পাতা:বিশ্বনাথ রামায়ণ.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিশ্বনাথ-রামায়ণ । >సి নাসাগ্র ছেদন করিলে, আমি ইহাকে বিনষ্ট করিব। তাড়ক বাহুত্তোলন পূর্বক ঐরামের প্রতি ধাবমান হইলে, বিশ্বামিত্ৰ,"ত্রীরাম লক্ষ্মণের জয় হউক’ বলিয়। তাড়কাকে ভৎসন (১) করিলেন। তাড়ক ঘোরতর ধূলি উড্ডয়নে অন্ধকার করত ত্রীরাম লক্ষ্মণের মোহ জন্মাইবার চেষ্টা করিল এবং মায়া পূর্বক শিলাবর্ষণ দ্বীরা তাহাদিগকে আচ্ছন্নপ্রায় করিল। শ্রীরাম শর বর্ষণ দ্বারা শিলাবর্ষণ নিবারণ করিয়া তাহার হস্তদ্বয় ছেদন করিলেন । তাড়কা নিকট প্রাপ্ত হইয়া গর্জন করিতে লাগিল ৷ লক্ষ্মণ ঐ সময়ে তাহার কর্ণ এবং নাসাগ্র ছেদন করিলেন । যক্ষী নানা রূপ ধারণ করিতে লাগিল, পুনঃ পুনঃ অন্তহিত হইতে লাগিল এবং প্রস্তর বৃষ্টি সহকারে অতি ভণনক বিক্রম করিতে লাগিল । শ্রীরাম বাণজাল দ্বার। তাহাকে রুদ্ধ করিলেন । যক্ষী বজুবেগে শ্রীরাম লক্ষ্মণের প্রতি ধাবমান হইল। তখন শ্রীরাম বাণদ্বারা তাহার বক্ষোবেধ করিলেন—তাড়ক। তৎক্ষণাৎ পতিত এবং মৃত হইল । তাড়কার মরণে ঐ স্থান নিষ্কলুষ হওয়াতে বিশ্বামিত্রের ধাক্যমুসারে তথায় অতি সুখে রজনীযাপন হইল। পরদিন প্রভাতে নিত্য ক্রিয়াবসানে বিশ্বামিত্র অতি প্রীতি পূৰ্ব্বক কহিলেন—কৃশাশ্ব প্রজাপতির প্রকাশিত অস্ত্ররূপ মন্ত্র,যাহা তোমাকে সমৰ্পণার্থ সংস্কল্প করিয়াছি, সেই অস্ত্ররূপ মন্ত্র সকল এক্ষণে গ্রহণ কর। এই বলিয়া মুনি শুচি এবং পূৰ্ব্বমুখ হইয়া জপ করিলে ঐ মস্ত্র তাৎপর্য্যাথৰ্প । ( ১ ) তাড়কার পুত্র মারীচ ভ্ৰম । জপাদির অৰ্দ্ধযোজনাস্তে অর্থাৎ জপ অৰ্দ্ধ সমাপ্ত হইলে, বিভীষিক মূৰ্ত্তিমতী হইয়া উপস্থিত হয় এবং সাধকের মনোমধ্যে কোন প্রকার শোভেচ্ছা থাকিলে তৎসম্বন্ধীয় দুশ্চিন্তা জন্মাইয়। বহুল ভয় প্রদর্শন করে । সাধক ভীরু হইলে তাহার সাধন ভঙ্গ হইয়া যায়। তিনি নিৰ্ভীক হইলে বিভীষিকাকে মনে মনে ভৎসিন করেন এবং বিভীষিকার নিবারক মন্ত্ৰসকলের উচ্চারণ করেন । অনন্তর পরমেশের ধ্যানগম্য রূপ বিস্মরণ করাইবার চেষ্টা করিলে বিদ্যাশক্তিমান জীব স্বয়ং ঐ বিভীষিকার কর্ণ এবং নাসাগ্র ছেদন করিয়া তাহাকে বিরূপ করেন— অর্থাৎ বিভীষিকার মায়াজাল অতিক্রম করেন। তাহার পর ঈশ্বরের প্রসাদাৎ বিভীষিকা একবারেই বিনষ্ট হয় ।