পাতা:বিশ্বনাথ রামায়ণ.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ আদিকাণ্ড । এই কথোপকথনে অৰ্দ্ধরাত্রি গত হইলে স্ত্রীরাম এবং মুনিগণ কুশবংশের এবং বিশ্বামিত্রের ও কৌশিকীর প্রশংসা করত নিদ্রাপরবশ হইলেন। রাত্রি প্রভাতকালে বিশ্বামিত্ৰ কহিলেন,হে স্ত্রীরাম ! প্রাতঃ সন্ধ্যাকাল উপস্থিত—গাত্ৰোখান পূৰ্ব্বক গমনোন্মুখ হও । রামচন্দ্র ইহা শ্রবণ করিয়া তৎকাল কৰ্ত্তব্য ক্রিয়া সমপনান্তে বিশ্বামিত্রোপদিষ্ট পথে শোণনদ উত্তীর্ণ হইয়া পরে বহু দূর গমনানন্তর দিবসের প্রথমাৰ্দ্ধ অতীত হইলে গঙ্গাতীরে উপনীত হইলেন। । পরে যথাবিধি স্নান,তৰ্পণ,দেবপূজাএবং নিত্যাগ্নি-হোত্রাবসানে ভোজন পূৰ্ব্বক সকলে বিশ্বামিত্রকে বেষ্টন করিয়া গঙ্গাতীরে উপবিষ্ট হইলেন, এবং শ্রীরাম যখাষ্ঠীয়ে সম্বোধনপূর্বক জিজ্ঞাসা করিলেন—গঙ্গা ত্রিপথগা মহানদী, ইনি ত্ৰৈলোক্য আক্রমণ করিয়া কি প্রকারে সমুদ্রগামিনী হইয়াছেন । শ্রীরামের বাক্যের উত্তরদানে প্রবৃত্ত হইয়া বিশ্বামিত্র গঙ্গার জন্মের এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্তির বৃত্তাস্ত কহিতে লাগিলেন । পববতপ্রধান হিমবান মেনকানামী সুমেরু কন্যাতে প্রথমে গঙ্গা তৎপরে উমা নামিক অপ্রতিমরূপ ছুইটী কন্যার উৎপাদন করেন । অনন্তর দেবগণের প্রার্থনানুসারে এবং ত্রিলোকের উপকার সাধনাৰ্থে হিমবান গঙ্গা দেবতাদিগকে দান করেন, এবং দেবতারা কৃতার্থ হইয়া গঙ্গাকে লইয়া স্বর্গে গমন করেন। দ্বিতীয় কন্যা উমা অতি কঠোর ব্রতানুষ্ঠানপূর্বক তপশ্চরণ করিলে গিরিরাজ তাহাকে ভগবান রুদ্রদেবে দান করেন। ভগবান শ্ৰীব্রুদ্রদেব উমাকে বিবাহ করিয়া তাহার সহিত ক্রীড়ারম্ভ করেন । ব্ৰহ্মাদি দেবগণ ঐরুদ্রদেবের সমীপে গমনপূর্বব’ক প্রণাম করত কহিলেন—হে ভগবন ! হে দেবাদিদেব ! আপনি সকল লোকের হিতৈষী—অতএব দেবগণের প্রণাম গ্রহণ করিয়া অনুগ্রহ করুন। পৃথিব্যাদি , সকল লোক:আপনার তেজো, ধারণে অসমর্থ। অতএব আপনি দেবীর সহিত ব্ৰহ্মাদ্বৈত লক্ষণ তপস্যাচরণ তাৎপৰ্য্যার্থ। জড়, পরমেশ্বরের প্রভাবে সচেতন । যেমন বায়ুজনিত ধ্বনি জড় হইয়াও সচেতন জীবের প্রয়োগাধীন অভিমত কাৰ্য্যকার হয়, সেইরূপ দেবতা এবং মন্ত্রের ঐক্য ভাবনায় মন্ত্র সাধকাভিলষিত কাৰ্য্যকারী শুইয়া থাকে ।