পাতা:বিশ্বকোষ ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আত্মবিশ্বত হইয় তাহতে যোগ দিত। এই সময়ে নবীপে বাস্তবিকই সুখস্রোত বহিতে লাগিল, সৰ্ব্বদা হরিনামকীৰ্ত্তন ও ধৰ্ম্মকথায় সকলেই ঈশ্বরপ্রেমে মুগ্ধ হইয়া উঠিল। কিন্তু একদল পাষণ্ড হিন্দু ও ছুষ্ট মুসলমানের পক্ষে ইহা নিতান্তই অসহ্য হইল। গৌড়রাজের দৌহিত্র চাদকাজী নামে জনৈক মুসলমান নবদ্বীপে বাস করিতেন। তাহার নিকট কতকগুলি পাঠানসৈন্ত থাকিত । রাজার অাদেশে তিনিই এই স্থানের শাসনভার গ্রহণ করিয়াছিলেন। পাষও হিন্দু ও মুসলমানগণ কাজীর নিকটে উপস্থিত হইয়া কীৰ্ত্তন বন্ধ করিবার জন্য প্রার্থনা করে, কিন্তু চাদকাজী প্রথমে কীৰ্ত্তনে বাধা দিতে সন্মত হন নাই । শেষে তাহার কৰ্ম্মচারী ও হিন্দুগণের উৎপীড়নে থাকিতে না পারিয়া কীৰ্ত্তনে বাধা দিতে প্রবৃত্ত হন। তিনি আদেশ প্রচার করিলেন যে মাজ হইতে নবদ্বীপে কেহ কীৰ্ত্তন করিতে পরিবে না, করিলে অর্থদণ্ড ও আবশ্বক হইলে জাতিনাশ ও প্রাণদণ্ডও হইতে পরিবে, নবদ্বীপবাসীরা তখন প্রেমে মত্ত হইয়াছে, তাহার কেহই কাজীর গুরুতর অণদেশে কর্ণপাত করিল না, শেষে এক দিন কাজী স্বয়ং কতকগুলি সৈন্য লইয়া কোন একটা কীৰ্ত্তনস্থানে উপস্থিত হইয়া মৃদঙ্গ প্রভৃতি ভাঙ্গিয়া দেন এবং নিজ মুখে সকলকে ভয় প্রদর্শন করিয়া কীৰ্ত্তন ভঙ্গ করিতে অনুমতি করেন । এই বার সকলেরই ভয় হইল, কীৰ্ত্তন বন্ধ করিয়া বিশ্বস্তরের নিকটে সংবাদ দিতে চলিল । নিমাই গুনিয়া ক্রোধে অধীর হইয়া উঠিলেন এবং সকলকে আশ্বাস দিয়া বলিলেন যে, “তোমাদের কোন চিন্তা নাই আমি আজই দুরাচার চাদকাজীকে জবা করিব।” নিমাই প্রচার করিয়া দিলেন যে সন্ধ্যার সময় সকলেই কীৰ্ত্তনের সাজ ও হস্তে একটা দীপ লইয়া যেন নিমাইর সহিত কীৰ্ত্তন করিতে যায় । সকলে তাহাই করিল। সন্ধ্যার সময়ে নিমাইচাদ দল বল লইয়া কীৰ্ত্তন করিতে বাহির হইলেন । বৈষ্ণবগ্রন্থে এই নগর-কীৰ্ত্তনের অতি সুন্দর বর্ণনা আছে । গৌরাঙ্গ সদল বলে কাজীর বাড়ীতে উপস্থিত হইলেন । প্রথমে তাহার লোকের কাজীর প্রতি কিছু দৌরাত্ম্য করিবার চেষ্টা করিয়াছিল, মিমাই সকলকে নিবারণ করেন । চাদ এই সকল লোকসমারোহ দেখিয়া প্রথমে পলায়ন করেন, শেষে নিমাই তাহাকে ডাকিয় আনাইলেন । নিমাইকে দেখিয়া কাজীর মন ফিরিয়া গেল, তিনিও একজন কৃষ্ণভক্ত হইয়া উঠিলেন। বিশ্বজুরের সহিত গোবধ করা হিন্দু ও মুসলমান এই উভয় সম্প্রদায়েরই অকৰ্ত্তব্য এই সম্বন্ধে অনেক VI a I , tऽउछध्वं বিচার হয়। তাঁহাতে কাজী পরাপ্ত হইয়াছিলেম । কাজীদমন বিবরণটা চৈতন্যভাগবতে অতি বিষ্কৃতরূপে খণিত অাছে। এই কাঙ্গীর বংশধরগণও বৈঞ্চবধৰ্ম্মাবলী । এইরূপে নবদ্বীপ निकझेक श्हेण । विश्वस्त्रन्न काचौं-उरुन इहेर७ वज्राशमन गभग्न ত্রধরের জীর্ণ জলপাত্রে জলপান করিয়াছিলেন। । নগর কীৰ্ত্তন করিয়া নিমাই আবার ঘরে কৰাট দিলেন। বাহিরের লোকের সহিত আলাপ ব্যবহার একেবারেই কমিয়া গেল, দিবানিশি অবিরল ধারে নিমাইয়ের নয়নে অশ্রধারা বহিতে লাগিল। দিন দিন কীৰ্ত্তন করিতেও অসমর্থ হইয়া পড়িলেন । ভক্তমণ্ডলী অদ্বৈতাচাৰ্য্যকে নায়ক করিয়া কীৰ্ত্তন করিতে আরম্ভ করিলেন । নিমাইও মধ্যে মধ্যে কীৰ্ত্তনে যোগ দিতেন । এই সময়ে নিমাই মধ্যে মধ্যে অচেতন হইয়া পড়িতেন এবং প্রায় সকল সময়ই ভাবে বিভোর হইয়। বসিয়া থাকিতেন। একদিন বিশ্বম্ভর বিষ্ণুপূজা করিবেন বলিয়। স্নান করিয়া আসিলেন, পুজার আসনে বসিলেন, অমনি চক্ষুর জলে পরিধেয় কাপড়খানি ভিজিয়া গেল, কাপড় পরিত্যাগ করিয়া আবার বলিলেন, আবারও তাহাই হইল। এইরূপ চার পাচবার দেখিয়া নিমাই ভাবিলেন যে আমার স্বারা আর বিষ্ণুপুজা হইবে না। তখন তিনি গদাধরকে ডাকিয়া বলিলেন যে, “গদাধর । আমার অদৃষ্টে পূজা নাই, আজ হইতে তুমি বিষ্ণুপুজা কর।” এই দিন হইতেই নিমাইয়ের বিষ্ণুপূজা বন্ধ হইল, তিনি দিবানিশি নাম করিতে থাকিলেন। বৈষ্ণবকবিগণ বলেন যে, তখন অদ্বৈত গৌরচাদকে ঈশ্বর বলিয়া বিশ্বাস করিতে পারিতেন নাই, তাই একদিন কীৰ্ত্তন সময়ে আচার্য্যের মনে বড়ই দৈন্ত উপস্থিত হয় । তিনি মনোদুঃখে শ্ৰীবাসের ভবনে কাতর হইয়া অর্তিনাদ করিতেছিলেন। নিমাই জানিতে পারিয়া তথায় যাইয়া এবং আচাৰ্য্যকে বিশ্বরূপ দর্শন করাইয় তাহার ভ্রান্তি দূর করেন । ইহার পরে একদিন ভাগীরথী পুলিনের মনোহর বনরজিদর্শনে চৈতষ্ঠের শ্রীকৃষ্ণের রাসলীলা মনে পড়িয়াছিল । তাহার পরে তিনি ভক্তগণ লইয়া রাসলীলা করিয়াছিলেন । এ সময়েও শ্ৰীবাস-ভবনে কীৰ্ত্তন হইত ; সময়ে সময়ে বিশ্বম্ভরও তাহাতে যোগ দিতেন। একদিন গৌরচাদ ভক্তগণের সহিত কীৰ্ত্তন করিতে করিতে বাহ্যজ্ঞান হারাইয়া প্রেমে উন্মত্ত হইয়াছেন, শ্ৰীবাস প্রভৃতি ভক্তগণও প্রভূর সহিত কীৰ্ত্তনে নিমগ্ন । ওদিকে বাড়ীর মধ্যে শ্ৰীবাসের বালক পুত্রের মৃত্যু হইল, শ্ৰীবাসের নিকট খবর আসিল, তিনি ভ্ৰক্ষেপও করিলেন না পূর্বের স্থায় প্রফুল্ল বদনে মৃত্য করিতে থাকিলেন । কিন্তু অপর ভক্তগণ এই সংবাদে, ফুঃখিত