাজৈশ্বৰ্য্য লাভ করিয়াছিলেন, এতদিনে তাহারই মহত্ব উদ্‌ঘাটনের সুচনা হইল । শিবাজির অভিযেকোৎসব ও তজ্জন্ত প্রভূত অর্থব্যয় তাহার স্বাধীন রাজত্বের পরিচয় স্থল । শিবাজি যে সময়ে মুসলমান রাজন্তবর্গকে পদদলিত করিয়া উন্নতির শীর্ষ সোপানে আরোহণ করিয়াছিলেন ; ঠিক সেই সময়ে কাশীধাম হইতে বেদাস্ততত্ত্বদশী প্লাজ্ঞ পণ্ডিত গাগাম্ভট্ট তীর্থদর্শনোপলক্ষে দাক্ষিণাত্যে আসিয়া শিবাজির সহিত সাক্ষাৎ করেন । ইহারই অনুরোধে রাণাবংশধর মহারাজ শিবাজি